বাংলাদেশ দলের এই সময়ের সবচাইতে গতিময় বোলারের নাম নাহিদ রানা। তার গতির কাছে হার মানে বিশ্বের বড় বড় ব্যাটারও। যদিও ফাস্ট বোলারসুলভ ডাকাবুকো শরীরী ভাষা নেই তার । মাঠে মোটেও বুনো কিংবা খ্যাপাটে নন নাহিদ রানা। উদযাপনেও নেই ততটা আগ্রাসন। মাঠের বাইরে তো তিনি আরও নম্র, মৃদুভাষী ও পরিমিত। যখন বল হাতে ছুটতে থাকেন, কেবল তখনই ফুটে ওঠে তার ফাস্ট বোলার সত্ত্বা। তার গতি ও বাউন্সে কাবু হয় ব্যাটসম্যানরা। এছাড়া মাঠের ভেতের–বাইরে তিনি যেন ভিন্ন একজন। কে বলবে এই মুহূর্তে দেশের ক্রিকেটের সেনসেশন তিনি, বিশ্ব ক্রিকেটেও তাকে ঘিরে আগ্রহ তুমুল। কে কী বলছে তা নিয়ে অবশ্য মাথাব্যথাও নেই নাহিদের। তারকাসুলভ কোনো অহমিকা বা আচরণ তার চরিত্রে তো নেই–ই। নিজেকে তিনি তারকাই মনে করেন না। গত বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আবির্ভাবের পর থেকেই যেভাবে গতির রথে ছুটছেন নাহিদ। বাংলাদেশের প্রথম বোলার হিসেবে বল করেছেন দেড়শ কিলোমেটার গতিতে। যেভাবে নাড়া দিয়েছেন ক্রিকেট বিশ্বে, সেই ধারা ধরে রেখেছেন তিনি চলতি বিপিএলেও। ৯ উইকেট নিয়ে যৌথভাবে আসরের দ্বিতীয় উইকেট শিকারি বোলার তিনি। সিলেট স্ট্রাইকার্সের বিপক্ষে মিরপুরে ৪ উইকেট নিয়ে স্বীকৃতি পেয়েছিলেন ম্যাচ সেরার। এবার সিলেটে গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা ক্যাপিটালসের বিপক্ষে ৩ উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরা হলেন আবার। সব মিলিয়ে এখন তিনি দেশের ক্রিকেটের ঝলমলে এক নক্ষত্র। তবে ঢাকার বিপক্ষে ম্যাচের পর সংবাদ সম্মেলনে বললেন, নিজেকে তিনি মাটির মানুষই মনে করেন। নিজেকে আমি কোনো তারকা মনে করি না। আমি আপনাদের মতো সাধারণ মানুষ। তাই সাধারণ থাকারই চেষ্টা করছি। নাহিদ নিজেকে সাধারণ মনে করলেও আদতে যে তিনি অসাধারণ প্রতিভা। এটি তো বলছে ক্রিকেট বিশ্বজুড়ে অনেকেই। বর্তমান–সাবেক অনেক ক্রিকেটার, ধারাভাষ্যকার–বিশেষজ্ঞ, অনেকেই উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন তার বোলিং দেখে। দেশের ক্রিকেটে তো তিনি এখনই বড় তারকা। তবে চারপাশের এই আলোয় চোখ ধাঁধিয়ে যায়নি নাহিদের। বরং সামনে তাকিয়ে নিজের পথ আটল থাকতে চান ২২ বছর বয়সী ফাস্ট বোলার।
তিনি বলেন আসলে এই জিনিসগুলো থেকে আমি যত পারি, দূরে থাকার চেষ্টা করি। মানুষ মানুষের প্রশংসা করলে শুনতে ভালো লাগে অবশ্যই। তবে আমি চেষ্টা করি, যত পারি এগুলো থেকে দূরে থাকার। কারণ নিজের ভেতরে যত সন্তুষ্টি কম আসবে, তত আমি সামনে এগোব ও আমার ভেতরে ক্ষুধাটা থাকবে পারফর্ম করার। তাই চেষ্টা করি এগুলো থেকে দূরে থাকার।