নির্বাচিত রাজনৈতিক সরকার ছাড়া দেশে স্থিতিশীলতা আসবে না বলে দাবি করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান। তিনি বলেন, নির্বাচিত সরকারের জনগণের কাছে জবাবদিহিতা রয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার সংস্কার কার্যক্রম শুরু করেছে। তবে এই কার্যক্রম হতে হবে দ্রুত গতিতে। অতি দ্রুত সংস্কার কাজ শেষ করে নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করতে হবে।
বিজয় দিবস উপলক্ষে গতকাল মঙ্গলবার বিকালে চট্টগ্রাম–১০ নির্বাচনী এলাকার বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনসমূহের উদ্যোগে হালিশহর নয়াবাজার বিশ্বরোড মোড়ে সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এ কথা বলেন। এতে প্রধান বক্তা ছিলেন সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। সমাবেশ শেষে বর্ণাঢ্য বিজয় র্যালি হালিশহর নয়াবাজার মোড় থেকে শুরু হয়ে বড়পুল মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, আগস্ট বিপ্লবে দেশ ছেড়ে পালিয়ে গিয়ে ভারতে নির্বাসিত কর্তৃত্ববাদী স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের দেশ ও দেশের সার্বভৌমত্ব বিরোধী যে কোনো চক্রান্ত দেশের জনগণ এবং বিএনপি রাজনৈতিকভাবে প্রতিহত করবে।
তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধ ও ৩০ লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা কোনো দলের একক কৃতিত্ব নয়। ১৯৭১ সালের ২৬ শে মার্চ শহীদ জিয়া স্বাধীনতার ঘোষণা না দিলে আমাদের স্বাধীনতা অর্জন অনেক বিলম্বিত হতো। সেদিন শেখ মুজিবুর রহমান এবং আওয়ামী লীগের নেতৃত্বশূন্যতা ও সিদ্ধান্তহীনতার কারণেই মেজর জিয়াকে স্বাধীনতার ঘোষণা দিতে হয়েছিল। তিনি বলেন, শহীদ জিয়া শুধু স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে ক্ষান্ত হননি, তিনি মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছেন, জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করেছেন।
এ বীর মুক্তিযোদ্ধা বলেন, স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান হচ্ছেন একজন শ্রেষ্ঠ মুক্তিযোদ্ধা আর মুক্তিযোদ্ধারা হলেন জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। শহীদ জিয়া প্রতিষ্ঠিত বিএনপি হচ্ছে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুক্তিযোদ্ধার দল। তিনি বলেন, শহীদ জিয়া স্বাধীনতার ঘোষক হওয়া সত্ত্বেও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলে কোনো রাজনৈতিক সুবিধা গ্রহণ করেননি। আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে বিকৃত করেছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলে এবং মুক্তিযুদ্ধের কৃতিত্বের মিথ্যা দাবি করে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের মাধ্যমে দুর্নীতি ও লুটপাট করেছে।
নোমান বলেন, একটি মহল ৩০ লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধকে নিয়ে নতুন করে অপপ্রচার চালাচ্ছে এবং ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। এই ষড়যন্ত্র আমরা বীর মুক্তিযোদ্ধারা রুখে দেব। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে যদি আমরা এগিয়ে যাই, তাহলে কোনো অপশক্তি আমাদের দমিয়ে রাখতে পারবে না।
ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, অতীতে আওয়ামী লীগ মনোনীত বিনা ভোটের মেয়র যারা ছিলেন, তারা সিটি কর্পোরেশনকে দুর্নীতি ও লুটপাটের মাধ্যমে তলাবিহীন ঝুড়িতে পরিণত করেছেন। সিটি কর্পোরেশনের মালিকানাধীন মার্কেট, দোকান ও বাণিজ্যিক স্পেসগুলো দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ নেতাদের কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন।
হালিশহর থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি মোশারফ হোসেন ডিপ্টির সভাপতিত্বে এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির শ্রম বিষয়ক সম্পাদক এ এম নাজিম উদ্দীন, মহানগর বিএনপির সাবেক সহসভাপতি শামসুল আলম, মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আহমেদুল আলম চৌধুরী রাসেল, তরুণ বিএনপি নেতা সাঈদ আল নোমান, কেন্দ্রীয় শ্রমিক দলের যুগ্ম সম্পাদক শেখ নুরুল্লাহ বাহার, পাহাড়তলী থানা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জসীম উদ্দিন জিয়া, হালিশহর থানা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, মহানগর মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক জেলী চৌধুরী প্রমুখ।