দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের গতকাল তফসিল ঘোষণার পর থেকে নির্বাচনী কাজে আরো সরগরম হয়ে উঠেছে চট্টগ্রাম আঞ্চলিক ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়। সংসদীয় আসন অনুযায়ী প্রার্থীদের মনোনয়ন ফরমের সাথে ভোট কেন্দ্র অনুযায়ী ভোটারের সিডি দেয়া, ভোটার লিস্ট দেয়া, ভোট গ্রহণ কর্মকর্তাদের তালিকা তৈরির কাজসহ যাবতীয় কাজ নিয়ে চট্টগ্রাম আঞ্চলিক ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে গতকাল গিয়ে দেখা গেছে, কর্মকর্তাদের সীমাহীন ব্যস্ততা। সকালে চট্টগ্রাম আঞ্চলিক ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা বিভাগীয় কমিশনার এবং জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে নির্বাচন সংক্রান্ত কার্যক্রম নিয়ে বৈঠক করেছেন। যদিও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশন থেকে সারাদেশের রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে জেলা প্রশাসকদের। শুধুমাত্র ঢাকা এবং চট্টগ্রাম মহানগরের জন্য বিভাগীয় কমিশনারকে রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম মহানগরী ও এর সংশ্লিষ্ট ৬ সংসদীয় আসনের রিটার্নিং কর্মকর্তা চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার। এই আসনগুলো হল– মহানগরীর কোতোয়ালী সংসদীয় আসন, ডবলমুরিং সংসদীয় আসন, বন্দর–পতেঙ্গা সংসদীয় আসন, চট্টগ্রাম–৪ আসনের (সীতাকুণ্ড উপজেলা ও চসিকের ৯ ও ১০ নম্বর ওয়ার্ড) ১২৪টি ভোটকেন্দ্র ও ৯৩৯টি ভোটকক্ষ, চট্টগ্রাম–৫ আসন (হাটহাজারী উপজেলা ও চসিকের ১ ও ২ নম্বর ওয়ার্ড), চট্টগ্রাম–৮ আসন (বোয়ালখালী উপজেলা, শ্রীপুর–খরনদ্বীপ ইউনিয়ন ব্যতীত) এবং চসিকের ৩, ৪, ৫, ৬, ৭ নম্বর ওয়ার্ড।
অপর দিকে চট্টগ্রাম জেলার অপর ১০টি সংদীয় আসনের রিটার্নিং কর্মকর্তা চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক। এই ১০টি সংসদীয় আসন হল– পটিয়া, আনোয়ারা, চন্দনাইশ–সাতকানিয়ার একাংশ, লোহাগাড়া–সাতকনিয়ার একাংশ, বাঁশখালী, আনোয়ারা–কর্ণফুলী, মীরসরাই, সন্দ্বীপ, হাটহাজারী, রাউজান, রাঙ্গুনিয়া এবং ফটিকছড়ি সংসদীয় আসন।
এই ব্যাপারে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ড. আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান আজাদীকে জানান, নির্বাচন কমিশন থেকে কাগজপত্র পাওয়ার পর নির্বাচন সংক্রান্ত গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে এবং মনোনয়ন ফরম বিক্রির ব্যাপারেও জানানো হবে। তবে আমাদের সব প্রস্তুতি নেয়া আছে।
চট্টগ্রামের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. ইউনুচ আলী আজাদীকে বলেন, নির্বাচনকে ঘিরে আমাদের সকল প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। তফসিল ঘোষণার পর পরবর্তী কার্যক্রমগুলোও শুরু হয়ে গেছে। নির্বাচন সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আজকে (গতকাল বুধবার) বিভাগীয় কমিশনার এবং জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে মিটিং ছিল। আজকে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জেলা প্রশাসককে রিটার্নিং কর্মকর্তা এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গতকাল প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল তফসিল ঘোষণার পর এমন তথ্য জানান ইসি সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রিটার্নিং অফিসারের বিষয়ে ইতোমধ্যে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ঘোষণা করেছেন যে ৬৬ জন রিটার্নিং অফিসার থাকবেন। ঢাকা এবং চট্টগ্রাম মহানগরের জন্য বিভাগীয় কমিশনার এবং এছাড়া ৬৪ জেলার জন্য ৬৪ জন জেলা প্রশাসক রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করবেন। ৪৯৫ জন উপজেলা নির্বাহী অফিসার সহকারী রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়া মহানগর এলাকা, ক্যান্টনমেন্ট এলাকা এবং যেসব এলাকার উপজেলাগুলো একাধিক আসনে বিভক্ত সেসব আসনে ভিন্ন ভিন্ন কর্মকর্তারা সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করবেন।
ইসি সচিব বলেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ৪৯৫ জন, থানা নির্বাচন অফিসার ৫৬ জন, উপ–পরিচালক স্থানীয় সরকার (ডিডিএলজি) ১৪ জন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ৮ জন, জোনাল এঙিকিউটিভ অফিসার সিটি কর্পোরেশন ১১ জন, ক্যান্টনমেন্ট এঙিকিউটিভ অফিসার ৫ জন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) ২ জন এবং সার্কেল অফিসার (উন্নয়ন) একজন সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করবেন।












