‘নিদ্রাহীনতায় বাঁচতে পারলাম না’

চিরকুট লিখে বিএসইসি কর্মকর্তার আত্মহত্যা

| মঙ্গলবার , ৩১ মে, ২০২২ at ৮:৩২ পূর্বাহ্ণ

 

 

নানা চড়াইউতরাই পেরিয়ে জীবনে যখন সাফল্য ধরা দিতে শুরু করল, ততোদিনে মা আর পৃথিবীতে নেই; সেই বেদনা চেপে বসেছিল বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এঙচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সহকারী পরিচালক মেহেদী হাসানের বুকে। গত রোববার সন্ধ্যায় ঢাকায় পান্থপথের বাসা থেকে যখন ২৯ বছর বয়সী এই তরুণ কর্মকর্তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হল, ওই কক্ষে একটি চিরকুট পাওয়া গেল; তাতে লেখা – ‘নিদ্রাহীনতায় বাঁচতে পারলাম না।’ খবর বিডিনিউজের।পরিবারের সদস্য আর সহকর্মীরা বলছেন, মানসিকভাবে বিপর্যস্ত দশায় পৌঁছে গিয়েছিলেন মেহেদী, হতাশা থেকে জন্ম নিচ্ছিল নানা জটিলতা, তাতে টুটে গিয়েছিল ঘুম। হয়ত সে কারণেই তিনি বেছে নেন আত্মহননের পথ।

শেরেবাংলা নগর থানার এসআই মতিউর রহমান জানান, কোনো অভিযোগ না থাকায় স্বজন আর সহকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে ময়নাতদন্ত ছাড়াই মেহেদীর মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

তিন ভাইয়ের মধ্যে মেহেদী ছিলেন সবার ছোট। মেজভাই মনোয়ার হোসেন ২০১৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইসলামিক স্টাডিজে মাস্টার্স করে একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করছেন। মনোয়ার বলেন, গত বছর মার্চ মাসে মারা যান তাদের মা। এরপর থেকে ঘুমাতে পারতেন না ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফাইন্যান্সে মাস্টার্স করা মেহেদী। ঘুমের জন্য ওকে অনেক বড় বড় ডাক্তার দেখানো হয়েছে। অনেক কাউন্সেলিং করা হয়েছে। কোনো লাভ হচ্ছিল না। ঘুমের ওষুধ দিলেও একসময় কোনো কাজ হচ্ছিল না। ঘুম না হওয়ার কারণে অনেক ডিপ্রেশনে চলে গিয়েছিল। এই মে মাসে দুই থেকে তিন ঘণ্টা ঘুম হয়েছে। মনোয়ারের ধারণা, ঘুমের ওই সমস্যার পাশাপাশি দীর্ঘদিন ধরে জমা হতাশাই তার ভাইয়ের জন্য কাল হয়েছে।

শেরেবাংলা নগর থানার এসআই মতিউর রহমান বলেন, স্বজন আর সহকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে তারাও মেহেদীর তীব্র হতাশার ভোগার কথাই জেনেছেন। বেশ সংগ্রাম করে পড়ালেখা শেষ করে সম্প্রতি তিনি চাকরিতে ঢুকেছিলেন। বাবা অনেক আগেই মারা গেছেন। মা মারা গেছেন কিছুদিন হল। মা মারা যাওয়ার পর চাকরি হওয়ায় তার মধ্যে হতাশা আরও বেড়েছিল। সে নাকি বলত, চাকরি পেলে মাকে ভালো রাখবে। কিন্তু সেটা না পেরে হতাশা আরও গভীর হয়।

বিএসইসির একজন সহকর্মী জানালেন, সম্প্রতি দুর্নীতি দমন কমিশনে সহকারী পরিচালক পদেও মনোনীত হয়েছিলেন মেহেদী। আরও দুয়েক জায়গায় তার চাকরির সুযোগ তৈরি হয়েছিল।

পূর্ববর্তী নিবন্ধটেকনাফে আরো ৩টি ক্লিনিক সিলগালা
পরবর্তী নিবন্ধপাহাড় থেকে পা পিছলে ঝিরিতে