নারীই পারে নারীর মান দিতে

জেসমিন সুলতানা চৌধুরী | মঙ্গলবার , ৯ নভেম্বর, ২০২১ at ৬:৩৯ পূর্বাহ্ণ

নারীর অধিকার নিয়ে সারা বিশ্ব এখন সোচ্চার। ৮মার্চ উদযাপিত হয় আন্তর্জাতিক নারী দিবস। নারীর অধিকার আদায়ে অনেক সভা সেমিনারও হয়। ইসলামও নারীকে দিয়েছে সর্বোচ্চ সম্মান ও মর্যাদা। এতোকিছুর পরও সেই আদিমতা সমাজে এখনও বিরাজমান। এখনও নারী ঘরে-বাইরে প্রতি পদে পদে অবহেলিত। নির্যাতিত তো হচ্ছেই। যেসব কন্যা শিশু নিজ পরিবারে অবহেলার শিকার হয়ে বেড়ে ওঠে পরবর্তীতে তাদের মেধা-মনন সীমাবদ্ধ গণ্ডিতে আবদ্ধ থাকে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন খবরের নিউজের কমেন্টসগুলো পড়লে বোঝা যায় নারী জাতিকে কিছু পুরুষ কতটা ছোট চোখে দেখে! ফেইক আইডি থেকে করা মন্তব্যগুলো আরো ভয়াবহ। একটা বাক্যে পাঁচ দশটা বানান ভুল করে হলেও নারীকে দুচারটে গালি দিতেই হবে। পরিবার থেকে যদি সঠিক শিক্ষা পেত তাহলে এতটা অধঃপতন হত না।এখনও সমাজে অল্প কিছু মানুষ ছাড়া বেশিরভাগ মানুষের চিন্তাধারা সেই অন্ধকার যুগের।একটা ছেলে বিদেশে একা পড়তে যাচ্ছে। কারো মুখে কোন কথা নেই। স্বাভাবিক ব্যাপার। কিন্তু একটা মেয়ে যদি একা বিদেশে পড়তে যায় অনেক সমালোচনার মুখে পড়তে হয়। শুধু তাকে না, ঐ মেয়ের অভিভাবককেও অনেক কথা হজম করতে হয়। আবার যেমন-কোন পুরুষের প্রথম পত্নী সুস্থ এবং স্বয়ংসম্পূর্ণ থাকার পরও সে একাধিক বিয়ে করেছে , অথবা বিবাহ বহির্ভূত একাধিক সম্পর্কে জড়িত। সেক্ষেত্রে সে পুরুষের কোন দোষ কারো চোখে পড়ে না। যদি কোন নারী ডিভোর্স দিয়ে চলে এসেছে বা ঐ ডিভোর্সি নারী অথবা কোন বিধবা নারী আবার বিয়ে করেছে সেক্ষেত্রে সে মহিলা ঐ সমস্ত পুরুষদের কাছে খারাপ। আদর্শ নারী হওয়ার জন্য কিংবা থাকার জন্য সারাজীবন নারীকে অসুখী থেকে যেতে হবে। এই যে মনোভাব তা পাল্টানোর নয়।এসব পুরুষদের সাথে কিছু নারীও সুর মিলায়। যেন যত দোষ দায়ী ঐ নন্দঘোষ। গ্রামীণ সমাজে হাজারো নারী আছে যারা অকালে স্বামী হারিয়ে বৈধব্যকে বরণ করে নিয়েছে এবং এখনো নিচ্ছে। শুধুমাত্র পাছে লোকে কিছু বলে এই ভয় থেকে নিজের সমস্ত সুখ, স্বাচ্ছন্দ্য বিসর্জন দিচ্ছে। নারীকে মুঠোয় পুরে রাখার জন্য যখন যা প্রয়োজন তারা তাই বলে। তাদের এ মানসিকতার কারণে সমাজে ব্যভিচার থামছেই না, বরঞ্চ আইয়ামে জাহেলিয়াতের যুগেই যেন ফিরে যাচ্ছি। আমরা নারীরাই এ পুরুষদের গর্ভে ধারণ করি, প্রসবের পর লালন-পালন করি। প্রাথমিক শিক্ষাটা তারা ঘর থেকেই পেয়ে থাকে। তাই মেয়েরা অর্থাৎ মায়েরা যদি সচেতন হই তাদের যথোপযুক্ত শিক্ষা দিতে পারি তবে পুরুষের মনে নারীর প্রতি চিন্তাধারা পাল্টাবে, সম্মানবোধ বাড়বে। এখন স্কুল,কলেজ, ভার্সিটি পর্যায়ে মহিলা শিক্ষক বাড়ছে। তাঁরাও এ গুরুদায়িত্ব পালন করার ব্যাপারে বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপ্রসঙ্গ : ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন
পরবর্তী নিবন্ধঅপরাজনীতি বন্ধ করা হোক