করোনা টিকা বাজারে আসতে খুব বেশি দেরি নেই। তবে ফাইজার বা মডার্নার টিকা বাজারে এলেও পৃথিবীর বেশিরভাগ নিম্ন ও নিম্ন মধ্যবিত্ত মানুষের কাছে এই টিকা পৌঁছবে না বলে মনে করছেন অনেকে। আর তাঁদের জন্য একমাত্র ভরসা অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিড টিকা। কারণ, এর মূল্য। কয়েকদিনের মধ্যেই টিকার ট্রায়ালের চূড়ান্ত ঘোষণা করা হবে। মূল্যের কারণেই সেই ঘোষণার দিকেই তাকিয়ে আছে বিশ্বের বেশির ভাগ দেশ। ইতিমধ্যে ঘোষণাও করা হয়েছে, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের হাতে তৈরি এই টিকা উৎপাদনের ৪০ শতাংশই যাবে পিছিয়ে পড়া দেশগুলির মানুষের জন্য। তাতে আশা বাড়ছে দেশগুলির।
এখনও পর্যন্ত যা খবর পাওয়া গিয়েছে, ভারত থেকে ব্রাজিল, একাধিক দেশে এই টিকা উৎপাদিত হবে। ফাইজারের টিকার থেকে এর খরচ অনেকটাই কম হবে। অন্য টিকাগুলি যেমন হিমাঙ্কের অনেক নীচে সংরক্ষণ করতে হয়, এ ক্ষেত্রে সেই পরিকাঠামো প্রয়োজন হবে না। ভারতেও সেরাম ইনস্টিটিউটের মাধ্যমে এই টিকা সরবরাহ করা হবে। টিকা পিছু আনুমানিক খরচ ধরা হয়েছে ৪-৫ ডলার। অ্যাস্ট্রাজেনেকাও জানিয়ে দিয়েছে, অতিমারির সময়ে তারা লাভের দিকে ঝুঁকবে না। কিন্তু তারপর? উৎপাদক সংস্থাগুলি টিকার দাম বাড়িয়ে দিতে পারে বলেও আশঙ্কা রয়েছে। আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য সংস্থার উপপ্রধান সুয়েরিয়া মুন জানিয়েছেন, অ্যাস্ট্রা টিকার উপর অনেককিছু নির্ভর করছে।
যদি সব ঠিকঠাক চলে তাহলে পৃথিবীর কাছে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা সবচেয়ে সহজলভ্য হতে পারে। সারা পৃথিবীতে যত টিকার প্রয়োজন তার এক তৃতীয়াংশ, অর্থাৎ প্রায় ৩২০ কোটি টিকা ব্রিটেনের সংস্থার থেকে আসতে পারে। তবে তার জন্য নিয়মিত যথেষ্ট পরিমাণ উৎপাদন প্রয়োজন। বলা হয়েছে, প্রায় ৫০টি মাঝারি উপার্জনের দেশ অক্সফোর্ডের এই টিকা পেতে পারে। ভারত-সহ দক্ষিণ আমেরিকা, আফ্রিকা, মধ্য এশিয়ার একাধিক দেশে এই টিকা পৌঁছে যাবে অদূর ভবিষ্যতে।
কিন্তু সবশেষেও একটি প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে, টিকার চূড়ান্ত ফলাফল এখনও পাওয়া যায়নি। যদি সাফল্য পাওয়া যায়, তাহলেও চাহিদা অনুসারে টিকার যথেষ্ট সরবরাহ হবে তো? কারণ পরিস্থিতি যা, তাতে সাফল্য পেলে সব দেশই চাইবে কম টাকার টিকা সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে। সেটা কতটা সম্ভব হবে, তাতেই ঝুলে রয়েছে প্রশ্ন। সূত্র আনন্দবাজার পত্রিকা।