নারীর ছয় টুকরা লাশ ফার্মেসি মালিক গ্রেপ্তার

| শনিবার , ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ at ৮:১১ পূর্বাহ্ণ

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর পৌর শহরের একটি ওষুধের দোকানে নারীর ছয় টুকরা লাশ উদ্ধারের ঘটনায় ফার্মেসির মালিককে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার বিকালে পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান বলেন, আমি জানতে পেরেছি, শাহনাজ পারভিন জোছনা হত্যা মামলার পলাতক আসামি ফার্মেসি মালিক জিতেশ চন্দ্র গোপকে ঢাকা থেকে সিআইডির একটি দল আটক করেছে। চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলাটি সিআইডিতে স্থানান্তর করা হয়েছে। এ ব্যাপারে তদন্ত করে তারাই আইনি ব্যবস্থা নেবে বলে জানান মিজানুর। খবর বিডিনিউজের। ওষুধ কিনতে বেরিয়ে জগন্নাথপুর উপজেলার রাণীগঞ্জ ইউনিয়নের নারিকেলতলা গ্রামের সৌদি প্রবাসী ছুরুক মিয়ার স্ত্রী শাহনাজ পারভিন জোছনা (৩৫) গত বুধবার নিখোঁজ হন। তিন সন্তান ও ছোট ভাইকে নিয়ে জগন্নাথপুর পৌর শহরের বাড়িতে বাস করতেন তিনি। পরে বৃহস্পতিবার বিকালে ব্যারিস্টার আব্দুল মতিন মার্কেটে ‘অভি ফার্মেসি’ থেকে পারভিনের ছয় টুকরা লাশ উদ্ধার করা হয়। দোকান মালিক কিশোরগঞ্জ জেলার ইটনা উপজেলার সইলা গ্রামের যাদব গোপের ছেলে জিতেশ চন্দ্র গোপ ও তার পরিবারের লোকজন ঘটনার পর থেকেই পালিয়ে ছিলেন।
জগন্নাথপুর থানার ওসি মিজানুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুরে জিতেশ চন্দ্র গোপের ফার্মেসি থেকে লাশ উদ্ধারের পর রাতে ওই নারীর ভাই হেলাল মিয়া বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেছেন। মামলায় জিতেশকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। শুক্রবার ঢাকা থেকে সিআইডি পুলিশ আসামিকে আটক করেছে বলে আমরা জানতে পেরেছি।
নিহতের ভাই হেলাল আহমদ বলেন, নিজেদের ওই বাসায় তার বোন ২০১৩ সাল থেকে বাস করছিলেন। তিনিও ওই বোনের সঙ্গে থাকছিলেন। বোন ওই দোকানটিতে নিয়মিত ওষুধ কিনতেন। বুধবার বিকেলে বোন ওষুধ আনতে গিয়ে আর ফেরেননি। ওই ওষুধের দোকানে খুঁজতে গিয়ে দোকান বন্ধ পাই। বোনের মোবাইল ফোনে পরিবারের লোকজন যোগাযোগ করলে অপরিচিত এক নারী জানান, পারভিন সিলেটের ওসমানীতে আছেন। স্বজনরা সেখানে যোগাযোগ করে তার সন্ধান পাননি। পরে ওই নারীকে আবার বোনের মোবাইল নম্বরে ফোন করা হলে সেই নারী জানান, পারভিন পৌরশহরের আর্ট স্কুল এলাকায় আছেন। একেক সময় একেক কথা বলে বিভ্রান্ত করেন ওই নারী।
পরে পুলিশে যোগাযোগ করা হয় জানিয়ে হেলাল বলেন, পুলিশ ও স্বজনরা রাতভর বিভিন্ন স্থানে যোগাযোগ করেও পারভিনের সন্ধান পায়নি। বৃহস্পতিবার বেলা ১২টার দিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাজেদুল ইসলামকে নিয়ে তালাবদ্ধ সেই ওষুধের দোকানের তালা ভেঙে বোনের মরদেহের ছয়টি টুকরো উদ্ধার করে পুলিশ। বুধবার বোন ব্যাংক থেকে টাকা তুলেছিলেন। এই টাকা তার সঙ্গে ছিল। এই টাকার জন্যই হয়ত দোকানমালিক ও তার লোকজন আমার বোনকে খুন করেছে। আমরা তাদের ফাঁসি চাই। এ ঘটনায় পুলিশ দোকান থেকে একটি রক্তাক্ত ছুরিও উদ্ধার করেছে।
জগন্নাথপুর বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক জাহির উদ্দিন বলেন, আমাদের মনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, শহরের ব্যস্ততম এলাকায় কীভাবে খুন করে এভাবে একজন নীরিহ নারীর লাশ টুকরা টুকরা করা হলো। আমার এ ঘটনায় দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকুকুর বাঁচাতে গিয়ে টেক্সি খাদে
পরবর্তী নিবন্ধসরিষার ফুলে কৃষকের মুখে আনন্দের রেখা