চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের কতিপয় ইন্টার্ন চিকিৎসক কর্তৃক নার্সদের উপর হামলার ঘটনায় ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। গতকাল বুধবার হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শামীম আহসানের স্বাক্ষরে এ সংক্রান্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
চমেক হাসপাতালের রেডিওলজি এন্ড ইমেজিং বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সুভাষ মজুমদারকে প্রধান (সভাপতি) করে গঠিত কমিটিতে হাসপাতালের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) ডা. রাজিব পালিত, চমেকের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. আরিফুল ইসলাম, হাসপাতালের সেবা তত্ত্বাবধায়ক ইনসাফি হান্না ও চট্টগ্রাম নার্সিং কলেজের নার্সিং ইনস্ট্রাকটর বিশ্বজিৎ বড়ুয়াকে সদস্য রাখা হয়েছে। ঘটনা তদন্ত পূর্বক ৫ কর্মদিবসের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
গতকাল তদন্ত কমিটি গঠনের তথ্য নিশ্চিত করে চমেক হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শামীম আহসান আজাদীকে বলেন, দায়িত্বরত নার্সদের মারধরের ঘটনায় আমরা খুবই বিব্রত। এটি অনাকাঙ্ক্ষিত। ঘটনার পরপরই (মঙ্গলবার) আমরা নার্সদের সাথে বসেছিলাম। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছিলাম। তারা (নার্সরা) আমাদের আশ্বাসে শান্ত হয়ে কাজে ফিরে যায়। তাদের দেয়া আশ্বাস অনুযায়ী, আমরা বুধবার ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। এ কমিটি তদন্ত পূর্বক ঘটনার কারণ অনুসন্ধানের পাশাপাশি দোষীদের শনাক্ত করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করবে। এছাড়া ভবিষ্যতে এ ধরণের ঘটনা রোধ ও ওয়ার্ডের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিতকল্পে করণীয় নির্ধারণ এবং প্রয়োজনীয় সুপারিশ প্রণয়ন করবে এ কমিটি।
উল্লেখ্য, কতিপয় ইন্টার্ন চিকিৎসক ও ছাত্রলীগ কর্মীদের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ এনে মঙ্গলবার প্রায় চার ঘণ্টা ধরে বিক্ষোভ করেছেন চমেক হাসপাতালের নার্সরা। মঙ্গলবার বিকেলে হাসপাতালের ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে (অর্থো সার্জারি) মারধরের এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর থেকে হাসপাতালের গোল চত্বরে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন নার্সরা। বিক্ষোভে যোগ দিতে দায়িত্বরত নার্সরাও ওয়ার্ড থেকে গোল চত্বরে নেমে আসেন। তারা দোষীদের বিচার দাবি করেন।
এ ঘটনায় সন্ধ্যা ৭টার দিকে নার্স এসোসিয়েশনের নের্তৃবৃন্দের সাথে বৈঠকে বসেন চমেক ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বৈঠক চলাকালীনও নার্সরা বিক্ষোভ চালিয়ে যান। তিন ঘণ্টারও বেশি সময় বিক্ষোভের পর রাত দশটার দিকে নার্সরা কাজে ফিরে যান। ঘটনা তদন্ত পূর্বক দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে কর্তৃপক্ষের ‘আশ্বাসের’ প্রেক্ষিতে তারা বিক্ষোভ থেকে সরে আসেন বলে জানান নার্সেস এসোসিয়েশনের নের্তৃবৃন্দ।
বৈঠকে চমেক হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শামীম আহসান, চমেক অধ্যক্ষ প্রফেসর ডা. সাহেনা আক্তার, উপাধ্যক্ষ ডা. হাফিজুল ইসলাম, হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. অংসুই প্রু মারমা, সহকারী পরিচালক ডা. রাজিব পালিত, হাসপাতালের সেবা তত্ত্বাবধায়ক (নার্স ইনচার্জ) ইনসাফি হান্না, নার্সেস এসোসিয়েশনের সভাপতি আশু চৌধুরী, সহ-সভাপতি নাজনীন আখতার, সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।












