চট্টগ্রামে বন্দরে দীর্ঘ সময় পড়ে থাকা নিলাম অযোগ্য মাছ–মুরগি খাদ্যসহ ১১১ কন্টেনারে ২ হাজার ৩৫০ টন বিভিন্ন ধরণের পণ্যের ধ্বংস কার্যক্রম আগামীকাল থেকে শুরু হচ্ছে। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের মালিকানাধীন চট্টগ্রাম বন্দর রিপাবলিক ক্লাবের পিছনের খালি জায়গায় এসব পণ্য ধ্বংস করার উদ্যোগ নিয়েছে চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। ধ্বংস কার্যক্রমে সহায়তা করবে চট্টগ্রাম কাস্টমসের নিলাম পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান কেএম কর্পোরেশন। ধ্বংস তালিকার পণ্যের মধ্যে রয়েছে–হিমায়িত চিংড়ি, আদা, প্রাণী খাদ্য, হিমায়িত মাংস, মেন্ডারিন, মিট অ্যান্ড বোন মিল, মাছ ও মুরগির খাদ্য।
চট্টগ্রাম কাস্টমস সূত্রে জানা যায়, ধ্বংস কার্যক্রমের জন্য ক্রেন, এস্কেভেটর, ট্রেলার, ট্রাকসহ প্রয়োজনীয় যানবাহনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ওই জায়গা খুঁড়ে পচে যাওয়া পণ্য ফেলে মাটিচাপা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন কেএম কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ মোরশেদ।
বন্দর ব্যবহারকারীরা জানান, নিলাম অযোগ্য পণ্য বন্দরের জন্য একটি বিশাল সমস্যা। অনেক সময় আইনি জটিলতায় নিলাম অযোগ্য পণ্য ধ্বংস করতে পারে না কাস্টমস। ফলে বন্দর ইয়ার্ডে এসব কন্টেনারের জন্য জট লেগে যায়। নিলাম অযোগ্য পণ্য ধ্বংসের জন্য কাস্টমসে স্থায়ীভাবে একটা স্থান নির্ধারণ করা উচিত।
চট্টগ্রাম কাস্টমসের উপ–কমিশনার সাইদুল ইসলাম বলেন, চট্টগ্রামে বন্দরে পড়ে থাকা নিলাম অযোগ্য পণ্য ধ্বংস করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আগামী বৃহস্পতিবার থেকে ১১১ কন্টেনার পণ্য ধ্বংসের কাজ শুরু হবে। এসব পণ্য ধ্বংস করা হলে বন্দরের অনেক জায়গা খালি হবে।
উল্লেখ্য, গত ২১ নভেম্বর তিনদিনে ২১ কন্টেনারে আদা, পেঁয়াজ, মাল্টা, মেন্ডারিন এবং ড্রাগন ধ্বংস করা হয়। নিলাম শাখা সূত্রে জানা গেছে, নিলাম শাখা সূত্রে জানা গেছে, আমদানিকৃত পণ্য জাহাজ থেকে বন্দর ইয়ার্ডে নামার ৩০ দিনের মধ্যে সরবরাহ নিতে হয়। এই সময়ের মধ্যে কোনো আমদানিকারক পণ্য সরবরাহ না নিলে তাকে নোটিশ দেয় কাস্টমস। নোটিশ দেওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে এই পণ্য সরবরাহ না নিলে তা নিলামে তুলতে পারে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সর্বমোট ৪৫ দিনের মধ্যে নিলামে তোলার এই নিয়ম দীর্ঘদিন ধরে কার্যকর করতে পারেনি বন্দর ও কাস্টমস। এতে করে বন্দরের ইয়ার্ডে এসব কন্টেনার পড়ে থাকে। অন্যদিকে আমদানিকারক যথাসময়ে পণ্যভর্তি কন্টেনার খালাস না করলে বন্দরের স্বাভাবিক কার্যক্রমের ব্যাঘাত ঘটে। এক্ষেত্রে পচনশীল পণ্যভর্তি কন্টেনার একটি বড় সমস্যা। খালাস না হওয়া এসব কন্টেনার শিপিং কোম্পানির জন্যও বিপদের। কারণ এসব কন্টেনারে বৈদ্যুতিক সংযোগ দিতে হয়। আমদানিকারক খালাস না নিলেও বৈদ্যুতিক সংযোগ চাইলেও বিচ্ছিন্ন করা যায় না।