বাংলাদেশের এই মুহূর্তে সবচাইতে গতিময় পেস বোলারের নাম নাহিদ রানা। আর এই গতি দিয়ে আপন পরিচয়েই পরিচিত হতে চান বাংলাদেশের তরুণ ফাস্ট বোলার। ১৫২ কিলোমিটার গতি ছাড়িয়ে যাওয়ার আশাও করছেন তিনি। প্রসঙ্গ যখন গতির, ক্রিকেট ইতিহাসের গতিময় সব ফাস্ট বোলারদের ছবি চোখের সামনে ভেসে ওঠে। তবে নাহিদ রানা নিজেকে দেখেন কেবলই আপন আয়নায়। গতি দিয়ে তিনি নিজেকে উপস্থাপন করতে চান আপন পরিচয়েই। সমপ্রতি পাকিস্তান সফরে গতির ঝড় তোলা বাংলাদেশের এই তরুণ ফাস্ট বোলারের আশা, ১৫২ কিলোমিটার ছাড়িয়ে আরও দ্রুতগতির ডেলিভারি বের হবে তার হাত থেকে। গতি দিয়ে বাংলাদেশের ক্রিকেটে বেশ কিছু দিন ধরেই আলোচনায় ছিলেন নাহিদ। এখন তিনি নজর কেড়েছেন ক্রিকেট বিশ্বের। পাকিস্তান সফরে দুই টেস্টে তার গতিময় বোলিং চমকে দিয়েছে সেখানকার ক্রিকেট মহলকে। যে পাকিস্তান থেকে একসময় ওয়াকার ইউনিস, মোহাম্মদ জাহিদ, শোয়েব আখতারের মতো গতিময় বোলার এসেছে, দুর্দান্ত সব ফাস্ট বোলার উপহার দিয়েছে যে দেশ, সেই পাকিস্তানেই এবার গতি দিয়ে সবাইকে অনেকটা ছাড়িয়ে গেছেন নাহিদ। নাহিদের গতি দেখে পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যমে শোয়েব আখতারের সঙ্গে তুলনাও হয়েছে। তবে তার মতো হতে বা সেই তুলনায় যেতে চান না তিনি নিজে। বিসিবির সামাজিক মাধ্যমের ভিডিওতে শোয়েবের প্রসঙ্গে কথা উঠতেই মিষ্টি হাসিতে নাহিদের প্রত্যয়ী উচ্চারণ, আমি কারও মতো হতে চাই না। আমি নাহিদ রানা, নাহিদ রানাই হতে চাই বাংলাদেশের। গতিময় ফাস্ট বোলারদের ক্ষেত্রে যুগে যুগেই দেখা গেছে, সাধারণত কাউকে আদর্শ মেনে বা অনুসরণ করে নিজেকে গড়ার চেষ্টা করেন তারা। তবে নাহিদ বললেন সুনির্দিষ্ট এমন কোনো নায়ক তার ছিল না। সত্যি বলতে সেভাবে কাউকে অনুসরণ করা হয় না আমার। তবে বাংলাদেশের সব পেস বোলারকেই ভালো লাগে আমার। কারণ টিভিতে তাদের খেলা দেখে বড় হয়েছি। সেরকম কেউ একজন নেই। বাংলাদেশ দলের সবাই আমার সিনিয়র। তাদের খেলা টিভিতে দেখে বড় হয়েছি। সবার বোলিংই ভালো লাগে আমার। বাংলাদেশের প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ও বিপিএলে গতির ঝড় তোলার পর গত মার্চে সিলেটে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক তার। প্রথম টেস্টে দুই ইনিংস মিলিয়ে পাঁচ উইকেট শিকার করলেও বোলিং খুব গোছানো ছিল না। কিন্তু অনেক উন্নতির ছাপ রাখেন তিনি পাকিস্তান সফরে। তার গতিও যেমন ধারাবাহিকভাবে দেখা যায় আগের চেয়ে বেশি, তেমনি স্কিল, লাইন–লেংথ, ব্যাটসম্যান বুঝে বল করা, আগ্রাসন, সবকিছুতেই ছিল অগ্রগতির পরিষ্কার প্রমাণ।
পাকিস্তান জয়ের পর এখন ভারত সফরের প্রস্তুতি চলছে বাংলাদেশ দলের। নাহিদও নিজেকে শাণিয়ে নিচ্ছেন আরও। আরও ভালো কিছু করার আশা ফুটে উঠল তার কণ্ঠে। প্রস্তুতি ভালো হচ্ছে। প্রস্তুতি যত ভালো হবে, ওখানে গিয়ে ম্যাচে তত ভালো করা যাবে। ভারত ভালো দল অবশ্যই। তবে ক্রিকেটে দুই দলের মধ্যে যে ভালো খেলবে, তারাই জিতবে। ম্যাচেই তাই দেখা যাবে। অবশ্যই আমার লক্ষ্য আছে। দলকে সেরাটা এখনও দেওয়ার বাকি আছে। সেই সেরাটা দেওয়ার পথে গতিও তো বড় একটা অস্ত্র। যেখানে কৌতূহল থাকবে সবারই। ১৫২ কিলোমিটার গতি কি ছাড়িয়ে যেতে চান কিনা জানতে চাইলে লাজুক হাসিতে নাহিদ বললেন গতি ব্যাপারটা তো বলে করা যায় না। এটা ছন্দের ওপর নির্ভর করে। কখন দেখব হয়ে গেছে।