বগুড়া থেকে ঢাকায় এসে ভোটে দাঁড়িয়ে আক্রান্ত হওয়ার পর এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে জানিয়েছেন আশরাফুল আলম (হিরো আলম)। ভোটের দুদিন পর গতকাল ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এ কথা জানান। সেই সঙ্গে ভোটের দিন হামলার শিকার হওয়ার জন্য পুলিশকে দায়ী করেন তিনি।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক আলোচিত ডিজিটাল কন্টেন্ট ক্রিয়েটার হিরো আলম বগুড়ার পর এবার ঢাকা–১৭ আসনে উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হন। গত সোমবার ভোটগ্রহণের দিন বনানী বিদ্যা নিকেতন কেন্দ্রে হামলার শিকার হন তিনি। তারপর তিনি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে ফল প্রত্যাখ্যানের ঘোষণা দিয়েছিলেন। পরে আবার হাসপাতালে যান, সেখানেই তিনি গতকাল সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন। খবর বিডিনিউজের।
হিরো আলম বলেন, আমি জীবনের কোনো নিরাপত্তা খুঁজে পাইতেছি না। আজকে আমি হসপিটালে, তারা আমার অফিসে যাইয়া হামলা করার চিন্তাভাবনা করেছে। আজকে আমার বাসায় ৮–১০ জন ছেলেপেলে ‘আলম বের হ, বের হ’ বলে চিল্লাইতেছিল…দারোয়ানের সাথে অনেক খারাপ ব্যবহার করেছে। হাসপাতাল থেকে তিনি নিরাপদে বাসায় যেতে পারবেন কিনা, তা নিয়েও সংশয়ী এখন এই যুবক।
তিনি বলেন, আমি কাউকে জানাইনি আমি কোন হসপিটালে। অনেকেই বলেছে, হিরো আলম কই? কিন্তু নিরাপত্তার খাতিরে আমি আমার মোবাইল বন্ধ রাখছিলাম। আমি ঠিকানা দেই নাই, কারণ ঠিকানা দিলে চিকিৎসা ভালোভাবে হবে না। সন্ত্রাসীরা আমায় খুঁজতেছে…আমি জানি না আমি ভালোভাবে বাসায় ফিরতে পারব কিনা। নিরাপত্তাহীনতার কথা পুলিশকে জানিয়েছেন বলে জানান হিরো আলম। তিনি বলেন, হাতিরঝিল থানায় আবেদনও জমা দেওয়া হয়েছে।
ডিএমপির গুলশান বিভাগের সহকারী কমিশনার আব্দুল্লাহ আল মাসুম বলেন, তার (হিরো আলম) নিরাপত্তাহীনতার অভিযোগের বিষয়টি আমাদের জানা নেই। তবে তার উপর বাকি হামলাকারীদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
ভোটের দিন হামলার জন্য পুলিশকেই দায়ী করছেন হিরো আলম। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আমার উপর যে হামলা হয়েছিল, আমি যে আজকে মৃত্যুর মুখে, এর পেছনে আমি পুলিশ প্রশাসনকে দায়ী করছি। কারণ সেদিন যখন মারামারি, গণ্ডগোল হয়, যখন আমায় ধাক্কা মারা হয়, গেট থেকে বের করে দেওয়া হয়, তখন যদি তারা আমাকে গাড়িতে তুলে দিত, তাহলে কিন্তু আমি এই মৃত্যুর মুখে পড়ি না, হামলার শিকার হই না।
নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে হিরো আলম বলেন, আমার কাছে কিছু তথ্য আছে, টাকা দিয়ে তারা ভোট কিনেছে। নৌকার পক্ষে সিল মেরে ব্যালট বাঙ ভরা হয়েছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, এই নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি, আমাকে ইচ্ছে করে হারানো হয়েছে।
হামলার নিন্দায় ইইউ, ১২ দেশ : হিরো আলমের ওপর হামলার ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে জড়িতদের জবাবদিহিতার আওতায় আনার আহ্বান জানিয়েছে ঢাকায় ১২টি দেশের মিশন এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন। হামলার দুদিন পর এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, আমরা ১৭ জুলাই ঢাকা–১৭ আসনের প্রার্থী আশরাফুল আলমের ওপর হামলার নিন্দা জানাই। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সহিংসতার কোনো স্থান নেই। বিবৃতিদাতা জোট ও দেশগুলো হলো যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, কানাডা, ডেনমার্ক, ইতালি, নেদারল্যান্ড, নরওয়ে, স্পেন, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড এবং ঢাকায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন।