ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জ্বরাক্রান্ত দুই শিশু নাপা সিরাপ পানের পর মারা যাওয়ায় বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের এই প্যারাসিটামল সিরাপের তিন ব্যাচের নমুনা নিয়ে পরীক্ষা করে ক্ষতিকর কিছু না পাওয়ার কথা জানিয়েছে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর। তবে যে বোতলের সিরাপ ওই শিশু দুটিকে পান করানো হয়েছিল, সেই বোতলের নমুনা ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর পরীক্ষা করেনি। ফলে শিশু দুটির মৃত্যুর কারণও জানা যায়নি। খবর বিডিনিউজের।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জের দুর্গাপুর গ্রামের এক পরিবারের ৭ ও ৫ বছর বয়সী দুই ছেলের জ্বর হওয়ায় বৃহস্পতিবার বিকালে স্থানীয় দোকান থেকে নাপা সিরাপ কিনে তাদের সেবন করায় পরিবার। এরপর তাদের বমি শুরু হয়। ব্রাহ্মণবাড়িয়া হাসপাতালে চিকিৎসক দেখিয়ে বাড়ি আনার পথে রাতে দুজনই মারা যায়।
ঘটনাটি জানার পর পরদিন সারা দেশের পাইকারি ও খুচরা দোকান পরিদর্শন করে নাপা সিরাপের একটি ব্যাচের ওষুধ পরীক্ষা করার নির্দেশ দেয় ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর। তিন দিন পর গতকাল বিকালে ঢাকায় সংবাদ সম্মেলনে আসেন ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ ইউসুফ। তিনি বলেন, আশুগঞ্জের যে দোকান থেকে কেনা ওষুধ সেবনের পর শিশু দুটি মারা গেছে, সেই দোকান থেকে আটটি বোতল জব্দ করেন তারা। এছাড়া ডিপো থেকে আরও দুটি ব্যাচের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। রোববার এসব নমুনা পরীক্ষা শুরু হয়, এর ফল পাওয়া যায় সোমবার দুপুরের পর। আমরা এ পর্যন্ত তিনটা নমুনা পরীক্ষা করেছি। ড্রাগ টেস্টিং প্রপাইলিন গ্লাইকল আছে আর ক্ষতিকারক উপাদান ডাইইথিলিন গ্লাইকল পাওয়া যায়নি। মাঠ পর্যায় থেকে আরও সেসব নমুনা আসছে, সেগুলোও পরীক্ষা করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, সেগুলোর ফলাফল পরে জানাব। কিন্তু এখন পর্যন্ত আমরা যে পরীক্ষা করেছি, পরীক্ষায় মান সঠিক পেয়েছি।
যে বোতলের সিরাপ শিশু দুটিকে পান করানো হয়েছিল, তা পরীক্ষা না করার বিষয়ে জানতে চাইলে মেজর জেনারেল ইউসুফ বলেন, পুলিশ (সিআইডি) মামলার নমুনা হিসেবে সেটা নিয়ে গেছে। আমাদের দেয়নি। আমাদের দিলে আমরা তা পরীক্ষা করতে পারতাম।
শিশু দুটির মৃত্যুর কারণ অনুদ্ঘাটিত থাকা নিয়ে প্রশ্নে তিনি বলেন, সিআইডির পরীক্ষার পর প্রতিবেদন পেলে জানা যাবে, তারা নাপা সিরাপ খেয়েই মারা গেছে কিনা। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত হচ্ছে। এছাড়া পোস্ট মর্টেম রিপোর্টে জানা যাবে শিশু দুটি কেন মারা গেল।