আইসিসির দেওয়া নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ রোববার শেষ হয়েছে নাসির হোসেনের। আর গতকালই মাঠে নামলেন। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচে রূপগঞ্জ টাইগার্স ক্রিকেট ক্লাবের হয়ে বোলিং করেছেন তিনি। ফেরার দিনে মিরপুর শের–ই–বাংলা স্টেডিয়ামে পুরো ১০ ওভার বোলিং করে ৩১ রান দিয়ে একটি উইকেট নিয়েছেন ৩৩ বছর বয়সী অলরাউন্ডার। আরও অনেক দিন অবশ্য নিষেধাজ্ঞার ছায়ায় তাকে থাকতে হবে। তার স্থগিত নিষেধাজ্ঞা আছে এখনও ছয় মাসের। এই সময়ের মধ্যে পুরোনো ‘অপরাধ’ সংক্রান্ত কিছুতে জড়িয়ে পড়লে আবার নিষিদ্ধ হতে হবে তাকে। বিসিবি সোমবার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, দুর্নীতি বিরোধী প্রশিক্ষণে অংশ নেওয়ার বাধ্যবাধকতা পূরণ করাসহ সব ধরনের শর্ত পূরণ করেই ক্রিকেটে ফিরতে পেরেছেন নাসির।আইসিসি দুর্নীতি বিরোধী নীতিমালার তিনটি ধারাভঙ্গের দায়ে গত বছরের জানুয়ারিতে নাসিরকে নিষিদ্ধ করার ঘোষণা দেয় আইসিসি। দেড় বছরের মূল নিষেধাজ্ঞার সঙ্গে ছয় মাসের স্থগিতসহ মোট দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ করা হয় তাকে। ২০২১ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাতে টি–টেন লিগের ঘটনায় নিষিদ্ধ করা হয়েছিল নাসিরকে। ওই আসরে পুনে ডেভিলসের অধিনায়কত্ব করেন তিনি। ছয় ম্যাচের মধ্যে কেবল একটিতে জিতে সবার নিচে আসর শেষ করে তার দল। তার নিজের পারফরম্যান্সও ছিল যাচ্ছেতাই। রান করেছিলেন মোট ২৭, উইকেট নিয়েছিলেন তিনটি। ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয় দুর্নীতি বিরোধী আইনের তিনটি ধারা ভঙ্গের। ৭৫০ ডলারের বেশি মূল্যের উপহার গ্রহণ করে সেটি দুর্নীতি বিরোধী কর্মকর্তাদের জানাননি তিনি। শাস্তির ঘোষণা সময় আইসিসি জানায়, উপহারটি ছিল একটি ‘আইফোন ১২।’ এছাড়াও দুর্নীতির প্রস্তাব বা আমন্ত্রণ পেয়েও সেটি দুর্নীতি বিরোধী কর্মকর্তাদের জানাননি এবং দুর্নীতি বিরোধী কর্মকর্তাদের তদন্তে কোনো সহায়তা করেননি এবং সেটার কোনো ব্যাখ্যা দেননি। সেসবের দায়ে নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে আবার ক্রিকেটের মূল স্রোতে ফিরতে পারলেন একসময় বাংলাদেশ জাতীয় দলের নিয়মিত মুখ এই ক্রিকেটার। মিরপুরে এ দিন নতুন বলে স্রেফ এক ওভারই করেন নাসির। এরপর দশম ওভারে ফিরে করেন আরেক ওভার। পরে দশম ওভারে ফিরে এক প্রান্তে টানা ৯ ওভার বোলিং করেছেন। উইকেটও ধরা দিয়েছে। অফ স্টাম্পের বাইরে ঝুলিয়ে দেওয়া বলে কাট করেন ২৪ রান করা বাঁহাতি ব্যাটসম্যান শামিম মিয়া। পয়েন্টে ডাইভিং ক্যাচ নেন অধিনায়ক আরিফুল হক। স্বীকৃত ক্রিকেটে নাসির সবশেষ খেলেছেন ঢাকা প্রিমিয়ার লিগেই। ২০২৩ সালের ১৩ মে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাবের হয়ে খেলেছিলেন ফতুল্লায় গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের বিপক্ষে। এরপর ওই বছরের অগাস্টে যুক্তরাষ্ট্রে মাস্টার্স ক্রিকেটে পাঁচটি ম্যাচ খেলেছিলেন আটলান্টা রাইডার্সে। তবে সেটি স্বীকৃত পর্যায়ের ক্রিকেট নয়। নিষেধাজ্ঞার সময় কোনো ধরনের ক্রিকেটেই খেলার অনুমতি তার ছিল না। স্ত্রী–সন্তানকে নিয়ে এখন বছরের বেশির ভাগ সময় যুক্তরাষ্ট্রেই কাটান নাসির। একসময় ‘ফিনিশার’ হিসেবে বাংলাদেশের ক্রিকেটে পরিচিতি পাওয়া অলরাউন্ডার দেশের হয়ে খেলেছেন ১৯ টেস্ট, ৬৫ ওয়ানডে ও ৩১ টি–টোয়েন্টি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তাকে সবশেষ দেখা গেছে ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ত্রিদেশীয় সিরিজে।