নাওয়াজের রেকর্ডগড়া সেঞ্চুরিতে দুর্দান্ত জয় পাকিস্তানের

স্পোর্টস ডেস্ক | শনিবার , ২২ মার্চ, ২০২৫ at ৯:৪০ পূর্বাহ্ণ

রিজওয়ানবাবরদের অনুপস্থিতিতে দলে জায়গা পেয়েছিলেন হাসান নেওয়াজ। কিন্তু আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথম দুই ম্যাচে রানের খাতা খুলতে ব্যর্থ হন তিনি। তবে এবার আগ্রাসী রূপে নিজেকে মেলে ধরলেন। নিউজিল্যান্ডের বোলারদের কচুকাটা করে উপহার দিলেন রেকর্ড গড়া সেঞ্চুরি। তার অসাধারণ কীর্তির দিনে দুইশ ছাড়ানো লক্ষ্য তাড়া করে দাপুটে জয় তুলে নিল পাকিস্তান। অকল্যান্ডে গতকাল তৃতীয় টিটোয়েন্টিতে পাকিস্তানের জয় ৯ উইকেটে। নাওয়াজের তাণ্ডবে প্রতিপক্ষের ২০৪ রান ২৪ বল বাকি থাকতে পেরিয়ে যায় সালমান আলি আগার দল। আন্তর্জাতিক টিটোয়েন্টিতে দুইশ বা এর চেয়ে বেশি রান এত দ্রুত তাড়া করে জয়ের রেকর্ড নেই কোনো দলের। ২০০৭ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ২০৬ রানের লক্ষ্যে ১৪ বল হাতে রেখে পৌঁছেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। পাঁচ ম্যাচ সিরিজের প্রথম দুটি হেরে দেয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছিল পাকিস্তানের। লড়াইয়ে টিকে থাকতে এদিন জয়ের বিকল্প ছিল না তাদের। চলতি নিউজিল্যান্ড সফরের প্রথম টিটোয়েন্টি দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা রাখেন ২২ বছর বয়সী নাওয়াজ। ভীষণ বাজে শুরুর পর দুর্দান্তভাবে ঘুরে দাঁড়ালেন তিনি বিশাল রান তাড়ার ম্যাচে। ৭ ছক্কা ও ১০ চারে ৪৫ বলে ১০৫ রান করে দলের জয় সঙ্গে নিয়ে মাঠ ছাড়েন নাওয়াজ। চোখধাঁধানো ইনিংসটির পথে ৪৪ বলে সেঞ্চুরি করেন তিনি, পাকিস্তানের হয়ে আন্তর্জাতিক টিটোয়েন্টিতে যা দ্রুততম। নাওয়াজ ছাড়িয়ে গেছেন বাবর আজমের রেকর্ড। ২০২১ সালে সেঞ্চুরিয়নে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৪৯ বলে শতক করেছিলেন পাকিস্তানের তারকা ব্যাটসম্যান। পাকিস্তানের জয়ে অবদান কম নয় মোহাম্মদ হারিস ও সালমানেরও। ৩ ছক্কা ও ৪টি চারে ২০ বলে ৪১ রান করে দলকে দারুণ শুরু এনে দেন হারিস। অধিনায়ক সালমান অপরাজিত থাকেন ২ ছক্কা ও ৬ চারে ৩১ বলে ৫১ রান করে। অবশ্য ম্যাচের প্রথম অংশে আলো ছড়ান মার্ক চ্যাপম্যান। ৪ ছক্কা ও ১১ চারে ৪৪ বলে ৯৪ রান করেন টপ অর্ডার এই ব্যাটসম্যান। তিনি ছাড়া স্বাগতিকদের আর কেউ ছুঁতে পারেননি পঞ্চাশ।

পাহাড়সম লক্ষ্য তাড়ায় পাকিস্তানকে ভালো শুরু এনে দেন হারিস। প্রথম ওভারেই কাইল জেমিসনকে দুটি ছক্কা হাঁকান তিনি। পরের ওভারে জ্যাকব ডাফিকে চার মারেন দুটি। পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে হারিসের বিদায়ে ভাঙে ৭৪ রানের উদ্বোধনী জুটি। প্রথম ৭ বলে ৭ রান করা নাওয়াজ একটি করে চার ও ছক্কা মারেন জেমিসনকে। পরে ছক্কায় ওড়ান ব্রেসওয়েলকে। জিমি নিশামকে ছক্কা মেরে ২৬ বলে পঞ্চাশে পা রাখেন তিনি। বেন সিয়ার্সকে টানা চারছক্কাচার মারেন নাওয়াজ। আরেক প্রান্তে সালমানও তোলেন ঝড়; জ্যাকব ডাফির ওভারে দুটি ছক্কা ও একটি চার হাঁকানোর পর ইশ সোধিকে টানা মারেন তিনটি চার। সিয়ার্সকে টানা দুই ছক্কায় নব্বইয়ের ঘরে পৌঁছে যান নাওয়াজ। পরের ওভারে ৯৭ থেকে জেমিসকে পরপর দুটি চার মেরে সেঞ্চুরিতে পা রাখার পাশাপাশি দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন তিনি। এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে নিউজিল্যান্ড প্রথম ওভারেই হারায় ফিন অ্যালেনকে। ঝড়ের আভাস দিয়ে ৯ বলে ১৯ রান করে ফিরে যান টম সাইফার্ট। এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে স্বাগতিকরা। সতীর্থদের আসাযাওয়ার মাঝে এক প্রান্ত আগলে রেখে দলের রান বাড়ান চ্যাপম্যান। শাহিন শাহ আফ্রিদিকে দুই চারে ডানা মেলে দেন তিনি। তাণ্ডব চালিয়ে ২৯ বলে করেন ফিফটি। চমৎকার ব্যাটিংয়ে চ্যাপম্যানের সেঞ্চুরি মনে হচ্ছিল সময়ের ব্যাপার। কিন্তু ৬ রানের আক্ষেপ নিয়ে আফ্রিদির বলে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নিতে হয় তাকে। দুই দলের চতুর্থ টিটোয়েন্টি আগামীকাল রোববার।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসবচেয়ে বেশি মিনিট দেখার রেকর্ড গড়েছে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি
পরবর্তী নিবন্ধমেসি-মার্তিনেস না থাকলেও দুশ্চিন্তা দেখছেন না স্কালোনি