বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় যাদের সঙ্গে আন্দোলন করেছেন তারা নারীদের নিয়ে বিভিন্ন ধরনের ‘বয়ান’ তৈরি ও ধ্বংসের চেষ্টা করছেন অভিযোগ এনে রাজনীতি ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন সংগঠনটির চট্টগ্রামের সাবেক মুখপাত্র ফাতেমা খানম লিজা।
ফেসবুক লাইভে এসে ভবিষ্যতে আর রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত না হওয়ার ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেন, আমাদের লড়াই করার কথা ছিল ফ্যাসিজমের বিরুদ্ধে। এখন লড়াই করতে হচ্ছে নিজেদের বিরুদ্ধে। আমার দ্বারা আর রাজনীতি করা সম্ভব নয়। আমি বোঝাতে পারব না চট্টগ্রামে নারীদের নিয়ে কতটা ব্যক্তিগত আক্রমণ করা হয়, নোংরামি হয়। সেগুলো কারা করে? খবর বিডিনিউজের।
এর ইঙ্গিতও গত শুক্রবার রাত ১০টার কিছু পরের লাইভে এসে দিয়েছেন লিজা, যিনি এর আগে ব্যক্তিগত জীবনাচরণ নিয়ে বহিষ্কারের মুখে পড়েছিলেন। তিনি বলেন, চট্টগ্রামের কিছু সংখ্যক মানুষের কাছে, তাদের চাওয়া পাওয়ার কাছে রাজনীতি হারিয়ে গেছে। আন্দোলনের সম্মুখ সারিতে থাকা অনেকে হারিয়ে গেছেন। এসব কিছুর জন্য কিছু ভাই–ব্রাদার দায়ী। লিজা বলেন, যাদের সঙ্গে জুলাই আন্দোলন করেছি তারাই আজ নারীদের নিয়ে বিভিন্ন ধরনের বয়ান তৈরির চেষ্টা করছেন। নারীদের ধ্বংস করার চেষ্টা করছেন, এগুলো মেনে নেয়া যায় না। আজকে এ পলিটিঙের জায়গায় এসে সবকিছু হারিয়েছি। এরপর থেকে রাজনীতির সাথে আমার আর কোনো সম্পৃক্ততা থাকবে না।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রামের সাবেক মুখপাত্র লিজাকে অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনের অভিযোগে গত ১৬ মে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়। পরে ২৬ মে তার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছিল।
ফেসবুক লাইভের পর লিজা তার অ্যাকাউন্ট থেকে গতকাল শনিবারে দেওয়া এক পোস্টে বলেন, রাজনীতির মাঠে কখনো শূন্যস্থান থাকে না। আজকে আমি ফাতেমা খানম লিজা এই পথ থেকে সামাপ্তি করার পর আমার জায়গায় বেটার কেউ অবশ্যই আসবে। তবে চট্টগ্রামে যে নারী রাজনীতির মাঠে আসবে সে নারীর জন্য ভয় হয় যে, আদৌ ও তার সাথে কি কি হতে পারে আর নিজেদের লোকেরা কি কি করতে পারে!! আমি যেই উদ্দেশ্য নিয়ে এসেছিলাম হয়তো (হয়তো) তার কিছুই পূরণ করতে পারিনি। তবে জুলাইয়ের সাথে বেঈমানিও করিনি। শহীদ এর সাথেও বেঈমানি করিনি। আমি প্রাউডলি বলতে পারি আমি নিজের জায়গায় সব সময় স্বচ্ছ ছিলাম।
তিনি লেখেন, হ্যাঁ হয়তো আমাকে রাজনৈতিক জায়গায় আর কেউ কখনো দেখবে না/পাবে না। তবে যদি আমাকে দেশের কোনো কাজে প্রয়োজন হয় এবং রাজপথের ডাক আসে তখন সেই রক্তিম জুলাইয়ের মতো আমি আবারও ফিরে আসব। আমার দেশ আমাকে সবসময় তার অসময়ে পাশে পাবে সুসময়ে না পেলেও।