নানা কৌশলে সঞ্চয়পত্রের ১৮ লাখ ২ হাজার ২৭০ টাকা আত্মসাতের একটি মামলায় এবি ব্যাংক আগ্রাবাদ শাখার সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার মো. নাজমুল হুদার বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। দীর্ঘ তদন্ত শেষে গত ১০ এপ্রিল চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতে দুদক প্রধান কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. রফিকুজ্জামান এ চার্জশিট দাখিল করেন। দুদক পিপি কাজী ছানোয়ার আহমেদ লাভলু আজাদীকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আগামী মাসে এ চার্জশিট গ্রহণ বিষয়ে শুনানি হবে।
আদালতে দাখিল করা চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়, ব্যাংক কর্মকর্তা নাজমুল হুদা ২০১৭ সালের ১৭ ডিসেম্বর থেকে এবি ব্যাংক আগ্রাবাদ শাখার রেমিটেন্স বিভাগে (সঞ্চয়পত্র) কর্মরত ছিলেন। এ সময় তিনি কূপন প্রদান হিসাবের বিপরীতে গ্রাহকদের বিপুল পরিমাণ অর্থ প্রদান করেছিলেন, যা একাউন্ট রিসিভেবলস সঞ্চয়পত্রের জিএল হেডে নিয়মিত পোস্ট করা হতো। তবে দীর্ঘদিন ধরে সঠিকভাবে এবং যথাসময়ে গ্রাহকদের প্রদানকৃত অর্থ বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে দাবি করেননি। বরং বিষয়টি গোপন করার জন্য তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে সঞ্চয়পত্রের দাবি বিবরণী বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রেরণ করেননি। এর দ্বারা তিনি ভুয়া ভাউচারের মাধ্যমে গ্রাহকের ১৮ লাখ ২ হাজার ২৭০ টাকা আত্মসাৎ করেন।
উক্ত নকল ভাউচারগুলোতে তিনি একই কূপন নম্বর পুনরায় ব্যবহার করেছিলেন, যা আগেও বিভিন্ন গ্রাহককে প্রদান করেছিলেন। নকল এসব ভাউচারের পিছনে প্রকৃত গ্রাহকদের স্বাক্ষর জাল করতেন এবং সেগুলো নিজেই যাচাই করতেন।
চার্জশিটে আরো বলা হয়, সঞ্চয়পত্র জিএল হেডের সাথে সমন্বয়কৃত প্রকৃত বকেয়ার যে পার্থক্য সেটি আড়াল করার জন্য মো. নাজমুল হুদা নিয়মিত বকেয়া সঞ্চয়পত্রের মালিক গ্রুপ শিট প্রস্তুত করতেন না। তিনি সঞ্চয়পত্রের এনক্যাশ কূপনের ফটোকপি সংরক্ষণ করেননি এবং সঞ্চয়পত্র রেজিস্টার সঠিকভাবে রক্ষণ করেননি। এ কাজে মো. নাজমুল একাই জড়িত বলে চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়। তদন্তে সঞ্চয়পত্রের ১৮ লাখ ২ হাজার ২৭০ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হয়েছে। ফলে তিনি দণ্ডবিধির ৪০৯ ধারা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারা অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।
আদালতসূত্র জানায়, ২০২১ সালের ২১ নভেম্বর মো. নাজমুল হুদার বিরুদ্ধে দুদক চট্টগ্রাম কার্যালয়-১ মামলাটি দায়ের করে।