নিলাম অযোগ্য ১৪৫ কন্টেনার পণ্যের ধ্বংস প্রক্রিয়া শুরু

পরিবেশসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে কাস্টমসের চিঠি

আজাদী প্রতিবেদন | শুক্রবার , ৬ নভেম্বর, ২০২০ at ৬:০২ পূর্বাহ্ণ

দীর্ঘ প্রায় এক বছর পর নিলাম অযোগ্য মেয়াদোত্তীর্ণ ও পচে যাওয়া পণ্য ধ্বংস প্রক্রিয়া শুরু করছে চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। প্রাথমিকভাবে ১৪৫ কন্টেনার পণ্যের তালিকা প্রণয়ন করেছে কাস্টমসের নিলাম শাখা। পণ্য ধ্বংস করতে ইতোমধ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকে চিঠি দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন নিলাম শাখার একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা।
নিলাম শাখা সূত্রে জানা গেছে, নিলাম অযোগ্য ১৪৫ কন্টেনার পণ্যের তালিকায় রয়েছে পেঁয়াজ, আদা, রসুন, আপেল, কমলা, মাল্টা এবং বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থ। তবে এরমধ্যে বেশিরভাগই ফলমূল জাতীয় পণ্য রয়েছে। নিলাম শাখার কর্মকর্তারা জানান, আমদানিকৃত পণ্য জাহাজ থেকে বন্দর ইয়ার্ডে নামার ৩০ দিনের মধ্যে সরবরাহ নিতে হয়। এই সময়ের মধ্যে কোনো আমদানিকারক পণ্য সরবরাহ না নিলে তাকে নোটিশ দেয় কাস্টমস। নোটিশ দেওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে এই পণ্য সরবরাহ না নিলে তা নিলামে তুলতে পারে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সর্বমোট ৪৫ দিনের মধ্যে নিলামে তোলার এই নিয়ম দীর্ঘদিন ধরে কার্যকর করতে পারেনি বন্দর ও কাস্টমস। এতে করে বন্দরের ইয়ার্ডে এসব কন্টেনার পড়ে থাকে। অন্যদিকে আমদানিকারক যথাসময়ে পণ্যভর্তি কন্টেনার খালাস না করলে বন্দরের স্বাভাবিক কার্যক্রমের ব্যাঘাত ঘটে। এক্ষেত্রে পচনশীল পণ্যভর্তি কন্টেনার একটি বড় সমস্যা। খালাস না হওয়া এসব কন্টেনার শিপিং কোম্পানির জন্যও বিপদের। কারণ এসব কন্টেনারে বৈদ্যুতিক সংযোগ দিতে হয়। আমদানিকারক খালাস না নিলেও বৈদ্যুতিক সংযোগ চাইলেও বিচ্ছিন্ন করা যায় না। বন্দর ব্যবহারকারীরা জানান, নিলাম অযোগ্য পণ্য বন্দরের জন্য একটি বিশাল সমস্যা। অনেক সময় আইনি জটিলতায় নিলাম অযোগ্য পণ্য ধ্বংস করতে পারে না কাস্টমস। ফলে বন্দর ইয়ার্ডে এসব কন্টেনারের জন্য জট লেগে যায়।
জানতে চাইলে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের উপ-কমিশনার (নিলাম শাখা) ফয়সাল বিন রহমান দৈনিক আজাদীকে বলেন, বন্দরের কার্যক্রম আরো গতিশীল করতে নিলাম অযোগ্য পণ্য ধ্বংস করার উদ্যোগ নিয়েছি আমরা। ইতোমধ্যে আমরা ১৪৫টি কন্টেনার নিলাম অযোগ্য হিসেবে ইনভেন্ট্রি করেছি। পণ্য ধ্বংস করতে কিছু প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হয়। তাই আমরা কয়েকটি সংস্থাকে ইতোমধ্যে চিঠি দিয়েছি। যেমন পরিবেশগত বিষয়টি পরিবেশ অধিদপ্তর দেখে। সবগুলোর সংস্থার সাথে সমন্বয় করে আমরা দ্রুত ধ্বংস কার্যক্রম শুরু করতে পারবো বলে আশা করছি।
উল্লেখ্য, সর্বশেষ গত বছরের ডিসেম্বরে ২০৩ কন্টেনার নিলাম অযোগ্য পণ্য ধ্বংস করে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। সেই সময় হালিশহরের টোল রোডের আবদুর রহমান ডিপোর পাশে ব্যক্তিমালিকানাধীন একটি জমিতে ২০৩ কন্টেনার পণ্য ধ্বংস করা হয়। ধ্বংসের তালিকায় ছিল- আপেল, কমলা, মাল্টা, পেঁয়াজ, মুরগির খাবার, এনার্জি ড্রিংক, সূর্যমুখী তেল, ফলের জুস, প্রসাধনী ও স্যানিটারি ন্যাপকিন। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এসব পণ্য ধ্বংসে কাস্টমস কর্তৃপক্ষকে সহায়তা দেয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকালীপুরে একঘণ্টার ব্যবধানে দুই ভাইয়ের মৃত্যু
পরবর্তী নিবন্ধঅটোমোবাইল শিল্পের এক স্বপ্নদ্রষ্টা