কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে সহিংসতায় নিহতদের যে সংখ্যা সরকার দিয়েছে, তা গ্রহণযোগ্য নয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল সোমবার এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে এর সংখ্যা অনেক বেশি। কিশোর ও আগে নিহতদের নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়নি। অবিলম্বে সঠিক তালিকা প্রকাশ করতে হবে। খবর বিডিনিউজের।
আন্দোলন চলাকালে সহিংসতায় ১৪৭ জনের মৃত্যুর তথ্য দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। গত ১৬ জুলাই আন্দোলন সহিংস রূপ পাওয়ার পর প্রথমবারের গতকাল সরকারের তরফ থেকে প্রাণহানির সংখ্যা জানানো হয়। যদিও সংবাদমাধ্যমে আসা প্রতিবেদনে দুই শতাধিক মৃত্যুর কথা বলা হচ্ছে। কোটা আন্দোলন নিয়ে সরকার মিথ্যাচার ও অপকৌশলের আশ্রয় নিয়েছে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যৌথভাবে যে মিথ্যাচার করছে সেটির সর্বশেষ প্রমাণ হলো দেশ–বিদেশের সকল নাগরিক দেখার পরও রংপুরের আবু সাঈদের মৃত্যুকে গুলিতে নয়, ইটের আঘাতে হয়েছে বলা হচ্ছে। এভাবে মিথ্যাচার, অপকৌশল ও নির্যাতন–নিপীড়ন চালিয়ে প্রকৃত সত্যকে জনগণ থেকে আড়াল করতে পারবে না অবৈধ আওয়ামী সরকার। তাই এখনও বলি, সকল দায় নিয়ে সরকারের উচিত জনদাবির প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে পদত্যাগ করা।
কোটা আন্দোলনে সরকারের ক্ষমতার ভিত নাড়িয়ে দিয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, আন্দোলন দমনের নামে নিষ্ঠুরভাবে রাষ্ট্রীয় ও দলীয় সন্ত্রাস চালিয়ে শত শত ছাত্র–জনতাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। যারা নিহত কিংবা আহত হয়েছে, তাদের অধিকাংশই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সরকারদলীয় সন্ত্রাসী পেটুয়া বাহিনীর ছোড়া গুলিতে হয়েছে।
ফখরুল বলেন, প্রধানমন্ত্রী ও সরকারের মন্ত্রীরা বারবার বলছেন, প্রকৃত সন্ত্রাসীদের খুঁজে বের করে শাস্তি নিশ্চিত করা হবে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, প্রকৃত অপরাধীদের না খুঁজে বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের দমনে উঠে পড়ে লেগেছে সরকার। তাদের এই হত্যাযজ্ঞ থেকে বাসা–বাড়ির বেলকনি, পড়ালেখার ঘর বা বাড়ির ছাদে দাঁড়িয়ে থাকা ছোট্ট শিশুমনিরাও বাদ যায়নি।
আন্দোলন ঘিরে সহিংসতার অভিযোগে গ্রেপ্তার বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন করা হচ্ছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক নুরুল হক নুরকে নির্যাতনের পর আবারও নির্যাতন চালানোর উদ্দেশ্যে তাদের পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে, যা গভীর উদ্বেগ–উৎকণ্ঠা সৃষ্টি করেছে। বারবার রিমান্ডে নেওয়া ও রিমান্ডে নিয়ে অমানবিক নির্যাতন করা সংবিধান বিরোধী কাজ। সর্বোচ্চ আদালতের এ বিষয়ে নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু সরকার আইনের তোয়াক্কা করছে না। আমরা দাবি জানাব, এভাবে বার বার রিমান্ডে নেওয়া বন্ধ করুন।