চন্দনাইশের হাশিমপুর ইউনিয়নের ছৈয়দাবাদ গ্রামে স্বামীর হাতে নির্মমভাবে খুন হওয়া শফিকা খানম বিউটি চৌধুরীর দুই সন্তানের মধ্যে ছোট সন্তানের বয়স তিনমাস পূর্ণ হয়নি এখনো। আনুষ্ঠানিকভাবে রাখা হয়নি তার নামও। তবে ছোট ছেলেকে আদর করে কাফি বলে ডাকতেন মা বিউটি। বড় ছেলে ফারদিন চৌধুরী (১৪) গাছবাড়িয়া নিত্যানন্দ গৌরচন্দ্র মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণির ছাত্র। এখন মা হারা দুই ছেলের ঠাঁই হয়েছে নানা বাড়িতে। শিশু কাফিকে লালন পালন করছেন নানি ও খালা। বড় ছেলে ফারদিনের দেখা–শোনাও করতে হবে তাদেরই।
নিহত বিউটি চৌধুরীর ছোট ভাই মামলার বাদী মিনহাজ আলম জানান, তার ভগ্নিপতি জমির উদ্দীন চৌধুরীর কখনোই মানসিক সমস্যা ছিল না। তিনি খুবই খারাপ প্রকৃতির মানুষ। কাজ–কর্ম করতেন না। বিয়ের পর থেকেই টাকার জন্য তার বোনকে নানাভাবে শারীরিক নির্যাতন করতেন। অভাব–অনটন থাকায় জমিরকে প্রায় সময় টাকা দিয়ে সহযোগিতা করতেন তারা। সংসার টিকিয়ে রাখার জন্য বোন বিউটি স্বামীর বিরুদ্ধে কখনোই আমাদের কোনো ব্যবস্থা নিতে দেয়নি। শত নির্যাতন, মারধর সহ্য করেও শুধু সংসার টিকিয়ে রাখার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করেছে। কিন্তু তার আর সংসার করা হলো না। ঘাতক জমির তাকে নির্মমভাবে হত্যাই করলো।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, নিহত শফিকা খানম বিউটি চৌধুরীর লাশ ময়নাতদন্ত শেষে গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় চন্দনাইশের বৈলতলীস্থ বাপের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে নামাজে জানাজা শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
চন্দনাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইমরান আল হোসাইন জানিয়েছেন, স্ত্রীকে জবাই করে হত্যাকারী জমির উদ্দীন চৌধুরী গত মঙ্গলবার চট্টগ্রামের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদুল হকের আদালতে হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দিয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। পরে তাকে জেল হাজতে পাঠানো হয়।
উল্লেখ্য, গত সোমবার বিকেলে চন্দনাইশের হাশিমপুর ইউনিয়নের ছৈয়দাবাদ ১ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত নাছির উদ্দীন চৌধুরীর ছেলে জমির উদ্দীন চৌধুরী তার স্ত্রী শফিকা কানম প্রকাশ বিউটি চৌধুরীকে (৩২) ঘরের ভিতর জবাই করে হত্যা করে। এসময় জমিরের মা শামসুন্নাহার (৯০) বিউটিকে বাঁচাতে ঘরে প্রবেশ করে। পরে ভাইসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা এগিয়ে আসতে চাইলে ঘাতক জমির ভিতর থেকে ঘরের দরজা বন্ধ করে মাকেও জিম্মি করে। এসময় সে তার বৃদ্ধ মাকেও কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা চালায়।