নির্ধারিত সময়ে এমপি হাজির, পাওয়া গেল না চিকিৎসক-নার্সদের

বাঁশখালী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

| বুধবার , ১৭ জানুয়ারি, ২০২৪ at ৬:২৬ পূর্বাহ্ণ

বাঁশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সকালে অফিস শুরুর নির্ধারিত সময়ে হাজির হন নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য (এমপি) মুজিবুর রহমান। সঠিক সময়ে এমপি হাজির হলেও জরুরি বিভাগ বাদে অন্য বিভাগের চিকিৎসকদের পাওয়া যায়নি নির্ধারিত দপ্তরে। গতকাল মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টায় নির্ধারিত সময়ে বাঁশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ঝটিকা পরিদর্শনে গিয়ে সরকারি হাসপাতালের এমন অব্যবস্থাপনা দেখে অসন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি।

নির্বাচিত হয়ে শপথ গ্রহণের পর প্রথমবারের মতো বাঁশখালী যান মুজিবুর রহমান। সকাল সাড়ে ৮টায় তিনি যখন হাসপাতাল পরিদর্শনে যান তখন শুধু জরুরি বিভাগে দায়িত্বপ্রাপ্ত একজন চিকিৎসক উপস্থিত ছিলেন। নির্ধারিত সময়ে হাজির ছিলেন না উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা, আবাসিক মেডিকেল অফিসার এবং নার্সরাও। তবে সংসদ সদস্যের উপস্থিতির প্রায় ২০ মিনিট পর হন্তদন্ত হয়ে হাজির হন হাসপাতালটির প্রধান এবং উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শফিউর রহমান মজুমদার। তারপর সকাল ৯টার পর হাসপাতালে পদায়িত অন্য চিকিৎসকরাও আসেন। মঙ্গলবার রুটিন অনুযায়ী সকালে ১২ জন চিকিৎসক হাজির থাকার কথা। যথাসময়ে যারা উপস্থিত হননি তাদের তালিকা তিনি লিখিতভাবে গ্রহণ করেন। হাসপাতাল প্রধান ডা. শফিকুর রহমান মজুমদার প্রথমবারের মত বিষয়টি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার জন্য অনুরোধ করেন এমপির কাছে।

এ সময় সংসদ সদস্য মুজিবুর রহমান হাসপাতালের ওয়ার্ডগুলো ঘুরে দেখেন। তিনি হাসপাতালের অপরিচ্ছন্ন টয়লেট, বেড ও বেডশিট পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার নির্দেশনা দেন। এ সময় হাসপাতালে সেবা নিতে আসা কয়েকজন রোগী নতুন এমপিকে সামনে পেয়ে সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা নিয়ে নিজেদের অভিযোগ তুলে ধরেন। সংসদ সদস্য মুজিবুর রহমান রোগীদের অভিযোগ শোনেন এবং রোগীরা যাতে পর্যাপ্ত সেবা পান, সে বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়ে আশ্বস্ত করেন। তিনি বলেন, এলাকার জনগণের স্বাস্থ্য সেবার মান বাড়ানোর অঙ্গীকার করেছি, এছাড়া শিক্ষা ও যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ উন্নয়নের যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছি তা ধারাবাহিকভাবে পূরণে কাজ করে যাব।

এরপর এমপি সকাল ১০টায় বাঁশখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। কিছুক্ষণ পর বাঁশখালী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় পরিদর্শনে গেলে শিক্ষার্থীদের মাঠে অবস্থান, সময় পেরিয়ে গেলেও হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর না করাসহ নানা অনিয়ম নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এ সময় শিক্ষকরা আপ্যায়ন করতে চাইলে এমপি বলেন, শিক্ষার মান উন্নয়ন এবং সকল নিয়মনীতি মেনে চললে তিনি এসে অবশ্যই নাস্তা খেয়ে যাবেন এবং সবাইকে পুরস্কৃত করবেন।

পরে তিনি বাঁশখালী পৌরসভার সৈয়দ বাহার উল্লাহ পাড়ায় অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন এবং বাড়ি ও দোকান মালিকদের সঙ্গে দেখা করে প্রতি পরিবারকে ১০ হাজার টাকা করে আর্থিক অনুদান প্রদান করেন। ১২টার সময় তিনি খানখানাবাদের ২০ নম্বর পূর্ব রায়ছটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যান। সেখানে শুভেচ্ছা বিনিময় শেষে তিনি রায়ছটা প্রেমাশিয়া উচ্চ বিদ্যালয় পরিদর্শন করে খানখানবাদ ও প্রেমাশিয়া কদমরসুল এলাকার জনগণের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করে দুপুরে পুনরায় চট্টগ্রাম ফিরে আসেন।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও বিদ্যালয় পরিদর্শনকালে তিনি বলেন, আমি স্বাস্থ্য সেবা ও শিক্ষায় পিছিয়ে পড়া বাঁশখালীকে অগ্রসর করতে কাজ করতে চাই। তার জন্য সকলে আমাকে সহযোগিতা করবেন এবং সৎ পরামর্শ দিবেন। আমার কোনো প্রটৌকল প্রয়োজন নেই, আপনারাই আমার প্রটৌকল। আমার কোনো পিএস নেই, আমি নিজেই এমপি, নিজেই পিএস। পাশ থেকে কেউ একজন স্যার সম্বোধন করে তাকে কিছু একটা বললে তিনি স্যার না ডাকতে অনুরোধ করেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপতেঙ্গায় যুবকের আত্মহত্যা, যে অভিযোগ বাবার
পরবর্তী নিবন্ধশিল্পমন্ত্রীর সাথে বিমামা’র সদস্যদের সাক্ষাৎ