লোহাগাড়ায় নিয়ন্ত্রণহারা বাসের চাপায় মসজিদে যাওয়ার পথে জাকির হোসেন (২৪) নামে এক যুবক প্রাণ হারিয়েছেন। গত মঙ্গলবার সোয়া ১টায় চট্টগ্রাম–কক্সবাজার মহাসড়কে উপজেলার চুনতি ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বনপুকুর কালু সিকদার পাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত জাকির হোসেন ওই এলাকার আবুল ফজল প্রকাশ ভোলা মিয়ার পুত্র ও স্থানীয় রহমানিয়া হেফজখানা এতিমখানা ও একাডেমীর শিক্ষক। ঘটনার প্রতিবাদে প্রায় সাড়ে ৫ ঘণ্টা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন বিক্ষুব্ধ জনতা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঘটনাস্থলে কক্সবাজারমুখী মারচা পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাসের সাথে বিপরীতমুখী পিকআপ ভ্যানের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পথচারী জাকির হোসেনকে চাপা দিয়ে সড়কের পাশে বৈদ্যুতিক খুঁটির সঙ্গে ধাক্কা খায়। ঘটনার সময় জাকির হোসেন বাসের নিচে চাপা পড়ার বিষয়টি কেউ জানতো না। বেলা ২টার দিকে দুর্ঘটনা কবলিত বাসটি উদ্ধারের সময় বাসের নিয়ে জাকিরের মরদেহ দেখতে পান স্থানীয়রা। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর বিক্ষুব্ধ জনতা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন। ফলে মহাসড়কের উভয় পাশে বহু যানবাহন আটকা পড়ে। সৃষ্টি হয় দীর্ঘ যানজট। দুর্ভোগে পড়েন দূরপাল্লার যাত্রীরা।
এদিকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ঘটনাস্থলে যান বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য শাহজাহান চৌধুরী এবং চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আসহাব উদ্দিন চৌধুরী। এ সময় বিক্ষুব্ধ জনতা চট্টগ্রাম–মহাসড়ক প্রশস্তকরণ, এই রুটে মারচা পরিবহনের বাস নিষিদ্ধকরণ, গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণ, দুর্ঘটনা কবলিত বাসের চালককে দ্রুত গ্রেপ্তার পূর্বক আইনের আওতায় আনা ও নিহত জাকির হোসেনের পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দেয়ার দাবি জানান। পরে উপস্থিত নেতৃবৃন্দ বিক্ষুব্ধ জনতার দাবির প্রতি সম্মান জানিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন। এরপর বিক্ষোভকারীরা মহাসড়ক থেকে সরে যান এবং যানবাহন চলাচল শুরু হয়।
দোহাজারী হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহাবুব আলম জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ফোর্স পাঠানো হয়। দুর্ঘটনা কবলিত বাস ও পিকআপ ভ্যান জব্দ করে হাইওয়ে থানা হেফাজতে রয়েছে। পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে নিহতের মরদেহ স্বজনদের হাতে হস্তান্তর করা হয়েছে। ঘটনার পর বাস চালক ও সহকারী পালিয়ে গেছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।