নির্বাচিত সরকারের বিকল্প আপনারা না : সালাহ উদ্দিন

| সোমবার , ১৪ এপ্রিল, ২০২৫ at ৬:০৮ পূর্বাহ্ণ

অনির্বাচিত সরকার কখনও নির্বাচিত সরকারের বিকল্প হতে পারে না মন্তব্য করে বিএনপি নেতা সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, এ কথা প্রতিদিনই বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে স্মরণ করিয়ে দেবেন তিনি। গতকাল রোববার বিকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য এ মন্তব্য করেন।

নির্বাচনের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার ‘কখনও ডিসেম্বর, কখনও জুন’ এর বক্তব্য ‘জনগণ ও আন্তর্জাতিক মহল’ ভালোভাবে দেখছে না বলেও দাবি করেন তিনি। সালাহ উদ্দিন বলেন, যখনই আমরা ডিসেম্বরের মধ্যে প্রধান উপদেষ্টা প্রতিশ্রুত নির্বাচনি রোডম্যাপের জন্য দাবি তুলি তখনই বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন উপদেষ্টাকে বক্তৃতা দিতে শোনা যায় যে, জনগণ নাকি তাদেরকে পাঁচ বছরের জন্য চায়। এটি বলেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা কয়েকদিন আগে। এরপর কাল (শনিবার) আমাদের ফরিদা আপা একজন উপদেষ্টা আমার সাথে খুবই ভালো সম্পর্ক। আমি যেজন্য তার সমালোচনা কম করতে চাই। তিনি বললেনউনারা নাকি নির্বাচিত হয়েছে। কীভাবে গণ অভ্যুত্থানের মাধ্যমে উনাদেরকে নির্বাচিত করেছে জনগণ। তাহলে এদেশে ইলেকশন কমিশন আছে কেন? রাস্তায় অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে সরকার পরিবর্তন হয় সেটা অবশ্যই এদেশের মানুষের জনমত। কিন্তু এদেশের নির্বাচিত সরকারের বিকল্প তো আপনারা (অন্তবর্তীকালীন সরকার) হতে পারেন না, আপনারা অবশ্যই অনির্বাচিত। সেটা প্রতিদিনই আপনাদের স্মরণ করিয়ে দেওয়া হবে। খবর বিডিনিউজের।

দ্রুত নির্বাচনের দাবির কথা আবারও তুলে ধরে সালাহ উদ্দিন বলেন, আমরা বলতে চাই, আমরা যত তাড়াতাড়ি আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরে পেতে চাই, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এদেশে ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করতে চাই, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সাংবিধানিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে চাই। আমাদের সংবিধান সেটা আক্রান্ত হয়েছে সেই সংবিধানকে যথাযথ সংস্কারের মধ্য দিয়ে, অধিকতর সংস্কারের মধ্য দিয়ে, সংশোধনের মধ্য দিয়ে, রাষ্ট্র কাঠামো সংশোধনের মধ্য দিয়ে একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক সংবিধান আমরা পেতে চাই।

সালাহ উদ্দিন বলেন, আমাদের ভাই ফরহাদ মজহার সাহেব গত ২/৩ দিন আগে বক্তৃতা দিয়েছেন নির্বাচনের মাধ্যমে নাকি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হয় না, কেবল ভোটারদের একটা সামাজ্য প্রতিষ্ঠা হয়। কী আর বলব? যে নির্বাচনের জন্য, যে ভোটাধিকারের জন্য, যে গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরে পাবার জন্য, যে সাংবিধানিক অধিকার ফিরে পাবার জন্য দেশের হাজার মানুষ শহীদ হলেন, গণঅভ্যুত্থান হলে, ফ্যাসিবাদের পতন হলসেই নির্বাচন সেই ভোটাধিকারকে আপনারা অস্বীকার করছেন। কাদেরকে আপনারা উৎসাহিত করছেন?

তিনি বলেন, আমাদের সাথে আপনারা (প্রধান উপদেষ্টা) কথা দিয়েছিলেন আপনাদের সমস্ত কর্মকাণ্ড পরিচালিত হচ্ছে ডিসেম্বরকে সামনে রেখে নির্বাচনের উদ্দেশ্যে। আমরা নির্বাচন কমিশনের সাথে বসেছি, কথা বলেছি। তাদের সমস্ত নির্বাচনি প্রস্তুতি আগামী জুন মাসের ভেতরে সমাপ্ত হবে। তারা জুনের পরে নির্বাচন দেওয়ার জন্য উদগ্রিব। এখন সেই কথা যদি আমরা বলি, তাহলে গণতন্ত্রের পক্ষের জানি না কেন এদেশের সবাই এর সমর্থনে কথা বলতে উচ্চকিত হচ্ছেন না। আমাদের অনেক ধরনের অভিজ্ঞতা আছে। কিন্তু যারা ওয়ান ইলেভেন করেছেন তারাও অনেক রকমের কথা বলে বাংলাদেশের শাসন ক্ষমতায় দুই বছর পর্যন্ত ছিলেন।

সালাহ উদ্দিন বলেন, সেই ওয়ান ইলেভেনে মঈনফখরুদ্দিনের কথা (তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল মইন ইউ আহমেদ ও প্রধান উপদেষ্টা ফখরুদ্দিন আহমেদ) কথা আপনাদের মনে নেই? আমি বলতে চাই না সেই রকম কোনো পদক্ষেপ বর্তমানে দৃশ্যমান হচ্ছে। কিন্তু আমরা ঘরপোড়া গরু সিঁদুরে মেঘ দেখলেই ভয় পাই। বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য, সাংবিধানিক অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য, বৈষম্যহীন রাষ্ট্র এবং সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য তীব্র আকাঙ্খা থেকেই এক দফা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এদেশে গণতান্ত্রিক গণঅভ্যুত্থান, ছাত্ররা গণঅভ্যুত্থান সৃষ্টি করেছিল। কেউ যদি এটাকে বিপ্লব বলতে চায় তাহলে আমি দুঃখ প্রকাশ করব। এটা একটা সামাজিক বিপ্লব নয়। অর্থনৈতিকসামাজিক ব্যবস্থা পরিবর্তনের কোনো বিপ্লব হয়নি। গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষা থেকে গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরে পাবার জন্য ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে একটি গণতান্ত্রিক ছাত্র গণঅভ্যুত্থান সংগঠিত হয়েছিল।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকক্সবাজারে মৌসুম শেষ হচ্ছে এক মাস আগে
পরবর্তী নিবন্ধচুনতি অভয়ারণ্যে ফিরল দেয়াঙ পাহাড়ের হাতির পাল