‘লেখাপড়া শেষে চাকরি করে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছিল আরমান। মা মারা যাওয়ার পর পরিবারকে স্বাবলম্বী করার জন্য কিছু করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু বাইক দুর্ঘটনায় তার স্বপ্ন সড়কেই ঝরে গেল।’ এসব কথা বলার সময় চোখের পানি আটকাতে পারলেন না আরমানের বাবা মো. বদিউল আলম। চোখের জল মুছতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন আদরের ছোট ছেলেকে হারানো এই পিতা।
গত শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বোয়ালখালীর কানুনগোপাড়া সড়কের পূর্ব গোমদণ্ডী মুজাহিদ চৌধুরী পাড়ার হযরত আয়েশা সিদ্দিক (রা.) মহিলা মাদ্রাসার সামনে দুই বাইকের মুখোমুখি সংঘর্ষে আহত হয়েছিলেন মো. আরমান ইমরান (২৪)। গত সোমবার দিবাগত রাত ৪টার দিকে নগরীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। আরমান বোয়ালখালী পৌরসভার বহদ্দার পাড়া এলাকার ইউছুপ তালুকদার বাড়ির বদিউল আলমের ছেলে। দুই ভাই এক বোনের মধ্যে তিনি সবার ছোট।
তার বন্ধু মুহাম্মদ সাওরাত বলেন, সে মিউনিসিপ্যাল স্কুলের এসএসসি ২০১৮ ব্যাচের বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র ছিল। পরে শ্যামলী আইডিয়াল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউডের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্ট থেকে লেখাপড়া শেষ করে।
তার বাবা বদিউল আলম বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হলে প্রথমে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেঙে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে বললে আমরা নগরীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে সে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিউ) ছিল। চারদিন পর সে মারা যায়।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, আমার ছেলে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছিল। তাই দিন রাত পরিশ্রম করে শ্যামলী আইডিয়াল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউডের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্ট থেকে লেখাপড়া শেষ করে। নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার আগেই দুনিয়া থেকে চলে গেল। সে গাউসিয়া কমিটি বাংলাদেশ বহদ্দার পাড়া ইউছুপ তালুকদার বাড়ি শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। করোনাকালীন সময়ে মৃত ব্যক্তিদের দাফন কাফনে তার খুবই অবদান ছিল।