নির্ধারিত সময়ের আগে ৪শ ৭৪ কোটি ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ে আলীকদম–জালানীপাড়া–কুরুকপাতা–পোয়ামুহুরী সড়কের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ৩৫ কোটি টাকা কম খরচ করে নির্ধারিত সময়ের আগে প্রকল্পের কাজ শেষ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কোর অব ইঞ্জিনিয়ার্সের ৩৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেডের অধিনস্থ ১৬ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্যাটালিয়ান সড়কটি নির্মাণ করে। সড়কটি নির্মাণের ফলে আলীকদমের দুর্গম কুরুকপাড়া ও পোয়ামুহুরী এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের পাশাপাশি পর্যটন শিল্পের বিকাশ, এলাকার
আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নয়ন, কৃষি পণ্যের বিপণন, স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষা লাভের পথ সহজীকরণসহ দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সহজ হবে। গতকাল সোমবার সকালে সড়কের কুরুকপাতা ভিউ পয়েন্টে আলীকদম– জালানীপাড়া–কুরুকপাতা পোয়ামুহুরী সড়কের নির্মাণ প্রকল্পের প্রকল্প কর্মকর্তা
মেজর মো. ইশরাকুল হক সাংবাদিকদের জানান, বান্দরবানের অপরূপ সৌন্দর্য দেশি–বিদেশি পর্যটকদের ব্যাপকভাবে আকৃষ্ট করলেও আলীকদমের যোগাযোগ ব্যবস্থা ছিল অতি দুর্বল। এ কারণে এ অঞ্চলে মানুষ স্বাস্থ্য সেবা ও শিক্ষা লাভের মতো বিভিন্ন মৌলিক সুবিধা প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছিল। এছাড়া বর্ষাকালে উপজেলা সদরের সাথে যোগাযোগ করতে দু’একদিন সময় লেগে যেতো।
এমন পরিস্থিতিতে এলাকার আর্থসামজিক অবস্থার উন্নয়ন ও দুর্গম অঞ্চলে আইন শৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে এবং নিরাপত্তা অপারেশন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য সড়কটি নির্মাণ জরুরি হয়ে পড়েছিল। এরই প্রেক্ষিতে বান্দরবান অঞ্চলে একটি নিরাপদ টেকসই, ব্যয় সাশ্রয়ী রোড নেটওয়ার্ক গড়ে তুলতে গত ২০১৭
সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি আলীকদম–জালানীপাড়া–কুরুকপাতা পোয়ামুহুরী সড়ক প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদিত হয়। প্রকল্পটির জন্য বরাদ্দকৃত ৫০৯ কোটি ২৯ লক্ষ টাকার মধ্যে প্রায় ৩৫ কোটি টাকা কম খরচ করে ৪৭৪ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে নির্ধারীত সময়ের পূর্বেই গত ২০২২ সালের ৬ জুন সড়কের সকল কাজ গুণগত মান অক্ষুন্ন রেখে সম্পন্ন করা হয়েছে।
৩০ জুন, ২০২২ ছিল সড়কটির কাজ সম্পন্নের নির্ধারিত সময়সীমা। ৪৭৪ কোটি ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত সড়কটিতে রয়েছে ৩৭.৫ কিলোমিটার কার্পেটিং রাস্তা। রয়েছে ১০ টি ব্রিজ, ১১ টি কালভার্ট এবং ৪ টি ভিউ পয়েন্ট। এছাড়া সড়কে ক্রস ড্রেন, সাইট ড্রেন, রিটেইনিং ওয়াল, আর্থ ওয়াটার ড্যাম ও রোড সাইন
নির্মাণ করা হয়েছে। আলীকদম–জালানীপাড়া–কুরুকপাতা–পোয়ামুহুরী সড়ক নির্মাণ প্রকল্পে নিযুক্ত ছিলেন ৩৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাসুদুর রহমান, প্রকল্প পরিচালক হিসেবে ছিলেন লে. কর্নেল মো. মুনতাসির মামুন।
কুরুকপাতা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ক্রাতপুং ম্রো বলেন– সড়কটি নির্মাণের আগে এ অঞ্চলের কৃষকরা তাদের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য মূল্য পেতো না। এখন তারা তাদের উৎপাদিত পণ্যের ন্যয্য মূল্য পাচ্ছে। আগে আলীকদম উপজেলা সদরে পৌঁছতে সারাদিন লেগে যেত। এখন ২০ থেকে ৩০ মিনিটের মধ্যে আলীকদম পৌঁছা যায়।












