ইঞ্জিন বিগড়ে যাওয়া দীর্ঘদিনের পুরানো ক্রুজ শিপ বে–ওয়ান নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পাথরের বাঁধের উপর চড়ে গেছে। এর আগে নিয়ন্ত্রণহীন জাহাজটি কর্ণফুলীর মোহনায় নোঙর করা একটি জাহাজকেও ধাক্কা দেয়। গতরাত ৮ টা নাগাদ সংঘটিত এই ঘটনায় বে–ওয়ান জাহাজটি বেশ ঝুঁকির মুখে পড়ে। ধাক্কা খাওয়া বসুন্ধরা গ্রুপের মালিকানাধীন বসুন্ধরা ওয়েল এন্ড গ্যাস –০১ নামের জ্বালানিবাহী জাহাজটির একটি নোঙর ছিঁড়ে নদীতে পড়ে গেছে। বে–ওয়ান জাহাজটিকে নিরাপদে সরিয়ে আনতে বন্দরের চারটি টাগ কাজ শুরু করে। তবে ভর জোয়ারের আগে জাহাজটিকে সরানো সম্ভব হবে না বলে জানিয়ে বন্দর সূত্র বলেছে, রাত অথবা সকালের পূর্ণ জোয়ারের সময় জাহাজটিকে সরিয়ে আনা হবে।
সূত্র জানিয়েছে, দীর্ঘ দিনের পুরানো ক্রুজ শিপ বে–ওয়ানের ইঞ্জিনের গোলমাল সারিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে জাহাজটিকে বহির্নোঙরে নেয়া হয় গতকাল বিকেলে। ফেরার পথে বহির্নোঙরেই জাহাজটির ইঞ্জিন আবারো বিগড়ে যায়। অনেক চেষ্টার পর ইঞ্জিন চালু করা সম্ভব হয়। কিছুদূর আসার পর আবারো নষ্ট হয়। আবারো চালু হয়। এভাবে নষ্ট আর চালু হতে হতে জাহাজটি বন্দর চ্যানেলে প্রবেশ করে। একপর্যায়ে জাহাজটি ইঞ্জিন আর চালু হয়নি। নিয়ন্ত্রণহীন যাত্রীবাহী জাহাজটি বন্দরের ১ ও ৩ নম্বর বয়ার অদূরে পাথরের বাঁধের উপর উঠে যায়। এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (রাত ১০.৩০টা) জাহাজটি সেখানে আটকে রয়েছে। পাথরের বাঁধে চড়ার আগে নিয়ন্ত্রণহীন জাহাজটি বসুন্ধরা ওয়েল এন্ড গ্যাস –০১ নামের জাহাজের পাশ দিয়ে ধাক্কা দিয়ে যায়। এতে জাহাজটির একটি নোঙর ছিঁড়ে নদীতে পড়ে গেলেও বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়নি বলে জানা গেছে।
পরীক্ষামূলক ট্রিপে যাওয়া বে–ওয়ান জাহাজে ২০/২৫ জনের মতো যাত্রী ছিল। পরে সবাইকে জাহাজ থেকে উদ্ধার করে আনা হয়েছে। দুর্ঘটনার পর তাদের অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন। নিয়ন্ত্রণহীন জাহাজে তারা চরম আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে কান্নাকাটি করছিলেন বলেও সূত্রগুলো জানিয়েছে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের ডেপুটি কনজারভেটর ক্যাপ্টেন ফরিদুল আলম ঘটনার কথা স্বীকার করে বলেন, জাহাজটি পাথরের বাঁধের উপর চড়ে আসে। ভর জোয়ারের সময় এটিকে নিরাপদে ঘাটে নিয়ে আসার জন্য বন্দরের টাগগুলো কাজ শুরু করেছে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (মেরিন এন্ড হারবার) ক্যাপ্টেন আহমেদ আমীন আবদুল্লাহর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি দুর্ঘটনার কথা স্বীকার করেন। তিনি বলেন, সংঘর্ষের পর বে ওয়ান ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। তবে বন্দর চ্যানেল নিরাপদ এবং জাহাজ চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে বলে তিনি জানান।