নির্বাচনের আগে যুক্তরাষ্ট্রে সংলাপ হয়? প্রশ্ন মোমেনের

‘আমরা চীনের লেজুড় নই’

| রবিবার , ৯ জুলাই, ২০২৩ at ৫:৪৯ পূর্বাহ্ণ

নির্বাচনের আগে যুক্তরাষ্ট্রে সংলাপ হয় কিনা প্রশ্ন করেছে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। গতকাল শনিবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ (ডিকাব) আয়োজিত ‘ডিকাব টক’ অনুষ্ঠানে তিনি এ প্রশ্ন করেন। অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের নানা প্রশ্নের উত্তর দেন ড. মোমেন। এ সময় জাতিসংঘের প্রস্তাব নিয়েও তিনি কথা বলেন। মোমেনের ভাষ্য, নির্বাচন নিয়ে জাতিসংঘ ভালো কোনো পরামর্শ দিলে স্বাগত জানাই। তাদের প্রস্তাব বিবেচনা করা হবে। প্রস্তাব নিয়ে আলোচনাও হতে পারে। তিনি বলেন, নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হতে পারে। তবে আমরা কোনো সন্ত্রাসীর সাথে কথা বলবো না। আর তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতায় সংলাপে কোনো ভালো অর্জন হয়েছে কিনা আমার জানা নেই। খবর বাংলানিউজের।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জাতীয় নির্বাচন অনেকেই বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করছেন। কেউ কেউ বলছেন, তারা ইলেকশন করতে দেবে না। আপনারা জানেন, কারা নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করতে চায়। নির্বাচনে বিদেশি পর্যবেক্ষকরা আমেরিকা, ভারতে যায় না। তবে আমরা বিদেশিদের বেশি বেশি পাত্তা দেই। নির্বাচনে বিদেশি পর্যবেক্ষক এলে ভালো, তবে না এলেও সমস্যা নেই। ভবিষ্যতেও এটা নিয়ে আমাদের চিন্তা করা দরকার। এ সময় নির্বাচনী সংলাপ প্রসঙ্গে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করে পাল্টা প্রশ্ন করেন ড. আব্দুল মোমেন। তিনি বলেন, নির্বাচনের আগে আমেরিকায় কেউ সংলাপ করে? যুক্তরাষ্ট্রে কেউ পদত্যাগ করে? যুক্তরাজ্যে কেউ করে? আমেরিকায় নির্বাচনে ২৫/৩০ শতাংশ লোক ভোট দেয়। সে তুলনায় আমাদের এখানে অনেক লোক ভোট দেয়। তিনি বলেন, আমরা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। আশা করি আগামীতে মডেল ইলেকশন হবে। তবে আমাদের দেশে সন্ত্রাসী দল থাকতে পারে। সন্ত্রাসী দল ইলেকশনে না এলে কোনো সমস্যা নেই। বিদেশি প্রতিনিধি দলের আসন্ন ঢাকা সফর নিয়ে ড. মোমেন বলেন, দেশে বিদেশি কেউ এলে স্বাগত। তবে অতি সন্ন্যাসীতে গাজন নষ্ট। আমাদের ইলেকশন প্রসেস কেউ যেন ধ্বংস না করে, সেটা দেখতে হবে। আমরা নিজেদের তাগিদেই সুষ্ঠু নির্বাচন করতে চাই। আমার ভোট আমি দেব যাকে খুশি দেবআমরা এই নীতিতেই বিশ্বাসী।

আমরা চীনের ‘লেজুড়’ নই : এদিকে বাসস জানায়, ডিক্যাব সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ কোনো দেশের লেজুড় নয় এবং চীনের দিকে কখনো ঝুঁকেও পড়েনি, কারণ, ঢাকা একটি ‘ভারসাম্যপূর্ণ ও স্বাধীন’ পররাষ্ট্রনীতি বজায় রেখে চলে। তিনি বলেন, আমরা কারো লেজুড় নই …. আমরা চীনেরও লেজুড় নই। কিছু লোক মনে করে আমরা চীনের দিকে ঝুঁক্‌িছ, কিন্তু (আসলে) আমরা কারও দিকে ঝুঁকছি না।

তিনি বেইজিংকে উন্নয়ন অংশীদার বলে অভিহিত করেন, তবে, ‘চীনা ঋণের ফাঁদে’ পড়ার কোনও ধরনের আশংকা নাকচ করে দিয়ে বলেন, এটি একটি ভুল ধারণা। কোনো কোনো পণ্ডিত এমন কথা বলেন। অনেকে এটা বিশ্বাস করে, বিশেষ করে কিছু বিদেশি প্রতিষ্ঠান। কোনো অবস্থাতেই আমরা ‘চীনা ঋণের ফাঁদে’ পড়ব না। বিদেশী ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে আমরা খুবই বিচক্ষণ ও সতর্ক। আমরা অপ্রয়োজনীয় ঋণ নেই না।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিকট প্রতিবেশী ভারতের সঙ্গে ঢাকার সম্পর্ককে ‘সুদৃঢ়’ এবং ‘আমরা ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি সোনালী অধ্যায়ে রয়েছি’ বলে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, ঢাকাওয়াশিংটন সম্পর্কও ভালো এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের মতে, ওয়াশিংটন বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন করতে চায়। মোমেন বলেন, ঢাকা সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও কাতারসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখছে। সব দেশের সঙ্গে আমাদের ভালো সম্পর্ক রয়েছে। সেজন্য জাতিসংঘে যে কোনো নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলে আমরা জয়ী হই।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচিরন্তন চট্টগ্রামকে তুলে ধরবে ঐতিহ্য কর্নার
পরবর্তী নিবন্ধকোরবানির ঈদের ছুটিতে সড়কে নিহত ২৯৯