নগরীর জামালখানের সিকদার হোটেলের পিছনের একটি নালা থেকে ৭ বছর বয়সী মারজানা হক বর্ষা নামের এক শিশুর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিখোঁজের তিনদিন পর গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৫ টায় পুলিশ ওই শিশুর বস্তাবন্দি গলিত লাশ উদ্ধার করে।
শিশু বর্ষা মাছুয়া ঝর্ণা এলাকার মৃত আব্দুল হকের মেয়ে। আব্দুল হক ২০১৮ সালে মারা যান। মোমিন রোডে ইকো প্যাকেজিং নামে তার একটি প্রেস ছিল। মা ঝর্ণা বেগম চাঁদপুরের শাহরাস্তি এলাকার বাসিন্দা। সৎ বাবা ইউসুফ আলী ও মা ঝর্ণা বেগমের সাথে সিকদার হোটেলের পাশের গলিতে শাওন ভবনের নিচ তলায় বসবাস করতো বর্ষা। পড়ত কুসুম কুমারি স্কুলে প্রথম শ্রেণীতে। গত সোমবার বিকেল ৪ চারটায় মায়ের কাছ থেকে ২০ টাকা চেয়ে নিয়ে বাসা থেকে বের হয় বর্ষা। এরপর গলির মুখে সিকদার হোটেলের পাশের আজাদ স্টোর থেকে চিপস ও বিস্কুট কিনে বাসার উদ্দেশ্যেই গিয়েছিল সে। কিন্তু বাসায় না গিয়ে নিখোঁজ হয়ে পড়ে। এরপর তাকে খুঁজতে বের হয় বাসার লোকজন। আশপাশেসহ নানা জায়গায় খোঁজাখুঁজি করে কোথাও তাকে পাওয়া যায়নি। একপর্যায়ে প্রথমে স্থানীয় কাউন্সিলরকে ও পরে থানায় অবহিত করা হয়। তাকে খুঁজে পেতে নগরজুড়ে মাইকিংও করা হয়।
এ বিষয়ে কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল কবির আজাদীকে বলেন, আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থল গিয়ে নালা থেকে একটি লাশ উদ্ধার করেছি। তিনদিন আগে হারিয়ে যাওয়া শিশু বর্ষার লাশ এটি। উদ্ধারের পর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
রিপোর্টের পর বিস্তারিত বলা যাবে। আমাদের তদন্ত কাজ চলমান রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সোমবারই তাকে হত্যা করা হযেছে। লাশটি প্রায় গলে গেছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, তার সাথে অনৈতিক কিছু হয়েছে। এরপর হত্যা করে বস্তায় ভরে নালায় ফেলে দিয়েছে। এ ঘটনায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান তিনি। এখন পর্যন্ত কাউকে শনাক্ত বা গ্রেপ্তার করা হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে ওসি বলেন, প্রয়োজন মনে করছি এমন কয়েকজনকে আমরা তদন্তের স্বার্থে জিজ্ঞাসাবাদ করছি। কাউকে আটক বা গ্রেপ্তার করিনি এখনো। তবে খুব শীঘ্রই আমরা জড়িতকে বা জড়িতদের গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হব। ঘটনাস্থল থেকে থানা পুলিশের পাশাপাশি পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ, সিআইডি ও পিবিআই দলকেও আলামত সংগ্রহ করতে দেখা গেছে এবং সংশ্লিষ্ট লোকজন থেকে শুরু করে বর্ষার পরিবারের সদস্যদের সাথে তারা কথা বলেছেন। লাশ যে নালা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে সেখানের চার পাশ ও উল্লিখিত গলিতে থাকা সিসি ক্যামেরাগুলোর ফুটেজ সংগ্রহ করেছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
এ বিষয়ে নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) নোবেল চাকমা আজাদীকে বলেন, ঘটনার তদন্ত চলমান রয়েছে। তথ্য সংগ্রহের কাজ চলছে। আশা করছি, খুব শীঘ্রই রহস্য উন্মোচন হবে।