টানা তিন মাস ২ দিন পর দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ কৃত্রিম জলাধার কাপ্তাই হ্রদে মাছ শিকারে নামছেন জেলেরা। গতকাল শনিবার দিবাগত মধ্যরাত (১২টা ১ মিনিট) থেকে কাপ্তাই হ্রদে জাল ফেলবেন জেলেরা। ইতোমধ্যে জাল বুননসহ আনুষাঙ্গিক সব কাজ সম্পন্ন করেছেন জেলেরা। মাছ অবতরণ (ল্যান্ডিং) ও বাজারজাতকরণের যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনও (বিএফডিসি)।
এদিকে, নির্ধারিত নিষেধাজ্ঞাকালীন সময় শেষে আবারও হ্রদে মাছ শিকার শুরু হওয়ায় জেলে ও ব্যবসায়ীদের মুখে হাসি ফুটেছে। কর্মচাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে কাপ্তাই হ্রদ মৎস্য উন্নয়ন ও বিপণণকেন্দ্রের রাঙামাটির প্রধান বিপণনকেন্দ্রসহ কাপ্তাই, মারিশ্যা ও মহালছড়ি উপকেন্দ্রে। যেখানে গত তিনমাস ধরে ছিল সুনশান নীরবতা, ছিল না কর্মব্যস্ততা। মাছ আহরণকে ঘিরে এখন জমজমাট হয়ে উঠেছে বিপণণকেন্দ্রসমূহ। বরফকলসহ অন্যান্য শ্রমিক–কর্মচারীরা ইতোমধ্যেই ব্যস্ত সময় পার করছেন। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কাপ্তাই হ্রদ মৎস্য উন্নয়ন ও বিপণণকেন্দ্রের ব্যবস্থাপক কমান্ডার মো. ফয়েজ আল করিম বলেন, ইতোমধ্যে বিএফডিসির রাঙামাটির প্রধান বিপণনকেন্দ্রসহ মারিশ্যা, কাপ্তাই ও মহালছড়ি উপকেন্দ্রের যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। মধ্যরাত থেকে জেলেরা হ্রদে মাছ শিকারে নামছেন। রোববার ভোর ৬টা থেকে শুল্কহার আদায় এবং বাজারজাতকরণ শুরু হবে। প্রসঙ্গত, ৭২৫ বর্গ কিলোমিটারের কাপ্তাই হ্রদে কার্পজাতীয় মাছের পোনার প্রাকৃতিক প্রজনন নিশ্চিত, অবমুক্ত করা পোনার সুষম বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রতি বছরের ১ মে থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত তিন মাস কাপ্তাই হ্রদে মাছ শিকার বন্ধে নিষেধাজ্ঞা দেয় স্থানীয় প্রশাসন। চলতি মৌসুমে তিন মাসের নির্ধারিত নিষেধাজ্ঞা শেষেও বিএফডিসি প্রস্তুতির জন্য আরও ২ দিন বাড়িয়ে ২ আগস্ট পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ বর্ধিত করা হয়। ফলে ৩ আগস্ট থেকে হ্রদে নামছেন জেলেরা।
মৎস্য বিভাগের হিসাবে, রাঙামাটির রাজস্থলী ও কাউখালী ছাড়া বাকি আট উপজেলা এবং খাগড়াছড়ির দীঘিনালা ও মহালছড়ি উপজেলাসহ দুই জেলার ১০ উপজেলার প্রায় ২৭ হাজার জেলে পরিবার কাপ্তাই হ্রদের ওপর নির্ভরশীল।
গত ২০২৪–২৫ মৌসুমে কাপ্তাই হ্রদ থেকে সাড়ে ৮ হাজার মেট্রিক টন মাছ আহরণের বিপরীতে সাড়ে ১৯ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করে বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি)।