নির্বাচন যেন পিছিয়ে যায়, কোনো কোনো দল সেই চেষ্টা করছে : ফখরুল

| শুক্রবার , ২৪ অক্টোবর, ২০২৫ at ৬:০৫ পূর্বাহ্ণ

জাতীয় নির্বাচন যেন পিছিয়ে যায়, সঠিক সময়ে না হয়, কোনো কোনো রাজনৈতিক দল সেই চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকায় এক আলোচনা সভায় তিনি এ নিয়ে হতাশা প্রকাশ করে বলেন, এটা ঠিক হচ্ছে না। মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের যে অন্তর্বর্তী সরকার, আমরা তাকে সহযোগিতা দিয়ে, সহযোগিতা করে আমরা একটা জায়গায় আসার চেষ্টা করছি যে, একটা নির্বাচন যেন করা যায়। আমি কোনো দলকে দোষারোপ করতে চাই নাকোনো ব্যক্তিগত দোষারোপ করতে চাই না। কিন্তু হতাশার সঙ্গে লক্ষ্য করি যে, কোন কোন রাজনৈতিক দল নির্বাচন যেন পিছিয়ে যায়, নির্বাচন যেন সঠিক সময় না হয়, তার চেষ্টা করছে। এটা ঠিক হচ্ছে না। খবর বিডিনিউজের।

এখন দ্রুত একটা রাজনৈতিক সরকার দরকার বলে মন্তব্য করেন বিএনপি মহাসচিব। এর ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, দেশের অর্থনীতি, দেশের রাজনীতি, শিক্ষা, সবকিছু নির্ভর করছে আগামীতে একটি নির্বাচিত সরকারের ওপর। অল্প সময়ের মধ্যে সংস্কারের উদ্যোগগুলো নিয়ে কাজ শেষ করতে পারায় মির্জা ফখরুল জাতীয় ঐকমত্য কমিশনকে ধন্যবাদ দেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের নেতা তারেক রহমান সাহেব তিনি ২০২২ সালে যে ৩১ দফা দিয়েছিলেন, তারই ধারাবাহিকতায় কিন্তু আমরা এই সংস্কারগুলো দিয়েছি। ম্যাডাম (বেগম খালেদা জিয়া) দিয়েছিলেন ২০১৬ সালে ভিশন২০৩০ আর আমাদের নেতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান দিয়েছিলেন ১৯ দফা কর্মসূচি। সব কিছু মিলিয়ে এসব সংস্কার। বিএনপির জন্ম সংস্কারের মধ্যে, এ কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, সংস্কার দিয়েই একদলীয় শাসন ব্যবস্থা থেকে বহুদলীয় শাসন ব্যবস্থায় প্রেসিডেন্ট জিয়া নিয়ে এসেছিলেন, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ফ্রিডম অব প্রেস প্রেসিডেন্ট জিয়া দিয়েছিলেন, জনগণের মৌলিক স্বাধীনতার অধিকারগুলোর স্বাধীনতা প্রেসিডেন্ট জিয়া দিয়েছিলেন।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার হাত ধরে সংসদীয় সরকার ব্যবস্থা চালু, বিনাবেতনে মেয়েদের দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখার ব্যবস্থা, মহিলা অধিদপ্তর করাএসব বিষয় তুলে ধরেন দলের মহাসচিব।

বিএনপিকে খলনায়ক হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টায় বিস্মিত হওয়ার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, আমি দৃঢ়তার সাথে বলতে চাই, বাংলাদেশে যা কিছু ভালো হয়েছে সব বিএনপির হাত দিয়ে হয়েছে, জনগণ হাতে হয়েছে এবং দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার হাত দিয়ে হয়েছে।

আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের নাম মুছে ফেলার চেষ্টা করেছিল, এমন অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, জিয়ার মাজার পর্যন্ত তুলে নিয়ে যাবে, তার নাম গন্ধ থাকবে নাতাই করেছিল না? পারে নাই। কারণ সত্যিকার অর্থেই জিয়াউর রহমান ক্ষণজন্মা, আল্লাহ যাকে পাঠিয়েছেন মানুষের কল্যাণের জন্য, তাকে কি এত সহজেই ছুড়ে ফেলা যায়? যায় না। জিয়াউর রহমানকে ইতিহাস ধারণ করেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

আলোচনা সভায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে প্রশংসা করেন দলের বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, তারেক রহমান নেতৃত্ব দিয়ে নতুন করে বাংলাদেশকে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে রূপান্তরের কাজ করছেন। তিনি জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়ার সেই একই ধারার নেতা। এ সময় মির্জা ফখরুল চীন সফরে খালেদা জিয়ার সফরসঙ্গী তারেক রহমান সম্পর্কে দেশটির প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ প্রসঙ্গ টানেন। তিনি বলেন, ম্যাডাম যখন চীনের প্রধানমন্ত্রীকে আমাদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছিলেনযখন তারেক রহমানের সামনে এসে বললেন, হি ইজ মাই সান। তখন চীনের প্রধানমন্ত্রী তার (তারেক রহমানের) হাতটা শক্ত করে ধরে ঝাঁকিয়ে বললেন, ‘ক্যারি অব দি ফ্ল্যাগ, স্ট্যান্ড ফাদার অ্যান্ড মাদারআজকে তারেক রহমান সাহেব সেই পতাকা তুলে ধরেছেন, যে পতাকা হচ্ছে স্বাধীনতার পতাকা, যে পতাকা হচ্ছে এই দেশের মানুষের অধিকারের পতাকা, গণতন্ত্রের পতাকা, উন্নয়নের পতাকা।

কাকরাইলের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের মুক্তিযোদ্ধা মিলনায়তনে বিএনপির উপপ্রকাশনা কমিটির প্রকাশিত ‘মহাকালের মহানায়ক শহীদ জিয়াউর রহমান’ শীর্ষক গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন উপলক্ষে এই আলোচনা সভা হয়। ৬৪০ পৃষ্ঠার এই গ্রন্থটি সম্পাদনা করেছেন মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালাম ও আবদুল হাই শিকদার। আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ও প্রকাশনা উপকমিটির আহ্বায়ক আবদুস সালাম।

পূর্ববর্তী নিবন্ধহাসিনার মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে যা প্রমাণ করেছি সেটা সন্দেহাতীত : অ্যাটর্নি জেনারেল
পরবর্তী নিবন্ধ৭৮৬