কোটি টাকা খরচ করে রাস্তা উঁচু এবং ড্রেন করা হলেও সুফল কতটুকু মিলবে তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, ড্রেনের উপর থাকা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ না করে রাস্তা উঁচু করায় জলাবদ্ধতায় ভোগান্তি আগের চেয়ে বাড়বে। এই শঙ্কার মধ্যে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করার দাবি জানিয়েছেন নগরীর দক্ষিণ মধ্যম হালিশহর এলাকার বাসিন্দারা।
এলাকাবাসীর অভিযোগের ভিত্তিতে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, নগরীর ৩৮ নম্বর দক্ষিণ মধ্যম হালিশহরের আবদুল জলিল সড়কের উন্নয়ন কাজ করছে সিটি কর্পোরেশন। প্রায় ৬ কোটি টাকার একটি প্রকল্পের আওতায় আরো কয়েকটি সড়কের সাথে এটির উন্নয়ন করা হচ্ছে। রাস্তার পাশে পানি নিষ্কাশনের জন্য নির্মাণ করা হচ্ছে ড্রেন। কিন্তু ড্রেন দখল করে থাকা ভবনসহ অবকাঠামো উচ্ছেদ না করায় ড্রেন দিয়ে পানি নিষ্কাশন হবে না বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন।
গতকাল সকালে গিয়ে দেখা গেছে, লায়লা সিএনজির বিপরীত পাশের বিস্তৃত এলাকার কয়েক হাজার বাসিন্দার চলাচলের মূল রাস্তা হচ্ছে আবদুল জলিল সড়ক। বর্ষার বৃষ্টির পানি ছাড়াও জোয়ারের পানিতেও ডুবে যায় এলাকাটি। কয়েক মিলিমিটারের বৃষ্টিতেও রাস্তার ওপর থৈ থৈ করে পানি। কোথাও কোথাও কোমর পর্যন্ত পানিতে ডুবে যায়। মানুষ ভোগান্তিতে পড়ে। এলাকার বাসাবাড়ির নিচতলার বেশিরভাগ ডুবে যায় পানিতে। অবস্থাপন্নরা রিকশার সিটে পা তুলে বসে কোনোরকমে চলাচল করলেও সাধারণ মানুষের ভোগান্তি চরমে পৌঁছে। এই দুর্গতি থেকে এলাকাবাসীকে রক্ষা করতে সিটি কর্পোরেশন রাস্তাটি উন্নয়নের কাজ করছে। এতে সড়কটিকে প্রায় তিন ফুট উঁচু করা হচ্ছে। রাস্তার পাশে বেশ চওড়া করে নির্মাণ করা হচ্ছে ড্রেন। কিন্তু ড্রেনের উপর বাড়ির বর্ধিতাংশ রয়েছে। রয়েছে দেয়ালও। এতে করে পানি নিষ্কাশন হওয়ার চেয়ে বাধাগ্রস্ত হবে বেশি। রাস্তা উঁচু করার ফলে আগে এদিক–ওদিক যে পানি যেত তাও বাধাগ্রস্ত হবে। অবৈধ স্থাপনাগুলো সরিয়ে ড্রেনে পানি নিষ্কাশনের পথ পুরোপুরি উন্মুক্ত না করলে এই ভোগান্তির অবসান হবে না বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে স্থানীয় একটি ‘শাখা খাল’ পুরোপুরি গায়েব করে দেওয়ারও অভিযোগ করেন।
উক্ত শাখা খাল দিয়ে এলাকার পানি মহেশ খালে গিয়ে পড়ত উল্লেখ করে স্থানীয় বাসিন্দা এমদাদুর রহমান জানান, এই খালটি গুরুত্বপূর্ণ ছিল। অথচ খালটি গায়েব করে দেওয়ার পর থেকেই আমরা প্রতি বর্ষায় ডুবছি। স্থানীয় কিছু ব্যক্তি খাল দখল করে বাড়িঘর নির্মাণ করেছে। এমনকি দোতলা ঘরও বানিয়েছে। তবে মূল ভবন ঠিক রেখে খাল এবং ড্রেনের উপর এসে টিনশেড টাইপের ঘর বানিয়েছে। কারণ তারা নিজেরাই জানে যে, তারা খাল ও ড্রেন দখল করেছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা রাস্তাটির নির্মাণকাজের মান নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। ম্যাগাডম ব্যবহার করার কথা থাকলেও তা না করে রাস্তাটি শুধু বালি দিয়ে উঁচু করা হচ্ছে।
রাস্তার উন্নয়ন কাজ হচ্ছে জানিয়ে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর গোলাম মোহাম্মদ চৌধুরী বলেন, ড্রেনের উপর কোনো অবৈধ স্থাপনা থাকতে দেওয়া হবে না। এগুলো ভেঙে ফেলা হবে।