চট্টগ্রাম বন্দরে দীর্ঘ সময় পড়ে থাকা কংক্রিট মিক্সার লরি ও কেমিক্যালসহ বিভিন্ন ধরনের ৫৮ লট পণ্য নিলামে তুলেছে চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। বিডাররা (নিলামে অংশগ্রহণকারী) এসব পণ্য কিনতে চাইলে কাস্টমসের ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে দরপত্র দাখিল করতে পারবেন। অনলাইনে দরপত্র দাখিল করা যাবে আগামী ৯ সেপ্টেম্বর দুপুর ২টা পর্যন্ত। গত ১৯ আগস্ট থেকে দরপত্র দাখিল শুরু হয়। এছাড়া পণ্য প্রদর্শনের সময় ধরা হয়েছে ২১ আগস্ট থেকে ২৮ আগস্ট পর্যন্ত।
চট্টগ্রাম কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, নিলামে তোলা চীনের তৈরি সাদা–লাল রঙের ১০ চাকা বিশিষ্ট পাঁচটি কংক্রিট মিক্সার লরি গাড়িগুলো ২০২২ মডেলের। চট্টগ্রাম বন্দরে আমদানি হয় গত ২০২৩ সালে। চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষ এসব গাড়ির সংরক্ষিত দাম ধরেছে ৭৫ লাখ ৯১ হাজার ৪৯১ টাকা। এছাড়া নিলামে তোলা হয়েছে–ক্যাপিটাল ইক্যুইপমেন্ট, থিনার, ফেব্রিক্স, ফিনিশিং এজেন্ট, অ্যালুমিনাস সিমেন্ট, এয়ার কন্ডিশনার পার্টস, পেট্রি ডিশ, চেস্ট ফ্রিজার বডি, সোয়েটার, রেফ্রিজারেটর পার্টস ও চিনগুড়া সুগন্ধি চাল।
চট্টগ্রাম কাস্টমসের বিডারররা বলছেন, কাস্টমসে অনেক পণ্যের নিলামে তোলা হয়, দেখা যায়–নিলামে অনুষ্ঠিত হওয়ার পরে অনুমোদনের খবর থাকে না। এতে বিডারদের পে অর্ডার আটকে থাকে। এছাড়া যথাসময়ে পণ্যের অনুমোদন না হওয়ায় বিডারদেরও ভোগান্তি হয়। তাই বিষয়টি কাস্টমস নিলাম শাখা সংশ্লিষ্টদের নজর দেয়া উচিত। জানতে চাইলে চট্টগ্রাম কাস্টমসে নিলাম শাখার সহকারী কমিশনার মো. সাকিব হোসেন দৈনিক আজাদীকে বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের কন্টেনার ইয়ার্ড খালি করার লক্ষ্যে আমরা নিয়মিত নিলামের আয়োজন করছি। এছাড়া বিশেষ করে যেসব পণ্য পচনশীল সেগুলো আমরা প্রকাশ্য নিলামে বিক্রির মাধ্যমে ইয়ার্ড খালি করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। সেই ধারাবাহিকতায় এখন আরো ৫৮ লট পণ্য নিলামে তোলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, আমদানিকৃত পণ্য জাহাজ থেকে বন্দর ইয়ার্ডে নামার ৩০ দিনের মধ্যে আমদানিকারককে সরবরাহ নিতে হয়। এই সময়ের মধ্যে কোনো আমদানিকারক পণ্য সরবরাহ না নিলে তাকে নোটিশ দেয় কাস্টমস। নোটিশ দেওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে এই পণ্য সরবরাহ না নিলে তা নিলামে তুলতে পারে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। এছাড়া মিথ্যা ঘোষণায় জব্দ পণ্যও নিলামে তোলা যায়। সর্বমোট ৪৫ দিনের মধ্যে নিলামে তোলার এই নিয়ম দীর্ঘদিন ধরে কার্যকর করতে পারেনি বন্দর ও কাস্টমস। এতে করে বন্দরের ইয়ার্ডে এসব কন্টেনার পড়ে থাকে। আমদানি পণ্য যথাসময়ে খালাস না নেয়ায় বন্দরগুলোতে প্রায়ই কন্টেনার জট লাগে। দিনের পর দিন কন্টেনার পড়ে থাকলেও বন্দর কর্তৃপক্ষও চার্জ পায় না।