ওয়ানডেতে বাংলাদেশের কোনো স্পিনারের ৬ উইকেট ছিল না। ডানহাতি কোনো স্পিনারের ৫ উইকেটও ছিল না। বাংলাদেশের দুটি অপূর্ণতা এক ম্যাচেই ঘুচিয়ে দিলেন রিশাদ হোসেন। ক্রিকেট ইতিহাসের অনেক কিংবদন্তি বোলারও ওয়ানডে ক্যারিয়ারে কখনও ৬ উইকেটের স্বাদ পাননি। এমন কীর্তি নিয়ে রিশাদ দারুন খুশি এবং তৃপ্ত। বাংলাদেশ যখন একজন লেগ স্পিনারের জন্য হা পিত্যেশ করছিল ঠিক তখনই এসেছিলেন রিশাদ। ওয়ানডে ক্যারিয়ারের সেরা দিনটিতে নেই কোন উচ্ছাস। রেকর্ড গড়া বোলিংয়ে অনন্য কীর্তি গড়ার দিনেও ২৩ বছর বয়সী লেগ স্পিনার যেন একদমই নির্লিপ্ত। উচ্ছ্বাসের জোয়ার বা আবেগের খুব প্রকাশ দেখা গেল না তার কথায় বা কাজে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৭৪ রানের জয় দিয়ে সিরিজ শুরু করার ম্যাচে বাংলাদেশের নায়ক রিশাদ। ব্যাটিং প্রতিকূল উইকেটে তার ১৩ বলে ২৬ রানের ইনিংস শেষ দিকে দলের জন্য ছিল মহামূল্য। এরপর আসল কাজ বোলিংয়েও তিনি জ্বলে ওঠেন দারুণভাবে। বাংলাদেশের টি–টোয়েন্টি দলে তিনি নিয়মিত মুখ। ম্যাচ খেলে ফেলেছেন এই সংস্করণে ৫০টি। কিন্তু ওয়ানডে দলে এখনও ঠিক নিয়মিত নন। এই ম্যাচের আগে অভিজ্ঞতা ছিল মাত্র ১১ ম্যাচের। কোনো ম্যাচে দুই উইকেটের বেশি পাননি। সেই তিনিই নিজেকে ছাপিয়ে বাংলাদেশের সব স্পিনারকে ছাড়িয়ে স্বাদ পেলেন ৬ উইকেটের। ব্যাটে–বলে এমন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স দেখিয়েও বিশেষ কিছু মনে হচ্ছে না তার কাছে। তেমন কিছু বলার নেই। এটা আমার কাজ। আমাকে করতে হবে। আমি চেষ্টা করেছি সেরাটা দিতে। এটা নরম্যাল, আমার কাজ। মিরপুরের টার্নিং উইকেটে এই ম্যাচে তাকে গুগলি করতে হয়নি বা করার তেমন প্রয়োজনীয়তা হয়তো ছিল না এ দিন। তবে সমপ্রতি এশিয়া কাপে ও পরে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজে তাকে দারুণ কয়েকটি গুগলি করতে দেখা গেছে। গুগলি ভালোভাবে রপ্ত করতে পারলে নিশ্চিতভাবেই আরও বিপজ্জনক হয়ে উঠবেন তিনি। বাংলাদেশের স্পিন বোলিং কোচ মুশতাক আহমেদ খেলোয়াড়ি জীবনে বিখ্যাত ছিলেন গুগলির কারণে। রিশাদের গুগলিতে তার প্রভাব কতটা, সেই প্রশ্নটি উঠল। কিন্তু রিশাদ সেটির গভীরে যেতে চাইলে না। রাশিদ খানের সঙ্গে আলোচনার বিষয়টিও খুব খোলাসা করলেন না তিনি। আফগানিস্তানের সঙ্গে সিরিজের সময়ই মুশতাককে সঙ্গে নিয়ে তিনি রাশিদের সঙ্গে কথা বলেছেন এক ঘণ্টার মতো সময়। সেটি নিয়ে কথা বলতেও খুব উৎসাহী মনে হলো না তাকে, বরং এখানেও অপেক্ষা করতে বললেন মাঠের পারফরম্যান্সের। আসলে লেগ স্পিনার হিসেবে টেকনিক্যাল ব্যাপার এবং প্রসেস নিয়ে কথা বলছিলাম। নরমালি একজন লেগ স্পিনারের সাথে যা কথা হয়, তেমনই। কথা বলেছি আমার সামনের পথ কীভাবে যাব না যাব, এসব নিয়ে। লম্বা প্রক্রিয়ার ব্যাপার আর কী। এসব ইনশাল্লাহ সামনে দেখবেন। এটা দেখাতে পারাটাই আসল। ব্যাটে–বলে তিনি যদি কথা বলতে পারেন তখণ অন্য কিছু আর খুব জরুরি নয়।