নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন যুগোপযোগী করার দাবি জানিয়েছেন তরুণ রাজনীতিবিদ সাঈদ আল নোমান। তিনি বলেন, আইনটি যুগোপযোগী করা খুব প্রয়োজন। কেননা অনেক আগের সেই আইনে অনেক সীমাবদ্ধতা আছে। এখন অপরাধ করবার যে পন্থা সেগুলোও চেঞ্জ হয়ে গেছে। সেগুলোকে সন্নিবেশিত করে আইনকে নতুন করে সাজানো দরকার। মামলা নিষ্পত্তির সময় আরো কমিয়ে আনা দরকার। সরকারকে অনুরোধ করব, বিষয়টি এক্সপার্টদের সাথে আবার আলোচনা করে বিচারকাজ শেষ করার সময় যেন ৪৫ থেকে ৬০ দিনের মধ্যে আনা হয়।
তিনি গতকাল সোমবার বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে মাগুরায় ধর্ষণের শিকার শিশু আছিয়ার ধর্ষকদের দ্রুত বিচারের দাবিতে আয়োজিত মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। ‘সচেতন ছাত্র–যুব–জনতা চট্টগ্রাম মহানগরের উদ্যোগে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধন শেষে সাঈদ আল নোমানের নেতৃত্বে চেরাগী পাহাড়ের দিকে পদযাত্রা করা হয়। পরে সেখানে সংক্ষিপ্ত বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে। মানববন্ধনে মহিলা দল নেত্রীসহ বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের পাশাপাশি সাধারণ লোকজনও অংশ নেন। তারা আছিয়ার ধর্ষকদের দ্রুত শাস্তি দাবি করে বিভিন্ন স্লোগান দেন। এসময় ‘ধর্ষকের ঠাঁই নেই, আমার সোনার বাংলায়’, ‘নির্যাতন ও সহিংসতা বন্ধ করুন’ ও ‘আমার মেয়ে আমার বোন, আছিয়া–আছিয়া’ স্লোগান সম্বলিত প্ল্যাকার্ড ছিল তাদের হাতে।
শিক্ষানুরাগী সাঈদ আল নোমান বলেন, একবিংশ শতাবব্দীতে এসেও কেন ধর্ষণের তদন্ত এবং বিচারকার্যে কালক্ষেপণ করা হবে? যত দ্রুত সম্ভব একটি দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির বিধান রেখে মানুষকে জানিয়ে দেন, এই ধরনের কাজ আর আমরা বাংলাদেশে হতে দেব না।
তিনি বলেন, আমি যদি বাংলাদেশের একজন দেশপ্রেমিক নাগরিক হয়ে থাকি তাহলে আমার প্রধান কর্তব্য আওয়াজ তোলা। যা হচ্ছে মেনে নেয়া যায় না। এটার সমাধান সম্ভব। সমাধানের জন্য আমরা যদি মাঠে না থাকি তাহলে কীসের রাজনীতি, কিসের সমাজসেবা? আমাদের স্ব স্ব অবস্থান থেকে, প্রাতিষ্ঠানিক এবং ব্যক্তির জায়গা থেকে আমরা যেন আওয়াজ তুলে বলি, আছিয়া আপনার বোন বা মেয়ে হতে পারত, তখন আপনি কী করতেন? বলতেন, এই অন্যায়ের বিচার চাই এবং দোষীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। এ শাস্তি দিতে হবে সংক্ষিপ্ত সময়ের মধ্যে, আমরা বছরখানেক ধরে বসে থাকতে পারব না, আমরা এখনি বিচার চাই। দ্রুত বিচার নিশ্চিতে তদন্ত কার্যক্রম দ্রুত করতে যা যা সক্ষমতা অর্জন করা দরকার সেদিকে মনোনিবেশ করতে হবে।
তিনি বলেন, বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপার্সন তারেক রহমান আছিয়ার পরিবারকে আইনি সহায়তা দেয়ার জন্য আইনজীবী পূর্ণাঙ্গ প্যানেল করে দিয়েছেন। সারা দেশের মহিলা দলকে বলে দিয়েছেন, এই বিষয় নিয়ে প্রতিটি জেলা, থানা, ইউনিয়নে যেন প্রতিবাদ সভা হয়।
সাঈদ আল নোমান বলেন, বাংলাদেশে এসিড নিক্ষেপ একটি জঘন্যতম অপরাধ ছিল, কিভাবে এটি দমন করা হলো। ২০০২ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া দুটো কাজ করেছিলেন। তিনি সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি করেছেন এবং দ্রুত আইনি পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। তিনি বলেন, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি দ্রুত সময়ের মধ্যে উন্নতি করতে হবে। দেশব্যাপী ধর্ষণের মাত্রা দিনদিন বেড়েই চলছে। মাত্র ৮ বছরের শিশু আছিয়াকে হায়েনারা ধর্ষণ করেছে নির্মমভাবে। জুলাই পরবর্তী নতুন বাংলাদেশে এটা মেনে নেওয়া যায় না। নারী ও শিশু ধর্ষণ, নির্যাতন ও সহিংসতা বন্ধ হতেই হবে। এসময় উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মহিলা দলের যুগ্ম সম্পাদক ফাতেমা বাদশা, মহানগর মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক জেলী চৌধুরী, সহ–সভাপতি জেসমিনা খানম, খালেদা বোরহান, সায়মা হক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জিন্নাত রাজ্জাক জিনিয়া, যুগ্ম সম্পাদক শামসুন নাহার, রোকসানা বেগম মাধু, জাহানারা বেগম, তাসলিমা আক্তার, ফাতেমা কাজল, পারভীন আক্তার ফারহানা, হাবিবা সুলতানা, পারভীন চৌধুরী, ফাতেমা কাজল ও আয়েশা আক্তার সাঞ্জি।