ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগের খেলায় ঢাকা লেপার্ডসের ১ বলে প্রয়োজন ছিল ২ রানের। ডেলিভারি না করে নন স্ট্রাইকে রান আউটের চেষ্টা করলেন চিরাগ জানি। পপিং ক্রিজে থাকায় বেঁচে গেলেন উমর আমিন। পরে স্লোয়ার ডেলিভারি শর্ট মিড উইকেটের দিকে খেলে রানের জন্য ছুটলেন সোহরাওয়ার্দি শুভ। তার আগেই বল ধরে দৌড়ে স্টাম্প ভেঙে দিলেন বদলি ফিল্ডার আশিক উল আলম। লেজেন্ডস অব রূপগঞ্জ পেল রোমাঞ্চকর এক জয়। মিরপুর শের–ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে নাটকীয়তায় ভরা ম্যাচে লেপার্ডসকে ১ রানে হারিয়েছে রূপগঞ্জ। ২৬৮ রান তাড়ায় ৬ উইকেট হারিয়ে ২৬৭ রানে থেমেছে নবাগত লেপার্ডস।
দশ ম্যাচে রূপগঞ্জের এটি অষ্টম জয়। ১৬ পয়েন্ট নিয়ে তিন নম্বর স্থান ধরে রেখেছে তারা। সমান ম্যাচে স্রেফ এক জয়ে টেবিলের তলানিতে লেপার্ডস। অলরাউন্ড নৈপুণ্যে রূপগঞ্জের নাটকীয় জয়ের নায়ক দুই আসর ধরেই দারুণ খেলতে থাকা চিরাগ জানি। শেষ ওভারে অসাধারণ বোলিংসহ ২ উইকেটের পাশাপাশি ব্যাট হাতে ৫৯ রানের ইনিংস খেলেন ভারতীয় পেস বোলিং অলরাউন্ডার। ম্যাচ সেরার পুরস্কার তার হাতেই ওঠে। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে অল্পেই ফেরেন মুনিম শাহরিয়ার। দ্বিতীয় উইকেটে হাল ধরেন পারভেজ হোসেন ইমন ও সাব্বির রহমান। দুজনই খেলেন আসরে নিজেদের তৃতীয় পঞ্চাশ ছোঁয়া ইনিংস। দলীয় একশ পূরণ হওয়ার আগে ড্রেসিং রুমের পথ ধরেন পারভেজ। ৩টি করে চার–ছয়ে ৭০ বলে ৫২। সাব্বিরও পঞ্চাশের পর বেশি দূর যেতে পারেননি। ৫ চার ও ১ ছয়ে করেন ৬৬ বলে ৫৪ রান। এরপর ফারদিন হাসান, ইরফান শুক্কুর, মাশরাফি বিন মুর্তজা, জাওয়াদ রোয়েনরা অল্পেই ফিরে গেলে দুইশর আগে গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় পড়ে যায় রূপগঞ্জ। শেষ দিকের ব্যাটসম্যানদের নিয়ে দলকে এগিয়ে নেন চিরাগ জানি। আসর জুড়ে দারুণ খেলতে থাকা ভারতীয় অলরাউন্ডার তুলে নেন নিজের পঞ্চম ফিফটি। ৭ চারে খেলেন ৫০ বলে ৫৯ রানের ইনিংস। সোহাগ গাজী ৩ ছয়ে করেন ২৩ বলে ২৬ রান। উমর আমিনের শেষ ওভারে তিন ছক্কা ও এক চারে রূপগঞ্জকে আড়াইশ পার করান মুক্তার আলি। স্রেফ ১০ বলে করেন ২৫ রান। লেপার্ডসের পক্ষে ১০ ওভারে ৩৪ রানে ৩ উইকেট নেন মইন খান। আরিফুল জনি ও উমরের শিকার ২টি করে উইকেট।
রান তাড়ায় পাওয়ার প্লেতে তিন উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে যায় লেপার্ডস। পিনাক ঘোষ (১), জসিম উদ্দিন (৫) ও জাকিরুল ইসলাম (১৮) ফেরেন অল্পেই। চাপ সামলে চতুর্থ উইকেটে ১৬৭ রানের জুটি গড়েন উমর আমিন ও সাব্বির হোসেন। দুজনই খেলেন পঞ্চাশ ছোঁয়া ইনিংস। পাকিস্তানি উমরের ব্যাট থেকে আসে সেঞ্চুরি। ৭৪ বলে পঞ্চাশ করার পর তিন অঙ্কে যেতে স্রেফ ৩০ বল নেন উমর। সাব্বির ৫০ করেন ৭৭ বল খেলে। ৪০ ওভার শেষ হওয়ার ক্র্যাম্প করায় আহত অবসর হয়ে মাঠ ছেড়ে যান উমর।
ফেরার আগে ৮ চার ও ২ ছয়ে করেন ১২৫ বলে ১১৯ রান। লেপার্ডসের জয়ের জন্য তখন প্রয়োজন ছিল ৬০ বলে ৭০ রান। এরপর সাব্বিরও বেশি দূর যেতে পারেননি। একটি করে চার–ছয়ে ৯১ বলে ৬৪ রান করে আউট হন তিনি। তবে সোহরাওয়ার্দি শুভ ও মইন আলির ব্যাটে জয়ের কক্ষেই ছিল লেপার্ডস। দুই ওভার বাকি থাকতে রান আউট হন ১৯ রান করা মইন। আবার ব্যাটিংয়ে নামেন উমর। তবে এবার আর বেশি কিছু করতে পারেননি তিনি। শেষ ওভারে জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ৭ রান। প্রথম পাঁচ বলে স্রেফ ৫ রান দেন চিরাগ। পরে শেষ বলে সোহরাওয়ার্দি রান আউট হলে রূপগঞ্জ পায় অবিস্মরণীয় এক জয়। ম্যান অব দ্য ম্যাচ হন চিরাগ জানি