নিয়ম বহির্ভূতভাবেই ২৭ জনের নিয়োগ

চসিকের বিদ্যুৎ উপ-বিভাগ ।। প্রমাণ পেয়েছে তদন্ত কমিটি

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ at ৫:৩৭ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) বিদ্যুৎ উপ-বিভাগে ‘নিয়ম বহির্ভূতভাবে’ ২৭ জনকে নিয়োগের প্রমাণ পেয়েছে তদন্ত কমিটি। এক্ষেত্রে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ ও ইন্টারভিউ কার্ড ইস্যু করা হয়নি বলে তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। ২০২০ সালের ২৮ জুলাই ‘কাজ নাই মজুরি নাই’ ভিত্তিতে ২৭ জনকে বৈদ্যুতিক হেলপার পদে নিয়োগ দেয়া হয়। গত বছরের ২৭ আগস্ট দৈনিক আজাদীতে ‘চসিকে নিয়োগ বাণিজ্য’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপর ২৪ নভেম্বর স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় তদন্তের নির্দেশ দেয় সিটি কর্পোরেশকে। পরবর্তীতে ২২ ডিসেম্বর অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলামকে তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হয়। গত রোববার প্রধান নির্বাহীর কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন তিনি। বিষয়টি নিশ্চিত করে চসিকের সচিব আবু শাহেদ চৌধুরী আজাদীকে বলেন, প্রতিবেদনের আলোকে পরবর্তী ব্যবস্থা নেব।
এদিকে তদন্ত প্রতিবেদনে ৬টি পর্যবেক্ষণ রয়েছে। এতে বলা হয়, ‘নিয়োগের বিষয়ে পত্রিকায় কোনো বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়নি। আবেদনকারীদের কোনো সাক্ষাৎকারের জন্য কার্ডও ইস্যু করা হয়নি। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিবিহীন বিভিন্ন সময়ে প্রাপ্ত আবেদনের ভিত্তিতে শুধুমাত্র আবেদনকারীদের মৌখিক পরীক্ষা নিয়ে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এতে অধিকতর প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার যাচাই-বাছাইয়ের পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়নি। শূন্য পদে লোক নিয়োগ বা পদোন্নতির ক্ষেত্রে সভা আহ্বানে সচিবালয় বিভাগের কার্যকরী উদ্যোগ পরিকল্পিত হয়নি।
তদন্ত কমিটির মতামতে উল্লেখ করা হয়েছে, বিদ্যুৎ উপ-বিভাগ হতে ২৩টি আবেদন পাওয়া যায়। তবে গত বছরের ২৬ জুলাই অনুষ্ঠিত মৌখিক পরীক্ষায় ২৮ জন অংশ নেন।
প্রতিবেদনে পাঁচটি সুপারিশ করা হয়। সুপারিশগুলো হচ্ছে, যেকোনো ধরনের শূন্য পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে যথাযথভাবে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ, চসিকের যেকোনো ধরনের পদোন্নতি প্রদান পদোন্নতি বোর্ডের মাধ্যমে করা, স্ব-বেতনে উপরের পদে কাজ চালিয়ে নেয়ার জন্য যেকোনো ধরনের অতিরিক্ত কিংবা চলতি দায়িত্ব প্রদান নিরুৎসাহিত করা, শূন্য পদে লোক নিয়োগে কিংবা পদোন্নতি প্রদান সংক্রান্ত গঠিত পদোন্নতি বোর্ডের সভা প্রতি বছর অন্তত একবার আহ্বান করা।
জানা গেছে, বৈদ্যুতিক হেলপার পদে নিয়োগের শর্ত রয়েছে আউটসোর্সিং নীতিমালা অনুসরণের। এ নীতিমালায় একজন বৈদ্যুতিক হেলপারের বেতন ‘সর্বসাকুল্যে’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। কিন্তু নিয়োগকৃতদের বেতন দৈনিক ভিত্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে। অর্থাৎ আউটসোর্সিং নীতিমালা অনুসরণ করা হয়নি। এছাড়া সৃজিত পদের বিপরীতে অতিরিক্ত ৭৩ জন বৈদ্যুতিক হেলপার কর্মরত আছে চসিকে। এ অবস্থায় অতিরিক্ত ২৭ জনকে নিয়োগ দেয়ায় প্রশ্ন ওঠে।
নিয়োগ দেয়া বৈদ্যুতিক হেলপারদের ২০২০ সালের ৫ আগস্ট পদায়ন করা হয়। এতে দুজনকে প্রধান অফিসে পদায়ন করা হয়। অথচ ওই সময় সেখানে দশজনের অধিক কর্মরত ছিলেন। এছাড়া কয়েকজনকে লিফট অপারেটর, স্কেলেটর অপারেটর ও মিটার রিডারের সহযোগী হিসেবে পদায়ন করা হয়। একজনকে চসিক পরিচালিত থিয়েটার ইনস্টিটিউটের লিফট অপারেটর হিসেবে পদায়ন করা হলেও সেখানে কর্মরত ছিলেন দুজন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকৌতুক কণিকা
পরবর্তী নিবন্ধরোহিঙ্গারা ফের এলে গ্রহণ করবে না বাংলাদেশ