নিয়ন্ত্রণ হারা লরির কারণে ওরা হলো লাশ

সীতাকুণ্ড প্রতিনিধি | সোমবার , ১১ অক্টোবর, ২০২১ at ৬:০৮ পূর্বাহ্ণ

প্রতিদিনের মতো গতকাল সকাল ৮টায় কাজে বেরুবেন বলে স্ত্রী, সন্তানের জন্য দোকান থেকে রুটি আনতে যাচ্ছিলেন মো. মিন্টু। ৬ বছরের ছেলে মো. সিয়াম বায়না ধরল বাবার সঙ্গে যাওয়ার। তাকে নিয়েই মহাসড়ক পার হয়ে রুটির দোকানে যাচ্ছিলেন মিন্টু। কিন্তুু ৫০ মিটার দূরত্বের এ পথ অতিক্রমের আগেই তাদের অজান্তে পেছন থেকে নিয়ন্ত্রণ হারানো একটি লরি দণ্ডায়মান একটি ট্রাককে ধাক্কা দেয়। এ সময় নিয়ন্ত্রণ হারানো লরিটি খাদে গিয়ে পড়ে এবং ট্রাকটি উল্টে যায়। ওই ট্রাকের নিচে চাপা পড়ে ঘটনাস্থলেই নিহত হয় সিয়াম। গুরুতর আহত হন তার বাবা মিন্টু। এছাড়া ঘটনাস্থলে মারা যায় সীতাকুণ্ডের মাছের আড়তের কর্মচারী মেহেদী হাসান জনি (১৩)। নিহত জনি মীরসরাইয়ের জোরারগঞ্জ থানার দক্ষিণ মেহেদীনগর গ্রামের মো. আলমগীরের ছেলে। শিশু সিয়াম বাগেরহাট জেলার চিতলমারী থানার বড়গুলি গ্রামের মো. মিন্টুর ছেলে।
জানা যায়, তিন যুগ আগে জীবিকার তাগিদে খুলনার বাগেরহাট থেকে পরিবার নিয়ে সীতাকুণ্ডে আসেন মিন্টু। এরপর সীতাকুণ্ড পৌরসভার ইদিলপুরে ভাড়া বাসায় বসবাস করে আসছিলেন। দুই ছেলে ও স্ত্রীকে নিয়ে অভাবের সংসার। প্রতিদিন ফেরি করে পুরাতন লোহা, টিন ও প্লাস্টিক সংগ্রহ করে সন্ধ্যায় স্থানীয় ভাঙারি পাইকারদের কাছে বিক্রি করে পরিবার চালাতেন। ছেলেকে পড়াশুনা করিয়ে বড় মানুষ করার স্বপ্ন ছিল মিন্টুর। কিন্তুু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস, ছেলেকে হারাতে হলো।
সিয়ামের মা সোনিয়া আক্তার পুত্র শোকে বিলাপ করতে করতে বলেন, আমার ছেলে সকালের নাস্তার জন্য বাবার সাথে রুটি আনতে গিয়েছিল। কিন্তু রুটির বদলে ছেলের লাশ পেলাম। তার বাবার জ্ঞান এখনো ফেরেনি। সে জানেই না তার ছেলে আর নেই।
সীতাকুণ্ড মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুমন বণিক বলেন, সকালে সীতাকুণ্ড বাইপাস সড়ক এলাকায় ঢাকামুখী দাঁড়িয়ে থাকা একটি পিকআপকে একইমুখী লরি পেছন থেকে ধাক্কা দেয়। এতে পিকআপের সামনে থাকা ৩ পথচারী চাপা পড়ে। এর মধ্যে জনি ও সায়েম নিহত হয়। সায়েমের বাবা মিন্টু গুরুতর আহত হন।
হাইওয়ে পুলিশের কুমিরা ফাঁড়ির কর্মকর্তা পরিদর্শক মো. আমীর ফারুক বলেন, দুর্ঘটনায় নিহত শিশুসহ দুজনের মরদেহ মর্গে পাঠানো হয়েছে। আহত ব্যক্তিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএলপিজির দাম কেজিতে ২২ শতাংশ বাড়ল
পরবর্তী নিবন্ধট্রাক চাপায় শেষ কলেজছাত্রীর স্বপ্ন