ইলিশের প্রজনন মৌসুম উপলক্ষে সাগরে মাছ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞা শেষে গতকাল সোমবার ভোররাত থেকে ফের মাছ ধরা শুরু হওয়ায় ২২ দিন পর বাজারে এসেছে নানা জাতের সামুদ্রিক মাছ। এরমধ্যে তাইল্যা, বাটা, চিংড়িসহ নানা জাতের সুস্বাদু মাছ ধরা পড়লেও ইলিশ আসতে আরও ৩/৪ দিন সময় লাগতে পারে বলে জানায় ট্রলার মালিকরা।
গতকাল বাজারে গিয়ে তাইল্যা, বাটা, পোয়া, ছুরি, পুটি, বরাসহ নানা জাতের সামুদ্রিক মাছ দেখা গেলেও ইলিশের দেখা মেলেনি।
ফিশারি ঘাটস্থ মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী বলেন, ইলিশের প্রজনন মৌসুম উপলক্ষে গত ১৩ অক্টোবর থেকে সাগরে মাছ ধরার উপর ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শুরু হওয়ার পর থেকেই মাছের অভাবে সাগরপাড়ের এ শহরের প্রধান মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র ফিশারিঘাট ধুুধু প্রান্তরে পরিণত হয়েছিল। মাছ ধরা শুরু হওয়ায় ফিশারিঘাটসহ জেলার জেলেপল্লীগুলোতে আবারও প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে। তবে সোমবার থেকে পাঁচকাড়া জাতের মাছগুলো বাজারে এলেও ইলিশের দেখা মেলেনি। ইলিশ জালের বোটগুলো আরো ৩/৪ দিন পর গভীর সাগর থেকে মাছ ধরে ফিরলে তখন থেকেই বাজারে ইলিশ সরবরাহ স্বাভাবিক হবে বলে আশা করছি।
জেলা ফিশিং বোট মালিক সমিতি সূত্র জানায়, কক্সবাজারে ছোট বড় প্রায় ৮ হাজার যান্ত্রিক নৌ–যান আছে। এরমধ্যে আকার ভেদে একেকটি বড় নৌ–যানে ৩০ থেকে ৪০ জন এবং ছোট নৌ–যানে ৫ থেকে ১৭ জন জেলে থাকে। আবার কক্সবাজার শহরতলীর দরিয়া নগর ঘাটের ইঞ্জিনবিহীন ককশিটের বোটে থাকে মাত্র ২ জন জেলে। ট্রলারগুলোর মধ্যে ইলিশ জালের বোটগুলো ৮/১০ দিনের রসদ নিয়ে এবং তাইল্যা জালের বোটগুলো এক সপ্তাহের রসদ নিয়ে সাগরে মাছ ধরতে যায়।
এছাড়া চাউপ্পা জাল, ডোবা জাল, চামিলা জাল ও চোখফোলা জালের বোটগুলো মাত্র একদিনের রসদ নিয়ে সাগরে যায় এবং মাছ ধরে দিনে দিনেই ফিরে আসে। এই ধরনের জালের বোটগুলো সাগর উপকূলে ছোট প্রজাতির মাছ ধরে, যাকে স্থানীয় ভাষায় ‘পাঁচকাড়া’ (পাঁচ প্রকারের) মাছ বলা হয়। এই ধরনের বোটগুলোতে একেক মৌসুমে একেক প্রজাতির মাছ বেশি ধরা পড়ে।
বঙ্গোপসাগরে বিভিন্ন ধরনের জাল দিয়ে মাছ ধরা হয়। এরমধ্যে ইলিশ ধরা হয় ৪ থেকে ৫ আঙুলের ফাঁসযুক্ত সুতার জাল দিয়ে, যেটি ভাসা জাল নামেই জেলেদের কাছে পরিচিত। আর সাগর থেকে তাইল্যা ও কোরাল মাছ ধরা হয় ২ থেকে ৩ আঙুলের ফাঁসযুক্ত এক ধরনের রক জাল দিয়ে, যেটি তাইল্যা জাল নামেই পরিচিত। তবে সোমবার মাছ ধরা শুরু হওয়ার প্রথমদিন পাঁচকাড়া জাতের মাছগুলোই বাজারে এসেছে। আর ইলিশ জালের বোটগুলো ফিরতে আরও ৩/৪ দিন সময় লাগতে পারে বলে জানান জেলা ফিশিং বোট মালিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক মাস্টার মোস্তাক আহমদ।
তিনি জানান, নিষেধাজ্ঞা অতিবাহিত হওয়ার পর অনুকূল আবহাওয়ায় কঙবাজারের প্রায় সকল বোটই সাগরে মাছ ধরতে গেছে।