নীল আর্মস্ট্রং (১৯৩০–২০১২)। পুরোনাম নীল এলডেন আর্মস্ট্রং। তিনি ছিলেন একজন মার্কিন মহাকাশচারী, বৈমানিক প্রকৌশলী এবং চাঁদে অবতরণকারী প্রথম ব্যক্তি। তিনি একজন নৌ–বিমানচালক, পরীক্ষামূলক বৈমানিক, এবং একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ছিলেন। আর্মস্ট্রং ১৯৩০ সালের ৫ আগস্ট ওহাইও–তে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৪৪ সালে তিনি ‘ব্লুম হাই স্কুল’– এ ভর্তি হন এবং বিমান উড্ডয়নের শিক্ষা লাভ করেন। মাত্র ১৬ বছর বয়সে তিনি ‘ছাত্র বিমান উড্ডয়ন সনদ’ লাভ করেন। ফেব্রুয়ারি ১৯৪৯ সালে তিনি নেভির মিডশিপম্যান হিসাবে নিয়োগ লাভ করেন। ২ মার্চ ১৯৫০ সালে তিনি প্রথমবারের জন্য কোনো বিমানবাহী যুদ্ধজাহাজে তার বিমান অবতরণ করান। নীল আর্মস্ট্রং ইন্ডিয়ানার পার্ডু বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যারোনটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়াশোনা শুরু করেন। ১৯৫৫ সালে তিনি গ্র্যাজুয়েশন ডিগ্রী লাভ করেন। গ্র্যাজুয়েশন শেষ করেই তিনি সিভিলিয়ান রিসার্চ পাইলট হিসেবে ন্যাশনাল অ্যাডভাইজরি কমিটি ফর অ্যারোনটিক্স নাসা’য় যোগদান করেন। ১ মার্চ ১৯৫৫ সালে জীবনে প্রথমবারের মতো টেস্ট পাইলট হিসাবে তিনি বিমান চালনা করেন। ১৯৬২ সালে নাসা জেমিনি–৮ মিশনের জন্য নভোচারী নেয়ার ঘোষণা দিলে আর্মস্ট্রং তাতে আবেদন করেন এবং নাসার দ্বিতীয় গ্রুপের মহাকাশচারী হিসেবে নির্বাচিত হন। ১৯৬৬ সালে তিনি দুই আসনের জেমিনি–৮ মিশনের দায়িত্বে ছিলেন। জেমিনি–৮ মিশনেই তিনি প্রথমবারের মতো একটি স্পেস ফ্লাইটের কমান্ডিং পাইলটের দায়িত্ব পালন করেন। তিনিই ছিলেন নাসার প্রথম সিভিলিয়ান নভোচারী যিনি মহাকাশে পাড়ি জমান। জানুয়ারি ১৯৬৯ সালে নাসা অ্যাপোলো–১১ মিশনের যাত্রীদের নাম ঘোষণা করে। নীল আর্মস্ট্রং (জেমিনি–৮), এডউইন ‘বাজ’ অলড্রিন (জেমিনি–১২), মাইকেল কলিনস (জেমিনি–১০)-কে এই তিন সদস্যবিশিষ্ট মিশনের জন্য নির্বাচিত করা হয়। ১৬ জুলাই ১৯৬৯ সালে ফ্লোরিডার কেপ কেনাভেরাল লঞ্চপ্যাড থেকে আর্মস্ট্রং, অলড্রিন, এবং কলিনস অ্যাপোলো–১১ মিশনের যাত্রী হয়ে চাঁদের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন। চারদিন পর ‘ঈগল’ (মূল মহাকাশযানের ক্ষুদ্র অংশ যা চাঁদের মাটিতে নামতে ব্যবহৃত হয়েছিল) চাঁদের মাটি স্পর্শ করে। প্রথম মানুষ হিসেবে আর্মস্ট্রং তার বাম পা চাঁদের মাটিতে রাখেন এবং বলে ওঠেন, ‘একজন মানুষের জন্য এটা একটা ক্ষুদ্র ধাপ হলেও মানব জাতির জন্য এটি একটি বিরাট পদক্ষেপ’। ২০১২ সালে ২৫ আগস্ট তিনি মৃত্যুবরণ করেন।