অনলাইনে নিবন্ধিত কেন্দ্রের বাইরে ভিন্ন কেন্দ্রে গিয়ে টিকা নিলে পরবর্তীতে টিকার সনদ পেতে জটিলতা দেখা দিতে পারে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা। আর এই জটিলতা এড়াতে নিবন্ধিত কেন্দ্রেই টিকাদান নিশ্চিতে স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি। গতকাল মঙ্গলবার চট্টগ্রামের বিভিন্ন হাসপাতালে করোনার টিকাদান কার্যক্রম পরিদর্শনের সময় তিনি এমন নির্দেশনা দেন। গতকাল দুপুরে প্রথমে তিনি চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) জেনারেল হাসপাতালে টিকাদান কার্যক্রম পরিদর্শন করেন। সেখান থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে যান। সেখানেও টিকাদান কার্যক্রম ঘুরে দেখেন। বিকালে বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের সম্মেলন কক্ষে স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক ১ম কলাম
(রোগ নিয়ন্ত্রণ) ও লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. মো. নাজমুল ইসলাম এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন। চসিক জেনারেল হাসপাতালে গেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালকসহ অতিথিদের স্বাগত জানান চসিকের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সেলিম আকতার চৌধুরীসহ হাসপাতালের চিকিৎসক-কর্মকর্তারা। এ সময় বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার কবীর, সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বিসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
টিকাদান কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ শেষে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা। চট্টগ্রামে রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া বন্ধ থাকার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের অনলাইন রেজিস্ট্রেশন কিন্তু বন্ধ নেই। এটি চলমান। কিছু কিছু কেন্দ্রে প্রত্যাশার বেশি রেজিস্ট্রেশন হয়ে যাওয়ায় সাময়িকভাবে ওইসব কেন্দ্রে রেজিস্ট্রেশন বন্ধ রাখা হয়। তবে আমরা বলে দিয়েছি। এখন ওইসব কেন্দ্রেও পুনরায় রেজিস্ট্রেশন করা যাবে।
অগ্রাধিকার তালিকায় থাকা সত্ত্বেও বয়সের বাধার কারণে তরুণ সাংবাদিকদের টিকা নিতে না পারার বিষয়ে দৃষ্টি আর্কষণ করা হলে অধ্যাপক ফ্লোরা বলেন, বিষয়টি এমন হওয়ার কথা না। কারণ সাংবাদিকরা সম্মুখ সারির যোদ্ধা। তাদের ক্ষেত্রে বয়সের বাধা থাকার কথা নয়। যা হোক বিষয়টি জানলাম। এখন আমরা বিষয়টি দেখব, যাতে সম্মুখ সারির যোদ্ধা হিসেবে তরুণ সাংবাদিকরাও সহজে টিকা নিতে পারেন।
চসিক জেনারেল হাসপাতাল থেকে চমেক হাসপাতালে যান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত এই মহাপরিচালক। এ সময় চমেক হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম হুমায়ুন কবীর, চমেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. শাহানা আকতার, হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সুযত পাল অতিথিদের স্বাগত জানান। সেখানে টিকাদান কার্যক্রম ঘুরে দেখেন তিনি।
টিকা নিতে যিনি যে কেন্দ্রে অনলাইনে নিবন্ধন করেছেন, তাকে ওই কেন্দ্রে টিকাদান নিশ্চিত করতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মহোদয় নির্দেশনা দিয়েছেন বলে জানান চমেক হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম হুমায়ুন কবীর ও চসিকের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সেলিম আকতার চৌধুরী। চমেক হাসপাতাল পরিচালক বলেন, নিবন্ধন এক কেন্দ্রে, কিন্তু ভিন্ন কোনো কেন্দ্রে টিকা নিলে সেক্ষেত্রে টিকার সনদ পেতে জটিলতা দেখা দিতে পারে। যার কারণে এখন থেকে কেবল নিবন্ধিত কেন্দ্রেই টিকা প্রদানে আমাদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
নির্দেশনার প্রেক্ষিতে এখন থেকে নিবন্ধিত কেন্দ্রের বাইরে অন্য কোনো কেন্দ্রে টিকা দেয়া হবে না বলে ঘোষণা দিয়েছেন চসিকের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও চসিক করোনা ভ্যাকসিন প্রদান কমিটির সদস্য সচিব ডা. সেলিম আকতার চৌধুরী। তিনি বলেন, যিনি যে কেন্দ্রের জন্য অনলাইনে নিবন্ধন করেছেন, এখন থেকে তিনি সে কেন্দ্রেই টিকা নেবেন। ভিন্ন কোনো কেন্দ্রে টিকা নেয়া যাবে না। সকলকে নিবন্ধিত স্ব-স্ব কেন্দ্রে গিয়ে টিকা গ্রহণের অনুরোধ জানান তিনি।
বিকালে বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের কার্যালয়ে মতবিনিময় সভায় অংশ নেন ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা। বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার কবিরের সভাপতিত্বে সভায় সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি, চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. আব্দুর রব মাসুম, বিআইটিআইডি ল্যাব ইনচার্জ ডা. শাকিল আহমেদ সভায় অংশ নেন। এর আগে সকালে বন্দরের সম্মেলন কক্ষে একটি সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা।