নিজেদের মাঠে টানা দ্বিতীয় হার চিটাগাং কিংসের

ক্রীড়া প্রতিবেদক | সোমবার , ২০ জানুয়ারি, ২০২৫ at ৭:৩৮ পূর্বাহ্ণ

ঢাকা এবং সিলেটে টানা তিন জয়ের পর নিজেদের মাঠ চট্টগ্রামে প্রথম ম্যাচেই জয়। টানা চার ম্যাচে জিতে বেশ ভালই এগুচ্ছিল চিটাগাং কিংস। কিন্তু নিজেদের মাঠে দ্বিতীয় ম্যাচেই হারের স্বাদ পেল চিটাগাং। টানা এই দুই হারে নিজেদের মাঠে টানা পাঁচ জয়ের লক্ষ্য থেকে আরো পিছিয়ে গেল স্বাগতিক চিটাগাং। আগের ম্যাচে রংপুর রাইডার্সের কাছে হেরেও পয়েন্ট তালিকার দ্বিতীয় স্থানে ছিল চিটাগাং। চ্যাম্পিয়ন বরিশালকে ঠেলে দিয়ে দিয়েছিল তৃতীয় স্থানে। কিন্তু পরদিনই অর্থাৎ গতকাল সেই চিটাগাংকে হারিয়ে আবার পয়েন্ট তালিকার দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে তামিমের বরিশাল। এবারের বিপিএলে গতকালই প্রথমবার বরিশালের মুখোমুখি হয়েছিল চিটাগাং। এই দুই দলের ম্যাচকে ঘিরে জহুর আহমদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের গ্যালারীও বিভক্ত হয়ে পড়েছিল দুইভাগে। এক ভাগ তামিমের কারণে সমর্থন করছিল বরিশালকে। আরেকভাগ চট্টগ্রামকে সমর্থন দিয়ে গেছে নিজেদের দল বলে। আর মাঠে একদিকে তামিম আর অন্যদিকে চট্টগ্রাম। মাঠে এবং মাঠের বাইরে জয়টা তামিমেরই। মাঠে এবং গ্যালারীতে অল রেডদের সামনে বিবর্ণ অল ব্লু। মাঠের লড়াইয়ে তামিমের দল ফরচুন বরিশাল ৬ উইকেটে হারিয়েছে চিটাগাং কিংসকে। এই জয়ের ফলে ৭ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট তালিকার দ্বিতীয় স্থানে বরিশাল। আর সমান ম্যাচে ৮ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে চিটাগাং। দেশের অন্য দুই ভেন্যুর মত চট্টগ্রামেও রান বন্যা হচ্ছিল এবারের বিপিএলে। কিন্তু তৃতীয় দিনে এসে হঠাৎ করেই বোলাররা ছড়ি ঘুরালো। দিনের প্রথম ভাগে চিটাগাং এর ব্যাটারদের যেমন সংগ্রাম করতে হয়েছে তেমনি শেষভাগে বরিশালকেও কম লড়াই করতে হয়নি। তবে দু’দলের পার্থক্যটা গড়ে দিয়েছেন একজন ডেভিড মালান। তার ধৈর্যশীল এক ইনিংসে সহজ জয় পায় বরিশাল। সচরাচর একজন মারকাটারি ব্যাটার মালান। কিন্তু গতকাল যেন ধৈর্য্যের চরম পরাকাস্টা দেখালেন এই ইংলিশ ব্যাটার। আর তাতেই দলকে এনে দিয়েছেন জয়।

টসে হেরে ব্যাট করতে নামা চিটাগাং কিংসের শুরুটা বড়ই বিবর্ণ। যদিও প্রথম ওভারে ১৫ রান নিয়ে ভাল কিছুর আভাস দিচ্ছিলেন ওসমান খান। কিন্তু দ্বিতয়ি ওভারেই ফিরেন ওসমান খান। রিপন মন্ডলের বলে পুল করতে গিয়ে ক্যাচে পরিণত হয় ওসমান খান। ১৩ বলে ১৯ রান করে আসেন এই পাকিস্তানী। এক ম্যাচ আগে সেঞ্চুরি করা ক্লার্ক খেললেন ৪ বল। ২ টি চার মেরে ফিরলেন তিনি। পরের ওভারে বল করতে এসে ফাহিম আশরাফ ফেরালেন পারভেজ হোসেন ইমনকে। ১ রান করেই ফিরলেন ইমন। একই ওভারে স্বদেশী হায়দার আলিকেও প্যাভেলিয়নের পথ দেখান ফাহিম আশরাফ। নিজের পরের ওভার করতে এসে শামীম হোসেনকে ফেরান ফাহিম। ৩৯ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে খাদের কিনারায় চিটাগাং। দলের সে কঠিন মুহূর্তে রানের খাতা খোলার আগেই ফিরেন আলিস আল ইসলাম। ৫৬ রানে নেই ৬ উইকেট। এরপর প্রতিরোধের চেষ্টা করেন অধিনায়ক মিথুন এবং আরাফাত সানি। ৩১ রান যোগ করে বিচ্ছিন্ন হন দুজন। ফিরেন অধিনায়ক মিথুন। ৩৪ বলে ৩৫ রান করে তানভীর ইসলামের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হন মিথুন। এরপর শেষ পর্যন্ত লড়াই করে গেছেন আরাফাত সানি। মুলত তার ৩৪ বলে ২৭ রানের উপর ভর করে ১২১ রানে থামে চিটাগাং কিংসের ইনিংস। ফরচুন বরিশালের পক্ষে ৩টি করে উইকেট নেন রিপন মন্ডল এবং ফাহিম আশরাফ। ১৪ রানে ২টি উইকেট নিয়েছেন তানভীর ইসলাম। ১২২ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে প্রথম দুই ওভার থেকে মাত্র ৭ রান নেন তামিম। চতুর্থ ওভারে এসে ডেভিড মালানের সাথে ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউট হয়ে ফিরেন বরিশাল অধিনায়ক। ১৪ বলে ৮ রান করেন তামিম। পরের ওভারে তাওহিদ হৃদয় ফিরেন খালেদ আহমেদের বলে। কাভারে দুর্দান্ত এক ক্যাচ নেন পারভেজ হোসেন ইমন। ৪ বলে ১ রান করেন হৃদয়। এরপর ডেভিড মালানের সাথে যোগ দেন অভিজ্ঞ মুশফিক। কিন্তু তাদের পথ চলাও দীর্ঘ হলো না। ১৬ রান যোগ করেন দুজন। আরাফাত সানির প্রথম ওভারের চতুর্থ বলে শরীফুলের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন ১১ রান করা মুশফিক। ভাল কিছুর ইঙ্গিত দিয়ে দলকে টানতে পারলেন না আরেক অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ। ১১ বলে ১৬ রান করে ক্লার্কের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন মাহমুদউল্লাহ। তবে ইনিংসের সূচনা করতে নামা ডেভিড মালান টানছিলেন দলকে। আফগান অল রাউন্ডার মোহাম্মদ নবীকে নিয়ে আর কোন বিপদ হতে দেননি মালান। দারুন দৃঢ়তায় দলকে পৌঁছে দেন জয়ের বন্দরে। ১৯ বল হাতে রেখেই জয় নিয়ে ফিরেন মালান এবং নবী। ডেভিড মালান অপরাজিত ছিলেন ৪১ বলে ৫৬ রান করে। যেখানে তিনি ৩টি চার এবং ২টি ছক্কা মেরেছেন। আর মোহাম্মদ নবী অপরাজিত ছিলেন ২১ বলে ২৬ রান করে। যেখানে তিনি ৩টি চার মেরেছেন। ম্যাচ সেরা হয়েছে ডেভিড মালান।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচট্টগ্রাম বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার এডহক কমিটি গঠিত
পরবর্তী নিবন্ধসুখবর দিলেন নিরব