বিএনপির আন্দোলন দেখে সরকারের রাতে ভালো ঘুম হয় না বলে দাবি করেছেন দলটির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান। তিনি বলেন, বিএনপির আন্দোলনের স্বপ্ন দেখে হঠাৎ চিৎকার করে ঘুম ভেঙে যায় সরকারের। যে আন্দোলন শুরু হয়েছে সরকারকে গদি ছেড়ে দিতে হবে এবং নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। এসময় ‘ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে মশা মারতে সরকার ব্যর্থ হলেও অর্থ লুটপাটে পরিপক্ষতা দেখিয়েছে’ দাবি করে বলেন, ডেঙ্গুতে প্রতিদিন লোক মারা যাচ্ছে। কিন্তু সরকারের কোনো খবর নেই। ঢাকায় সিটি কর্পোরেশন মশা নিধনের যন্ত্রপাতি কিনেছে। যন্ত্রপাতি কেনার কথা ছিল সিঙ্গাপুর থেকে। কিন্তু কিনেছে চীন থেকে। তার কারণে যতই মশা নিধনের চেষ্টা করুক না কেন মশা মরবে না, বরং মশা সরকারের সঙ্গে ঠাট্টা তামাশা করে।
গতকাল বৃহস্পতিবার নগরীর রিয়াজুদ্দিন বাজারস্থ তিন পুলের মোড়ে ডেঙ্গু প্রতিরোধে সরকারের ‘ব্যর্থতা’ এবং ডেঙ্গু সচেতনতায় মহানগর বিএনপির উদ্যোগে লিফলেট বিতরণপূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। নগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্করের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বিভাগীয় শ্রমিক দলের সভাপতি এ এম নাজিম উদ্দীন ও দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান।
সমাবেশ শেষে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীসহ তিন পুলের মোড় থেকে শুরু করে করে জুবিলী রোড, এনায়েত বাজার, লাভ লেইন হয়ে নাসিমন ভবনস্থ দলীয় কার্যালয়ের সামনে পর্যন্ত জনসাধারণের মাঝে লিফলেট বিতরণ করা হয়।
মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, যে মূহূর্তে এই সরকার হটানোর আন্দোলনে রাস্তায় আছি সেই মূহূর্ত থেকে আমাদের একটি মাত্র দাবি, সরকারের পদত্যাগ। এসময় আন্দোলনের অংশ হিসেবে ডেঙ্গু প্রতিরোধে মাঠে নামেন বলেও দাবি করেন। তিনি নগর বিএনপির উদ্যোগে নগরের বিভিন্ন জায়গায় ডেঙ্গু প্রতিরোধে ক্যাম্প বসানোর আহ্বান জানিয়ে বলেন, ক্যাম্পে রোগী আসলে তাকে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে। রক্তের প্রয়োজন হলে বিএনপির নেতাকর্মীরা গিয়ে রক্ত দেবে। রক্ত শুধু আন্দোলনে দিলে হবে না, মানুষ বাঁচাতেও রক্ত দিতে হবে।
ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, ডেঙ্গু করোনার মতো নতুন কোনো রোগ নয়। সরকার বিএনপি নেতাকর্মীদের দমন করতে ব্যস্ত, তাই ডেঙ্গু সামলাতে পারছে না। পত্রিকায় দেখলাম, চসিক মশা মারতে প্রোগ্রাম শুরু করার পর ডেঙ্গুর প্রকোপ নাকি আরো আট গুণ বেড়ে গেছে।
এ এম নাজিম উদ্দীন বলেন, ডেঙ্গুতে মৃত্যু কমছে না। মৃতের সংখ্যা অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।
আবুল হাশেম বক্কর বলেন, বারবার এই ভয়াবহ রোগের পুনরাবৃত্তি হওয়া সত্ত্বেও সরকার আগাম কোনো সতর্কতা বা প্রতিরোধের কোনো চেষ্টা করেনি। সরকার জনগণের প্রাণের তোয়াক্কা করে না। নিজেদের ক্ষমতা নিরঙ্কুশ করার জন্যই বরং জনতার লাশের সারি বিস্তৃত করে।
আবু সুফিয়ান বলেন, ডেঙ্গু রোগ নির্ণয়ে নিম্নমানের কিট ও চিকিৎসা সরঞ্জামাদির কারণে রোগীদের এখন বেহাল দশা। প্রতিদিনই রোগী বাড়ছে। হাসপাতালে ঠাঁই হচ্ছে না। অথচ সরকার ডেঙ্গু মোকাবেলা না করে বিদেশিদের সাথে সেলফি তোলায় ব্যস্ত।
এতে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন এম এ আজিজ, এনামুল হক এনাম, ইয়াছিন চৌধুরী লিটন, মো. শাহ আলম, ইসকান্দর মির্জা, আবদুল মান্নান, নুরুল আমিন, নিয়াজ মো. খান, মো. কামরুল ইসলাম, মোশাররফ হোসেন দিপ্তী, এইচ এম রাশেদ খান, বেলায়েত হোসেন বুলুসহ বিএনপি ও অঙ্গ এবং সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।