নিজের কর্মীদের থামিয়ে বিএনপিকে আগে যেতে দিলেন নওফেল

সংঘাত এড়িয়ে প্রশংসিত

আজাদী প্রতিবেদন | রবিবার , ১৮ ডিসেম্বর, ২০২২ at ৫:৫৪ পূর্বাহ্ণ

মুখোমুখি হয়ে যাওয়া দুটি র‌্যালির সংঘাত এড়িয়ে প্রশংসিত হয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। বিজয় দিবস উপলক্ষে শুক্রবার সকালে নগরীর লাভলেইন মোড়ে নিজেদের কর্মীবাহিনীকে থামিয়ে বিএনপির র‌্যালিকে আগে যেতে দিয়ে তিনি রাজনীতিতে সহাবস্থানের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন বলে সংশ্লিষ্টরা মন্তব্য করেছেন।

শুক্রবার সকালে বিভিন্ন সংগঠন র‌্যালি করে শহীদ মিনারে যাচ্ছিল। লাভলেইন মোড়ে এমন দুটি র‌্যালিতে মুখোমুখি হয়েছিলেন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতাকর্মীরা। এতে হঠাৎ পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পাল্টাপাল্টি স্লোগান দিতে থাকেন দুই পক্ষের নেতাকর্মীরা। নিরাপত্তায় নিয়োজিত পুলিশ সদস্যরা উভয় পক্ষকে সামলাতে চেষ্টা করছিলেন। আর তখনই শিক্ষা উপমন্ত্রী নওফেল পুলিশের সঙ্গে দাঁড়িয়ে নিজেদের র‌্যালির গতি রোধ করেন; যাতে বিএনপির নেতা-কর্মীরা নির্বিঘ্নে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পায়। এতে কোনো হট্টগোল ছাড়াই বিএনপির র‌্যালিটি তাদের গন্তব্যের দিকে এগিয়ে যায়।

জানা যায়, আওয়ামী লীগের বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মী নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা পরিষদের ব্যানারে এম এ আজিজ স্টেডিয়ামের সামনে থেকে বিজয় র‌্যালি বের হয়। র‌্যালির নেতৃত্ব দেন পরিষদের চেয়ারম্যান শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। র‌্যালিটির গন্তব্য ছিল বৌদ্ধ মন্দির-লাভলেইন-সিআরবি হয়ে পুনরায় স্টেডিয়ামের সামনের বিজয় শিখা চত্বর পর্যন্ত।

অপরদিকে নাসিমন ভবন নগর দলীয় কার্যালয় থেকে বিজয় র‌্যালি বের করেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা। নগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্করের নেতৃত্বে র‌্যালিটি যাত্রা ছিল মিউনিসিপল মডেল হাই স্কুলের অস্থায়ী শহিদ মিনার।

নগর বিএনপির দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা ইদ্রিস আলী জানান, র‌্যালি লাভলেইন মোড়ের দিকে যাওয়ার সময় মেট্রোপলিটন ক্লাবের সামনে পুলিশ আমাদের আটকে দেয়। আওয়ামী লীগের র‌্যালিটিও আমাদের কাছাকাছি এসে যায়। হঠাৎ দেখলাম আওয়ামী লীগের র‌্যালি থেমে গেছে। সামনে পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে রেখেছে। আর আমাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তখন আমরা র‌্যালি নিয়ে শহীদ মিনারে চলে যাই।

কোতোয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জাহিদুল কবীর বলেন, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহোদয়ের নেতৃত্বে র‌্যালি তখন বৌদ্ধ মন্দির থেকে লাভলেইনের মোড়ে পৌঁছেছিল। একই সময়ে বিএনপির র‌্যালিটিও লাভলেইন অতিক্রম করছিল। দুই দলের নেতা-কর্মীরা মুখোমুখি হয়ে গেলে যা হয়, আমরাও সতর্ক ছিলাম। শিক্ষা উপমন্ত্রী মহোদয় উনাদের র‌্যালি থামিয়ে দেন। বিএনপিকে র‌্যালি নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার জন্য মাইকে আহ্বান জানান। তখন বিএনপির নেতা-কর্মীরা লাভলেইন মোড় অতিক্রম করে। পরে উপমন্ত্রী নিজেদের র‌্যালি নিয়ে এগিয়ে যান।

শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, আমরা সবসময় সহাবস্থানের রাজনীতিতে বিশ্বাসী। চট্টগ্রামে কখনোই প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলের কর্মসূচিতে আমরা হস্তক্ষেপ করিনি। বরং শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে সবসময় সহায়তা করেছি। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আমাদের আহ্বান থাকবে, জ্বালাও-পোড়াও, আগুনে পুড়িয়ে মানুষ হত্যার মতো ধ্বংসাত্মক রাজনীতি করে কেউ যাতে সহাবস্থানের পরিবেশটি নষ্ট না করেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধভাড়াটে খেলোয়াড়দের প্রতিটি পাড়া মহল্লায় প্রতিহত করা হবে
পরবর্তী নিবন্ধক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের উদ্যোক্তাদের জন্য কাজ করে যাচ্ছে বিসিক