ন্যাশনাল ব্যাংক খাতুগঞ্জ শাখার ৬৩ কোটি ৫১ লাখ ৮৩ হাজার টাকা খেলাপি ঋণ আদায়ের মামলায় আদালতের নির্দেশনা না মানায় চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের ভূমি অধিগ্রহণ শাখার ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা মো. আবু রায়হানকে শোকজ করেছে আদালত। গতকাল চট্টগ্রামের অর্থঋণ আদালতের বিচারক মুজাহিদুর রহমান এ আদেশ দেন। আদালতের বেঞ্চ সহকারী রেজাউল করিম দৈনিক আজাদীকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
এ সংক্রান্ত আদেশে বলা হয়, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের অধিগ্রহণকৃত শিকলবাহা মৌজার ১৩৮৮৩ এবং ১৩৯৭০ দাগের জমির মালিক হলেন মো. আবুল বশর। এসব জমি তিনি ন্যাশনাল ব্যাংক পিএলসি খাতুনগঞ্জ শাখার নিকট বন্ধক রেখে ঋণ গ্রহণ করেছেন। আবুল বশর ঋণ খেলাপি হওয়ায় বাদী ব্যাংক ৬৩ কোটি ৫১ লাখ ৮৩ হাজার টাকা আদায়ের দাবিতে এই অর্থঋণ মামলা দায়ের করে।
বাদী পক্ষ গত বছরের ২৯ জানুয়ারি অধিগ্রহণকৃত উক্ত ১৩৮৮৩ এবং ১৩৯৭০ নং দাগের জমির ক্ষতিপূরণ বাবদ রোয়েদাদের অর্থ অবমুক্ত করার জন্য জেলা প্রশাসককে নির্দেশ প্রদানের আবেদন করলে বিবাদী পক্ষের আপত্তি না থাকায় উপরোক্ত ক্ষতিপূরণের টাকা বাদী ব্যাংক বরাবরে পরিশোধের জন্য জেলা প্রশাসক বরাবরে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ শাখা উক্ত আদেশ পরিপালন না করায় বাদী ব্যাংকের আবেদনক্রমে গত বছরের ১০ সেপ্টেম্বর উপরোক্ত এলএ কেইসের রোয়েদাদের টাকা বাদী ব্যাংক বরাবরে অবিলম্বে অবমুক্ত করার জন্য পুনরায় নির্দেশ প্রদান করা হয়। উক্ত নির্দেশের প্রেক্ষিতে গত বছরের ১৯ নভেম্বর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, চট্টগ্রামের ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা মো. আবু রায়হান রোয়েদাদের টাকা অবমুক্ত না করে একটি ব্যাখ্যা দাখিল করেছেন। তার ব্যাখ্যা থেকে দেখা যায়, উপরোক্ত দাগ সমূহের রোয়েদাদের টাকা আবুল বশরের নামেই প্রস্তুত হয়েছে। কিন্তু তিনি আদালতের আদেশ পরিপালন না করে মো. আবুল বশরের উপস্থিতির মাধ্যমে এলএ ভাউচার উত্তোলন এবং বাদী ব্যাংকের নামে নামজারি খতিয়ান প্রস্তুতের মাধ্যমে এওয়ার্ড সংশোধন আবশ্যক মর্মে ব্যাখ্যা দাখিল করেছেন। আদালতের আদেশ পরিপালন করা রাষ্ট্রের সকল প্রতিষ্ঠানের আবশ্যকীয় কর্তব্য। বিবাদী কিংবা অন্য কোনো দাবিদারের আপত্তি না থাকা সত্বেও আদালতের আদেশ মোতাবেক রোয়েদাদ বাদী ব্যাংক বরাবর অবমুক্ত না করে তিনি যে ব্যাখ্যা দিয়েছেন তা আদালত অবমাননাকর এবং বেআইনি।
এমতাবস্থায় ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা মো. আবু রায়হানের বিরুদ্ধে কেন আইনানুগ আদেশ প্রচার করা হবে না তা আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি ব্যাখ্যা প্রদান করার জন্য আদালত নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান বেঞ্চ সহকারী রেজাউল করিম।