সাবেক জেলা পিপি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের পিতা নুরুচ্ছফা তালুকদারের জীবনী পড়ে জেনেছি, তিনি একজন বিনয়ী ও নিরহংকারী মানুষ ছিলেন। তিনি চমৎকার গুণে গুণান্তিত ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে অবদান রেখেছেন। আইনজীবী তথা বিচার বিভাগে অবদান রেখেছেন। গতকাল বিকালে পাবলিক প্রসিকিউটর চট্টগ্রামের উদ্যোগে আয়োজিত স্মরণ সভায় প্রধান আলোচকের বক্তব্যে জেলা জজ ড. আজিজ আহমেদ ভূঁঞা এ কথা বলেন। জেলা জজ আদালতের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত স্মরণ সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা পিপি শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী। জেলা জজ আরও বলেন, গত বছরই আমি নুরুচ্ছফা তালুকদার সম্পর্কে বিস্তারিত জেনেছি। এক সময় আমি রাউজানে কর্মরত ছিলাম। সেখানেও তার সম্পর্কে জেনেছি। তিনি যে একজন ভালো ও বিচক্ষণ মানুষ ছিলেন তা বুঝতে পেরেছি। স্মরণ সভায় উপস্থিত ছিলেন বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতের বিশেষ পিপি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মা কামরুন্নাহার বেগম, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ছোট ভাই খালেদ মাহমুদ, মহানগর পিপি আবদুর রশিদ, দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের পিপি অশোক দাশ, জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এ এস এম বজলুর রশিদ মিন্টু ও অতিরিক্ত জিপি ফখরুদ্দিন জাবেদ। এছাড়া জেলার অন্যান্য আইন কর্মকর্তারা সভায় উপস্থিত ছিলেন। বক্তব্যে কামরুন্নাহার বলেন, নুরুচ্ছফা তালুকদার মুক্তিযুদ্ধের সময় মুক্তিবাহিনীকে নানাভাবে সাহায্য সহযোগিতা করেছেন। তিনি একজন ভালো স্বামী, ভালো পিতা ও ভালো ভাই ছিলেন। আইনজীবীরাও তাকে পছন্দ করতেন। আইন পেশায় থাকা সময় তিনি সাধারণ বিচারপ্রার্থী ও আইনজীবীদের কল্যাণে কাজ করেছেন। খালেদ মাহমুদ বলেন, আমার বাবা মৃত্যুর আগে হাসপাতালে ছিলেন। সাথে আমি আর আপা ছিলাম। ভোর বেলা নার্সরা এসে বাবাকে গোসল করিয়েছেন। তবে পরণে থাকা লুঙ্গি তিনি কাউকে ধুতে দেননি। মনের জোর না থাকলে এ কাজ করা সম্ভব না। তিনি অসুস্থ অবস্থায়ও তা করেছেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় অনেক কষ্ট করেছেন। মুক্তিবাহিনীকে রান্নাবান্না করে খাইয়েছেন। স্মরণ সভায় অন্যান্য বক্তারা বলেন, সৎ মানুষ ছিলেন আইনজীবী নুরুচ্ছফা তালুকদার। আইনজীবীদের জন্য নিবেদিত প্রাণ কয়েকজনের মধ্যে তিনি একজন। জেলা পিপি হিসেবে ভূমিকা রেখেছেন। আদর্শবান ছিলেন। তিনি আমাদের অত্যন্ত আপনজন। আইনজীবীদের অভিভাবক। বক্তারা বলেন, হেমসেন লেইনের বাসায় থাকতেন তিনি। সবার সাথে তিনি ভালো ব্যবহার করতেন। নির্লোভ, নিরহংকারী ছিলেন। আইনজীবীদের কল্যাণে এ পরিবারের অবদান অপরিসীম। সভাপতির বক্তব্যে জেলা পিপি শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী বলেন, আইনজীবী নুরুচ্ছফা তালুকদারের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধাবোধ রয়েছে। তিনি জেরা বিষয়ে দক্ষ ছিলেন। উনার জেরা আমি দেখেছি। বিপদে পড়লে উনার কাছে যেতাম। তারা আমাদের দিকপাল। স্মরণ সভার শুরুতে পবিত্র কোরআন তেলওয়াত, মোনাজাত ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।