নিজের মেয়েকে হারিয়ে অন্যের সন্তান চুরি

আজাদী প্রতিবেদন | শুক্রবার , ১১ নভেম্বর, ২০২২ at ৭:২৫ পূর্বাহ্ণ

আপন নাতনিকে চুরি করে বেচে দিয়েছেন নানা। শিশুটির মা নাফিজা আক্তার সুমী বিষয়টি জেনে যায়। সন্তান হারানোর শোক ভুলে স্বামীর হাত থেকে পিতাকে রক্ষা করতে অন্য একজনের শিশু চুরি করে নাফিজা। তাতেও শেষ রক্ষা হয়নি। ধরা পড়তেই হল পুলিশের হাতে। শিশুটিকে উদ্ধার করে মায়ের কোলে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। গ্রেপ্তার নাফিজা কুতুবদিয়ার টং চা দোকানদার নজরুল ইসলামের স্ত্রী এবং কক্সবাজারের রামু থানার সুলতান আহমেদের মেয়ে।
জানা যায়, মাস-দুয়েক আগে নাফিজা ও নজরুল ইসলাম দম্পতির ঘর আলো করে জন্ম নেয় এক কন্যা শিশু। সন্তানকে নিয়ে বাবার বাড়ি বেড়াতে যান নাফিজা। কিন্তু সেখানে তার বাবা নিজের নাতনিকে চুরি করে বিক্রি করে দেন। যেখানে সন্তান হারানোর শোকে পাগলপ্রায় হওয়ার কথা সেখানে সুমী বাবাকে বাঁচাতে মরিয়া হয়ে উঠেন। বাবাকে যেন নাতনি চুরির অপবাদ শুনতে না হয় সেজন্য অন্য একজনের শিশু সন্তানকে চুরি করে নিজের সন্তান বলে চালানোর চেষ্টা করেন তিনি। এ ঘটনায় সুমীর চুরি করা শিশুর মা বাদী হয়ে থানায় মামলা করলে অভিযান চালিয়ে অপহৃত শিশুকে উদ্ধার করে পুলিশ। একইসঙ্গে অভিযুক্ত অপহরণকারীকেও গ্রেপ্তার করা হয়।
বাকলিয়া থানার ওসি আব্দুর রহিম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে আজাদীকে বলেন, নাফিজা চট্টগ্রাম নগরীতে টাইলস পরিষ্কারের কাজ করতেন। তার স্বামী কুতুবদিয়ায় নিজের বাড়ি এলাকায় টং চা দোকান চালান। ১৪ দিন আগে বাকলিয়া কল্পলোক আবাসিক এলাকায় ওই শিশুদের বাসায় সাবলেট হিসেবে ওঠেন নাফিজা। গত ৭ নভেম্বর সকাল ৮টার দিকে তসলিমার পাঁচ মাস বয়সী মেয়েকে সুমীর কাছে রেখে গোসল করতে চলে যান। গোসল শেষে বের হয়ে দেখেন সুমী ও তার মেয়ে বাসায় নেই। তখন তিনি আশেপাশে অনেক খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে ঘরে এসে দেখেন তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন এবং ওয়্যারড্রবের ভেতরে থাকা দুই হাজার টাকাও উধাও। তখন তসলিমা বুঝতে পারেন তার মেয়েকে নিয়ে সুমী পালিয়ে গেছেন। পরে এ ঘটনায় তসলিমা আকতার বাদী হয়ে বাকলিয়া থানায় মামলা দায়ের করেন। পুলিশ মোবাইল নম্বরের সূত্র ধরে বিভিন্ন স্থানে অভিযান শুরু করে। অবশেষে বুধবার (৯ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে কুতুবদিয়া বড় বগডেইল এলাকায় নাফিজার শ্বশুরবাড়িতে অভিযান চালিয়ে নাফিজাকে গ্রেপ্তার করা হয়। একইসঙ্গে পাঁচ মাস বয়সী আসমাউল হোসনাকে উদ্ধার করা হয়। শিশু উদ্ধারের পাশাপাশি চুরি হওয়া মোবাইল ফোন এবং নগদ দুই হাজার টাকাও উদ্ধার করে পুলিশ।
বাকলিয়া থানার ওসি (তদন্ত) রমিজ আহম্মদ বলেন, ৫ মাস বয়সী শিশু অপহরণের ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃত নাফিজা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, তার শিশু কন্যাকে নিয়ে বাবার বাড়িতে গেলে সেখানে তার বাবা ওই শিশুকে বিক্রি করে দেন। স্বামীর বাড়িতে যাওয়ার পর স্বামী যদি বাচ্চার কথা জিজ্ঞেস করে তখন তিনি সত্যটা বলতে পারবে না। তাই বাচ্চা বিক্রির ঘটনা আড়াল করতে এবং স্বামীর কোলে বাচ্চা ফিরিয়ে দিতে ওই শিশুকে অপহরণ করেছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবনজের মামলায় বাবুল আক্তার একদিনের রিমান্ডে
পরবর্তী নিবন্ধপাঁচ দফা দাবিতে আজ থেকে লাইটারেজ শ্রমিকদের অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট