নিলামে উঠল এস আলমের স্টিল মিল, বিদ্যুৎকেন্দ্র ও ভোজ্যতেল কারখানা

২ হাজার ১৭৯ কোটি টাকা খেলাপি ঋণ আদায়

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ২৮ এপ্রিল, ২০২৫ at ৬:১৩ পূর্বাহ্ণ

দুই হাজার কোটির বেশি টাকার খেলাপি ঋণ আদায়ের লক্ষ্যে এস আলমের স্টিল মিল, বিদ্যুৎকেন্দ্র ও ভোজ্যতেল কারখানাসহ ১ হাজার ১৪৯ শতাংশ জমি নিলামে উঠল। গতকাল রোববার পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে এ নিলাম ডেকেছে ইসলামী ব্যাংকের চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ কর্পোরেট শাখা। উক্ত তিন প্রকল্পে খাতুনগঞ্জ কর্পোরেট শাখার পাওনার পরিমাণ ২ হাজার ১৭৯ কোটি ৯৫ লাখ ২০ হাজার টাকা পাওনা রয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের খাতুনগঞ্জ কর্পোরেট শাখার গ্রাহক এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন এস আলম কোল্ড রোলড স্টিল লিমিটেড, এস আলম পাওয়ার জেনারেশন ও এস আলম ভেজিটেবল অয়েল। এর মধ্যে এস আলম কোল্ড রোলড স্টিল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ওসমান গনি, চেয়ারম্যান আবদুস সামাদ, পরিচালক মোহাম্মদ সাইফুল আলম (এস আলম) ও হালিমা বেগম, স্বতন্ত্র পরিচালক সম্পদ কুমার বসাক ও হাসান ইকবাল, এস আলম পাওয়ার জেনারেশনের এমডি মোহাম্মদ শহীদুল আলম, চেয়ারম্যান তৌহিদুল আলম, পরিচালক মোহাম্মদ আবদুল্লাহ হাছান ও এখলাসুর রহমান, এস আলম ভেজিটেবল অয়েলের এমডি মোহাম্মদ শহীদুল আলম ও চেয়ারম্যান ফারজানা পারভীনের নাম উল্লেখ করে এদের কাছে গত ২০ এপ্রিল পর্যন্ত ব্যাংক ২ হাজার ১৭৯ কোটি ৯৫ লাখ ২০ হাজার টাকা পাওনা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। এই পাওনা আদায় পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ ও অন্যান্য খরচ আদায়ের জন্য অর্থঋণ আদালত আইন ২০০৩এর ১২ () ধারা মোতাবেক বন্ধকী সম্পত্তি নিলামে বিক্রি করতে আগ্রহী ক্রেতাদের কাছ থেকে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে।

এর আগে ২০ এপ্রিল ৯ হাজার ৯৪৮ কোটি টাকা পাওনা আদায়ের জন্য এস আলম গ্রুপের চিনিকলসহ প্রায় ১১ একর সম্পত্তির নিলাম ডাকে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের খাতুনগঞ্জ কর্পোরেট শাখা।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে ইসলামী ব্যাংক দখল করে নেয় এস আলম গ্রুপ। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে ব্যাংকটির দখল নিয়েছিল এস আলম গ্রুপ। এরপর ব্যাংকটি থেকে নামেবেনামে এক লাখ কোটি টাকার বেশি তুলে নেয় গ্রুপটি। গত ৫ আগস্ট ছাত্রজনতার অভ্যুত্থানে সরকার পতনের পর এস আলম ব্যাংকটির নিয়ন্ত্রণ হারালে সবকিছু প্রকাশ হয়। ইতোমধ্যে ব্যাংকটি থেকে নামেবেনামে নেওয়া কোটি কোটি টাকার ঋণ খেলাপিতে পরিণত হয়। এসব খেলাপি ঋণ উদ্ধারে ব্যাংকের পক্ষ থেকে আইনি প্রক্রিয়া শেষে নিলাম ডাকা হয় বলে ব্যাংক সূত্র জানিয়েছে।

২০১৭ সালের ওই সময়ে ইসলামী ব্যাংক ছাড়াও এস আলম গ্রুপ সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক ও ন্যাশনাল ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, আলআরাফাহ্‌ ইসলামী ব্যাংক ও বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক নিজেদের দখলে নেয়। এসব ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ও ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন এনে নামেবেনামে প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা তুলে নেয় গ্রুপটি। সব মিলিয়ে এস আলম গ্রুপের হাতিয়ে নেওয়া টাকার পরিমাণ ২ লাখ কোটি টাকার বেশি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএস আলমের ১ হাজার ১৪ বিঘা জমি জব্দের আদেশ
পরবর্তী নিবন্ধচসিক ও সিডিএর দায় যাচাই, খালের রেলিংয়ে দৈর্ঘ্যের অমিল পেল দুদক