প্রবাদ আছে ‘মানুষ মাত্রই ভুল’। মানুষের জীবনটা কর্মময়। পারিবারিক জীবনে বা কর্মক্ষেত্রে প্রতিটি মানুষ অহরহ নানাবিধ কাজ করে যেতে হয়। কর্ম ক্ষেত্রে, দাম্পত্য কিংবা পারিবারিক জীবনে আমরা অনেক সময় কোনও কাজ করতে বা সিদ্ধান্ত নিতে ভুল করি। কিন্তু ভুল স্বীকার করার প্রবণতা আমাদের মধ্যে খুব কম বললেই চলে। আমরা সদা সর্বদা ‘উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে’ চালাতে ব্যস্ত থাকি। নিজের ভুলটা নানা কৌশলে অন্যের ঘাড়ে চাপাই। এতে করেই সৃষ্টি হয় কখনো দাম্পত্যে অশান্তি, পারিবারিক কলহ বা ভাঙন। আবার কর্মক্ষেত্রে নানা জটিলতা ও সমস্যা। আমরা মনে করি, কোনো ক্ষেত্রে ভুল স্বীকার করলে নিজে খুব ছোটো হয়ে যাব বা আমার সম্মানের ক্ষতি হবে। এতে অন্যের যত ক্ষতি হোক না কেন আমরা অনেকেই নিজের ভুলকে ঠিক বলে প্রমাণ করতে আদা জল খেয়ে লাগি। কেউ কেউ এমন চাতুরি করে যে তার বা তাদের ভুলটাকেই সঠিক প্রতীয়মান করতে হবে। কখনো বা বিভিন্ন ঘটনার বর্ণনায় অন্যের বদনামে আমরা মুখর হয়ে উঠি। ওই ঘটনায় আমার কোনও ভুল ছিল কিনা তা একবারও চিন্তা করলাম না। নিজের দোষ বা ভুল স্বীকার করলে অথবা সেটা নিয়ে দুঃখিত হলে অন্যদের কাছে আমি মূল্যহীন হব এই ভেবে ‘সরি’ বা দুঃখিত বলার অভ্যাসটাও আমাদের একেবারে নেই বললেই চলে। দাম্পত্য জীবনে এই ভুল স্বীকার না করার প্রবণতা অনেক সময় স্বামী বা স্ত্রী দুজনের মধ্যেই সম্পর্কের ফাটল ধরায়। ফলশ্রুতিতে পারিবারিক কলহ এবং বর্তমানে অহরহ ডিভোর্সের মত ঘটনাগুলো ঘটছে। কর্ম ক্ষেত্রে অনেক সিনিয়র ব্যক্তি কাজে–কর্মে ভুল করে কিন্তু সেটা নিজের ইগো ধরে রাখতে কখনোই স্বীকার করবে না। উল্টো অন্যদের উপর ভুলটা চাপিয়ে দেবে। ঘরে বাইরে এমন ব্যক্তিও আছেন আপনার সাথে অকারণে দুর্ব্যবহার করে দোষটা আপনার বা ভুলটা আপনার প্রমাণ করতে চায়। পরিশেষে একটা কথাই বলব, নিজের বিবেককে জাগ্রত করে ভুলটা স্বীকার করুন। নিজের করা ভুল বা অন্যায় অন্যের উপর চাপিয়ে দেবেন না। এতে অন্যের কাছে আপনি কুটিল মনের মানুষ হিসেবে চিহ্নিত হবেন। নিজের দোষ বা ভুল স্বীকার করে ছোটো হবেন না বরং আপনি উদারতার উদাহরণ হয়ে থাকবেন।