নাফ নদীর মোহনায় ডুবোচর ভোগান্তিতে সেন্টমার্টিনবাসী

কক্সবাজার প্রতিনিধি | রবিবার , ৩০ জুন, ২০২৪ at ৪:২৭ পূর্বাহ্ণ

মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলমান সংঘাতে অন্তত ২০ দিনের বেশি বন্ধ ছিল টেকনাফসেন্টমার্টিন রুটে নৌ চলাচল। তবে প্রশাসনের অনুমতিতে উত্তাল সাগরের বিকল্প পথে ঝুঁকি নিয়ে কিছু সংখ্যক নৌযান চলাচল করলেও যোগাযোগ ব্যবস্থা এখনো স্বাভাবিক হয়ে আসেনি। এতে জরুরি চিকিৎসা, নিত্যপণ্যের যোগান ও প্রয়োজনীয় কাজে যাতায়াতসহ নানা ভোগান্তিতে রয়েছে সেন্টমার্টিনবাসী। অন্যদিকে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলা সংঘাতে ওপার থেকে ভেসে আসা গুলির শব্দে আতঙ্কিত দ্বীপবাসী।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, সেন্টমার্টিনের সঙ্গে যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম নৌপথ নাফ নদীর মোহনার দুই স্থানে জেগে উঠেছে ডুবোচর। যার কারণে সেন্টমার্টিনে যাতায়াতকারী নৌযানগুলোকে নাফ নদীর মিয়ানমার জলসীমার সামান্য একটি অংশ ব্যবহার করতে হয়। টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীরদ্বীপ এলাকায় নাফ নদীর ওই অংশে ড্রেজিং করা হলে সেন্টমার্টিনে যোগাযোগের জন্য মিয়ানমারের জলসীমা ব্যবহার করতে হবে না। এতে সংকটের স্থায়ী সমাধান হবে বলে জানান দ্বীপবাসী ও জনপ্রতিনিধিরা।

জনপ্রতিনিধিদের দেওয়া তথ্যে জানা যায়, নাব্যতা সংকটের কারণে বাংলাদেশি নৌযানগুলোকে নাফ নদীর মিয়ানমারের নাইক্ষ্যংদিয়া অংশ হয়ে যাতায়াত করায় সৃষ্টি হয়েছে ভোগান্তি। তাদের দাবি শাহপরীরদ্বীপ এলাকায় ভরাট হয়ে যাওয়া অংশ খনন করে নাব্যতা সৃষ্টির পাশাপাশি সাগরের গোলারচর পয়েন্টে জেটি ঘাট নির্মাণ করলেই সংকটের সমাধান হবে। তবে জেলা প্রশাসনের সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দ্বীপটির যোগাযোগ সংকটের স্থায়ী সমাধানে নাফ নদীতে খনন কাজের পাশাপাশি নতুন জেটি ঘাট নির্মাণে সরকারের ঊর্ধ্বতন পর্যায়ে আলাপআলোচনা চলছে।

সেন্টমার্টিন দ্বীপের বাসিন্দা মোহাম্মদ জাফর আলম জানান, সীমান্তে উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে দ্বীপের মানুষ এক প্রকার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছেন। এতে চিকিৎসা, নিত্যপণের যোগান ও প্রয়োজনীয় কাজে যাতায়াতসহ নানা ভোগান্তিতে পড়েছে। বর্তমানে বিকল্প পথে দৈনিক কয়েকটি করে ট্রলার যাতায়াত করলেও সাগর উত্তাল থাকায় চলাচলে জীবন ঝুঁকিতে রয়েছে। তাই নাফ নদীতে জেগে উঠা ডুবোচর খননের পাশাপাশি সাগরের গোলারচর পয়েন্টে নতুন একটি জেটি ঘাট নির্মাণের দাবি দ্বীপবাসীর।

টেকনাফ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জাফর আলম জানান, ডুবোচরের কারণে নাফ নদীর জলসীমায় শাহপরীরদ্বীপের ওই অংশ দিয়ে সেন্টমার্টিনে নৌযানগুলোর যাতায়াতের এই সমস্যা দীর্ঘদিনের। জেগে উঠা ডুবোচরের ওই অংশটি দ্রুত খনন করার পাশাপাশি নতুন একটি জেটি ঘাট নির্মাণ করা হলে সংকটের স্থায়ী সমাধান করা সম্ভব। এতে সেন্টমার্টিনের সাথে যোগাযোগ সহজ হওয়ার পাশাপাশি সময়ও কম ব্যয় হবে।

কঙবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. ইয়ামিন হোসেন জানান, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সংঘাতের জেরে সেন্টমার্টিনে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে প্রশাসন দ্বীপটিতে জাহাজে করে খাদ্যসহ নিত্যপণ্য পাঠানোর পাশাপাশি সাগরের বিকল্প পথে মানুষের যাতায়তের ব্যবস্থা নিয়েছে। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে খাদ্যপণ্যের আরও একটি চালান পাঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে। এটি আসলে সমস্যার স্থায়ী সমাধান নয়। নাফ নদীর ভরাট হওয়া অংশটি খননের পাশাপাশি সাগরের গোলারচর পয়েন্টে নতুন একটি জেটি ঘাট নির্মাণ নিয়ে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা চলমান।

সীমান্তের নিরাপত্তার প্রসঙ্গে টেকনাফ ২ বিজিবির ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দীন আহমেদ বলেন, অনুপ্রবেশ ঠেকাতে নাফ নদী ও সীমান্তে কঠোর অবস্থানে রয়েছে বিজিবি। রাখাইন পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপটিয়ায় ইয়াবা কেনাবেচার সময় কিশোর গ্যাং লিডার গ্রেপ্তার
পরবর্তী নিবন্ধসোমবার থেকে সর্বাত্মক কর্মবিরতির ঘোষণা চুয়েট শিক্ষক সমিতির