অলিম্পিক মানেই রেকর্ড গড়া আর ভাঙার খেলা। কখনো প্রতিপক্ষের রেকর্ড আবার কখনো নিজের রেকর্ড ভেঙে ইতিহাস গড়েন অ্যাথলেটরা। যেমনটি গড়েছেন প্যারিস অলিম্পিকে মার্কিন মহিলা সাঁতারু কেটি লেডেকি। অনুমিতভাবে ১৫০০ মিটার ফ্রি–স্টাইলের মুকুট ধরে রেখেছেন কেটি। সে সাথে এই ইভেন্টে টোকিওতে গড়া অলিম্পিকসের রেকর্ডও ভেঙেছেন প্যারিসে সুইমিংপুলে ঝড় তুলে। শুধু তাই নয় এই স্বর্ণ পদক জিততে গিয়ে রেকর্ডের অনেক পাতায় আঁচড়ও কেটেছেন যুক্তরাষ্ট্রের এই সাঁতারু। তার সামনে আছে আরও পাওয়ার হাতছানি। প্যারিসের লা ডিফঁসা অ্যারেনায় ১৫ মিনিট ৩০ দশমিক ০২ সেকেন্ড সময় নিয়ে অলিম্পিকের রেকর্ড গড়ে ১৫০০ মিটার ফ্রি–স্টাইলের সোনা জিতেছেন লেডেকি। ২৭ বছর বয়সী এই সাঁতারু আগের রেকর্ডটি গড়েছিলেন টোকিও অলিম্পিকে। সেবার তিনি সাঁতার শেষ করেছিলেন ১৫ মিনিট ৩৫ দশমিক ৩৫ সেকেন্ডে। এই ইভেন্টে বিশ্ব রেকর্ডও লেডেকির। ২০১৮ সালে ইন্ডিয়ানাপোলিসে ১৫ মিনিট ২০ দশমিক ৪৮ সেকেন্ড টাইমিং নিয়ে চূড়ায় উঠেছিলেন তিনি।
এই পদক জয়ের ফলে অলিম্পিকের আঙিনায় ব্যক্তিগত ও দলীয় মিলিয়ে আটটি সোনার পদক জিতলেন লেডেকি। আর সে সাথে বসলেন নারী সাঁতারু হিসেবে রেকর্ড আটটি সোনা জেতা স্বদেশি জেনি থম্পসনের পাশে। থম্পসন অবশ্য ১৯৯২ থেকে ২০০০ সালের মধ্যে আটটি পদকের সবগুলো সোনা জিতেছিলেন রিলে ইভেন্ট থেকে। সব মিলিয়ে ১২টি অলিম্পিক পদক হলো লেডেকির। রেকর্ডের পাতায় বসলেন যুক্তরাষ্ট্রের থম্পসন, ডারা টোরেস ও নাতালি কফলিন এবং অস্ট্রেলিয়ার এমা ম্যাককিওনের পাশে। ইতিহাসের একটি পাতায় অবশ্য সবার চাইতে এগিয়ে গেলেন লেডেকি। প্রথম নারী সাঁতারু হিসেবে চারটি অলিম্পিকে পদকের শীর্ষ বেদিতে উঠেছেন তিনি। স্বদেশি দুই পুরুষ সাঁতারু কিংবদন্তি মাইকেল ফেলপস ও রায়ান লোশটের কেবল এই বিরল অভিজ্ঞতা আছে। আরও প্রাপ্তির হাতছানি আছে লেডেকির সামনে। ৮০০ মিটার ফ্রিস্টাইল ইভেন্ট এখনও বাকি। অংশ নিতে পারেন রিলেতেও। মানে আরেকটি সোনা জিতলে অলিম্পিকসের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ৯টি সোনা জয়ী জিমন্যাস্ট লারিসা লাতিনিনার পাশে বসবেন তিনি। দুটি জিতলেতো কথাই নেই। ইতিহাসের চূড়ায় পা পড়বে তার।
এরই মধ্যে অনেক ইতিহাসের অংশ হওয়া লেডেকি অবশ্য বললেন, ইতিহাস গড়া নিয়ে তার মধ্যে ভাবনা খুবই কম। বরং যাদের দেখে বেড়ে উঠেছেন সেই কিংবদন্তিদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতেই বেশি আগ্রহী তিনি। ইতিহাস কিংবা ওই সব বিষয়ে নিয়ে খুব বেশি না ভাবার চেষ্টা করি। কিন্তু আমি ওই কিংবদন্তিদের নামগুলো জানি। যাদের নামের পাশে আমার নাম উঠেছে। আমি প্রথম সাঁতার শুরু করেছিলাম তাদের দেখেই। আর তাদের একজন হতে পারা আমার জন্য সম্মানের। যারা আমাকে অনুপ্রাণিত করেছেন এবং এই পর্যায়ে আসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের যেসব গ্রেট সাঁতারুরা আমাকে সহযোগিতা করেছেন আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ।