এবারের বিপিএলে একেবারে অপ্রতিরোধ্য এক দল সিলেট স্ট্রাইকার্স। ঢাকা, চট্টগ্রাম এবং ঢাকা পর্ব মিলে একটি ম্যাচে হেরেছিল মাশরাফির দল। ঢাকায় সবশেষ ম্যাচে সাকিবের বরিশালকে হারিয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ দল হিসেবে নিজেদের ভেন্যু সিলেটে গিয়েছিল স্ট্রাইকার্স। প্রত্যাশা ছিল স্বাগতিক দল হিসেবে সিলেটের উৎসবকে আরো রাঙিয়ে দেবে স্ট্রআইকাররা।
কিন্তু হয়েছে উল্টোটা। নিজেদের মাঠে লজ্জায় ডুবতে হয়েছে মাশরাফিদের। আগের সাত ম্যাচের ছয়টিতে প্রতিপক্ষকে উড়িয়ে দেওয়া সিলেট এবার নিজেদের মাঠে নিজেরাই উড়ে গেল। মাশরাফি আর তানজিম হাসান সাকিব না হলে চরম লজ্জায় ডুবতে হতো সিলেটকে। এদুজন বড় লজ্জার হাত থেকে বাঁচিয়েছে সিলেটকে। পয়েন্ট তালিকার চতুর্থ স্থানে থাকা রংপুরের জয়টা ৬ উইকেটের।
ব্যাটিং এর মত বোলিংয়েও মাশরাফি সিলেটকে রক্ষা করেন বড় লজ্জা থেকে। টসে হেরে ব্যাট করতে নামা সিলেট স্ট্রাইকার্স শুরু থেকেই বিপর্যয়ে পড়ে। ওভার প্রতি উইকেট হারাতে থাকে সিলেট। প্রথম ওভারে টম মুর, দ্বিতীয় ওভারে নাজমুল হোসেন শান্ত, চতুর্থ ওভারে তৌহিদ হৃদয় এবং মুশফিক। এভাবে করে ১২ রানে নেই ৫ উইকেট। ১৮ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে পুরো স্টেডিয়াম যেন স্তব্দ হয়ে পড়ে।
নিজেদের দলকে সমর্থন দিতে আসা দর্শকেরা তখন স্তব্ধ। বিপিএলের সব আসর মিলিয়ে কোনো দল এত কম রানে প্রথম ৫ উইকেট হারায়নি। শুধু তাই নয় বিপিএলের সব আসর মিলিয়ে সর্বনিম্ন দলীয় রানে গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কা যখন সিলেটের সামনে তখন দুই পেসার তানজিম আহমেদ সাকিব ও মাশরাফি বিন মুর্তজা দাড়িয়ে যান বুক চিতিয়ে। এ দুজনের ৪৮ রানের জুটি লজ্জা কিছুটা কমায়।
৬৬ রানের মাথায় ফিরেন মাশরাফি ২১ বলে ২১ রান করে। এরপর সিলেট যে ৯২ রানে যেতে পেরেছে সেটা তানজিম সাকিবের কল্যানে। শেষ ব্যাটার হিসেবে ১৮.২ ওভারে যখন ফিরেন সাকিব তখন সিলেট পৌঁছে গেঝে ৮৫ রানে। ৩৬ বলে ৪১ রান করেন তিনি। এরপর মোহাম্মদ আমির এবং রেজাউর রহমান রাজা মিলে ৯২ রানে নিয়ে যান দলকে। এবারের বিপিএলের প্রথম ম্যাচে চট্টগ্রামের করা ৮৯ রানের লজ্জা থেকে বাঁচল সিলেট।
রংপুর রাইডার্সের পক্ষে ৩টি করে উইকেট নিয়েছেন আজমতউল্লাহ এবং হাসান মাহমুদ। ২টি উইকেট নিয়েছেন মেহেদী হাসান। স্বল্প রান তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভাল করতে পারেনি রংপুরও। ২৭ রানে ফিরেন ১৮ রান করা নাইম। নিজের দ্বিতীয় এবং ইনিংসের নবম ওভারের শেষ দুই বলে মেহেদী হাসান এবং শোয়েব মালিককে ফিরিয়ে ম্যাচে খানিকটা উত্তেজনা পিরিয়েছিলেন। আজমতউল্লাহকে ফিরি ধাক্কাটা আরো মজবুত করেছিলেন মোহাম্মদ আমির।
কিন্তু এরপর আর কোন ধাক্কা দিতে পারেনি সিলেটের বোলাররা। রনি তালুকদার এবং মোহাম্মদ নেওয়াজ মিলে ১৫.৪ ওভারে ৬ উইকেট হাতে রেখে জয় পাইয়ে দেন রংপুরকে। রনি তালুকদার ৩৮ বলে ২টি চার এবং ২টি ছক্কার সাহায্যে ৪১ রান করে অপরাজিত থাকেণ। আর মোহাম্মদ নেওয়াজ অপরাজিত ছিলেন ১৩ বলে ১৮ রান করে। ম্যাচ সেরা হয়েছেন আজমতউল্লাহ আহমেদজাই।